৩:৫৯ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • পানির নিচে আমন চাষিদের স্বপ্ন
ads
প্রকাশ : ডিসেম্বর ৮, ২০২১ ২:৫৬ অপরাহ্ন
পানির নিচে আমন চাষিদের স্বপ্ন
কৃষি বিভাগ

লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার উত্তর চরলরেন্স গ্রামের কৃষক আব্দুল মতিন হাওলাদার তিন একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছেন। চাষাবাদের শুরু থেকেই আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছে।

সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ধান গোলায় তুলতে পারবেন- এমন স্বপ্ন দেখছেন তিনি। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টি তার সর্বনাশ ডেকে এনেছে। তিন একর জমির ধানের মধ্যে দুই একর জমির ধান বৃষ্টি শুরুর আগে কেটেছেন। বাকিগুলো কাটার সুযোগ পাননি।

আব্দুল মতিন বলেন, সবেমাত্র পাকা ধান কেটে জমিতে রেখে দিয়েছি। ইচ্ছে ছিলো জমিতে রেখেই মেশিনের মাধ্যমে ধান মাড়াই করবো। এখান থেকে ধান বাড়িতে নিয়ে সিদ্ধ করে শুকাবো এবং খড়গুলো শুকিয়ে সংরক্ষণ করবো। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে কেটে রাখা পাকা ধান বৃষ্টির পানিতে পড়ে আছে। এছাড়া বাকি যে এক একর জমির ধান কাটতে পারিনি- সেগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে। ধান পাকা হওয়ায় অনেকগুলো মাটিতে ঝরে পড়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মূখীন হতে হবে।

একই এলাকার কৃষক মো. আমজাদ হোসেন স্বপন বলেন, এক একর জমিতে আমন ধানের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ধানের গাছ ভেঙে শুয়ে পড়েছে। যেসব ধানের গোঁছায় পানি লেগে আছে, সেগুলো থেকে অঙ্কুর গজাচ্ছে। ফলে ফলন ভালো হলেও বৃষ্টির কারণে ব্যাপক লোকসান হবে।

ঘূর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ এর প্রভাবে লক্ষ্মীপুরে তিনদিন ধরে টানা বৃষ্টি হয়েছে। অসময়ের এ বৃষ্টির কারণে আমন ধানের ক্ষেতসহ ফসলি জমিতে পানি জমে গেছে। এতে কৃষক আব্দুল মতিন এবং আমজাদ হোসেনের মতো লক্ষ্মীপুরে এমন শত শত কৃষক ক্ষেতে থাকা আমন ধান দুচিন্তার মধ্যে পড়েছেন। ভালো ফলনে মুখে হাসি থাকলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তারা শঙ্কার মধ্যে পড়েছেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক না হলে ক্ষেতের বাকি ধান ঘরে তোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। তবে অনেকে বৃষ্টি শুরুর আগেই ধান কেটে ঘরে তুলতে সক্ষম হয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চর আলী হাসান গ্রামের কৃষক সফিকুল ইসলাম জানান, বৃষ্টির আগে ধান কেটে ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখেছি। বৃষ্টি শুরুর পর থেকে কাটা ধানগুলো ক্ষেতের মধ্যে পড়ে আছে। ধানের গাছ ভিজে থাকায় মাড়াই করা সম্ভব নয়। আমাদের এলাকার বেশিরভাগ ক্ষেতের ধান শুয়ে পড়েছে। শুয়ে পড়া ধান কাটতে সময় বেশি লাগে। ফলে ধানকাটা খরচ বেড়ে যাবে।

এদিকে বৃষ্টিতে ধানের পাশাপাশি খড়ের ক্ষতিরও আশঙ্কা করছে কৃষকরা। অনেকে আগাম ধান কেটে খড়গুলো ক্ষেতের মধ্যে শুকোতে দিয়েছেন। তবে বৃষ্টির পানিতে ভিজে থাকার কারণে খড়গুলো পচে যাচ্ছে। ফলে এর প্রভাব পড়বে গো-খাদ্যের ওপর।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের হিসেব মতে, অসময়ের বৃষ্টিতে লক্ষ্মীপুরে ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টির পানিতে ১৫০ হেক্টর জমির ধান আক্রান্ত হয়েছে। চলতি বছর ৮১ হাজার ২৬৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৭৬ মেট্রিক টন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আবুল হোসেন বলেন, মৌসুমের শুরুতে বেশিরভাগ জমির ধান কেটে ফেলা হয়েছে। তবে ১৫০ হেক্টর জমির ধান বৃষ্টিতে আক্রান্ত হয়েছে। কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে- তা এখনো নিরুপন করা হয়নি।

তিনি বলেন, এবার আমন ধানের উৎপাদন ভালো হয়েছিলো। আমরা আশা করেছিলাম উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে কৃষকরা কিছুটা ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop