৮:৪১ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • জাতিসংঘে নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশে EcoAMR সার্ভিলেন্স সম্পন্ন
ads
প্রকাশ : মার্চ ১১, ২০২৪ ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন
জাতিসংঘে নীতি প্রণয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশে EcoAMR সার্ভিলেন্স সম্পন্ন
প্রাণিসম্পদ

ড. মো. আব্দুল ওয়ারেছ: বিশ্ব প্রাণিস্বাস্থ্য সংস্থা (WOAH) বিশ্বব্যাপী এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্টের (AMR) অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে একটি সার্ভিলেন্স পরিচালনা করছে। এরই অংশ হিসেবে কম্বোডিয়া ও দক্ষিন কোরিয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশে ০৫ মার্চ থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত চলে এই কার্যক্রম। জাতিসঙ্ঘের আসন্ন সাধারণ অধিবেশনে নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে আলোচনা ও বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে সম্পন্ন হয় এই সার্ভিলেন্সটি। বাংলাদেশ সরকারের প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এই কার্যক্রমটিতে সার্বিক সহযোগিতা করেন এবং মহাপরিচালকের পক্ষে প্রধান সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেন ড. মোঃ সোহেল রানা।

কেইস স্টাডি পর্যায়ের এই সার্ভিলেন্সের শিরোনাম ছিল Economic Impact of Antimicrobial Resistance  in Humans and Food-producing animals to Inform Response and Policymaking using a One Health Approach (EcoAMR). গত ০৫ মার্চ ২০২৪ তারিখে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে এই কার্যক্রমের সূচনা হয়। প্রশিক্ষণটি সম্পন্ন হয় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জ ক্যাম্পাস অডিটরিয়ামে। প্রশিক্ষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন WOAH-এর এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্টেন্ট ও ভেটেরিনারি প্রোডাক্টস বিভাগের ডেপুটি হেড ড. হলি আকওয়ার এবং WOAH-এর গবেষণা সহযোগী মিজ সোহওয়ান কুইন। প্রথমেই তাঁরা উল্লেখ করেন, সাম্প্রতিক সময়ে অনুজীব যেমন ব্যাক্টেরিয়া ও ভাইরাস নিজেদের গঠনকাঠামোগত পরিবর্তনসহ নানা উপায়ে বেশ শক্তিশালী হয়েছে এবং এন্টিবায়োটিকসহ অন্যান্য ঔষধের বিরুদ্ধে রেজিস্ট্যান্স বা প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলেছে যাকে এন্টিমাইক্রোবিয়ালের রেজিস্টেন্ট (AMR) নামে পরিচিত। ফলশ্রুতিতে, প্রাণিকুল অধিক সময় রোগাক্রান্ত থাকে, চিকিৎসা খরচ বেড়ে যায়, উৎপাদন কমে যায় এমনকি এতে মৃত্যু হারও বেশী। প্রাণিসম্পদে এর অর্থনৈতিক গুরুত্ব মারাত্মক এবং বহুমুখী। তাই, AMR-এর অর্থনৈতিক প্রভাব পর্যালোচনায় এই কেস স্টাডিটি সম্পন্ন হয়। শিক্ষার্থীদের ডাটা সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন কৌশল ও প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেন। প্রথমেই খামারীদের সাথে সম্পর্ক তৈরী, তথ্যের নিরাপদ ব্যবহার নিয়ে নিশ্চয়তা প্রদান এবং সৌজন্যতার সাথে কারিগরি দিকের প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহের দিকে গুরুত্বারোপ করেন। একইসাথে, তিনি জানান, সংগৃহীত তথ্য এই বছরের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে উপস্থাপন করা হবে। এই উপাত্তগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত ফলাফল বিশ্বব্যাপী AMR-এর ক্ষতিকর প্রভাব নিরসনে প্রয়োজনীয় নীতি প্রণয়নে সহায়তা করবে। এসময় প্রশিক্ষণস্থলে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।

সফল প্রশিক্ষণের পরদিন অর্থাৎ ৬ মার্চ থেকে মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ শুরু হয়। নিখুঁত ও কাংখিত ডাটা সংগ্রহের জন্য বাংলাদেশের দুটি বিভাগ ও দুটি জেলা বাছাই করা হয়। বিদ্যমান প্রাণির সংখ্যা, প্রকৃতি, মান ও প্রভাবের কথা বিবেচনা করে ডেইরী শিল্পের জন্য বিখ্যাত জেলা সিরাজগঞ্জ এবং পোল্ট্রি শিল্পে উন্নত জেলা টাঙ্গাইলকে বিবেচনা করা হয়। তথ্য সংগ্রহের কাজ করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন ও এনিমেল সায়েন্স অনুষদের শিক্ষার্থীবৃন্দ। দুজন শিক্ষার্থীর একেকটি টিম একটি করে উপজেলায় এই সার্ভেটি সম্পন্ন করে এবং এতে সহায়তা করেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, উপসহকারি প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা, ভিএফএ, এফএ (এ/আই) এবং এসএএলও। শিক্ষার্থীদের গ্রুপগুলো প্রথমেই বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বড় খামারগুলো চিহ্নিত করেন এবং প্রত্যেকটি খামার সশরীরে পরিদর্শন করেন। তিন ধাপের এই কেস স্টাডিতে প্রথমেই খামারের তথ্যাদি, দিত্বীয় ধাপে, খামারে ব্যবহৃত ঔষধ ও ভ্যাকসিন, সেগুলোর উৎস ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াসহ সাধারণ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাওয়া হয়। সবশেষে, প্রাণির রোগাক্রান্ত হওয়া, চিকিৎসা সেবা, ভেটেরিনারিয়ানদের প্রাপ্যতা, সেবামূল্য, সেবার মান, ব্যবহৃত ঔষধের ধরণ, কার্যকারিতা, অব্যবহৃত ঔষধের পরিণতি, প্রাণি মৃত্যুর হার, অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমান, তার প্রভাব, ক্ষতি কাটাতে গৃহিত পদক্ষেপ, দুরারোগ্য প্রাণির ব্যবহারসহ মোট ৭১টি বিষয়ে প্রশ্নের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। খামারে বসেই তারা তথ্যগুলো KoboCollect নামের সার্ভে এপসে জমাদান করেন যা WOAH-এর কাছে সরাসরি পৌঁছে যায়। ২৫টি টিম মোট ১০৫০টি খামারের তথ্য সংগ্রহ করেন। প্রোগ্রামটিতে স্থানীয় সম্বনয়কের ভূমিকা পালন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. কে. এম. মোজাফ্‌ফর হোসাইন এবং সিরাজগঞ্জ সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ যা মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়াধীন-এর শিক্ষক ও প্রশাসক ড. মো. আব্দুল ওয়ারেছ।

সার্ভেটিতে বাংলাদেশের AMR-এর অর্থনৈতিক প্রভাবের সার্বিক চিত্র ফুটে ওঠে। এক কথায়, এটি এখন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। তাই, সময় নষ্ট না করে এখনই এটি মোকাবিলার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। কার্যকরি নীতি প্রনয়ন, বাস্তবায়ন, সচেতনতা এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতা এখন সময়ের দাবি। শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি অনন্য অভিজ্ঞতা ছিল। এ সময় তারা গরু, ছাগল, ভেড়া, গাড়ল, দুম্বা, মুরগী ও উটপাখির খামার পরিদর্শন ও যাবতীয় ব্যবস্থাপনা পরিদর্শন করেন। যা তাদের ভবিষ্যতে এন্টিবায়োটিকের চৌকষ ব্যবহারে সচেতন করবে এবং এ ধরনের গবেষণা কার্যক্রমে উব্ধুদ্ধ করবে। WOAH-এর প্রতিনিধিগণ কার্যক্রমটির সফল সমাপ্তিতে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং সার্বিক সহযোগিতার জন্য সমন্বয়কগণ, শিক্ষার্থীবৃন্দসহ সকলের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop