৬:৫৩ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • হাঁস-মাছ চাষে বছরে ২৭ লাখ টাকা আয় করেন ইমন
ads
প্রকাশ : অগাস্ট ২৪, ২০২১ ৭:১৮ অপরাহ্ন
হাঁস-মাছ চাষে বছরে ২৭ লাখ টাকা আয় করেন ইমন
প্রাণিসম্পদ

ইমরুল কাওছার ইমন দৈনিক ভোরের ডাকের নিজস্ব প্রতিবেদক। স্বপ্ন ছিল সফল উদ্যোক্তা হবেন। আর এ স্বপ্ন নিয়েই ২০১৯ সালে স্বল্প পরিসরে শুরু করেন মাছ চাষ। পাশাপাশি গাইবান্ধার সাদুল্যাপুরের নলডাঙ্গায় মায়ের নামে গড়ে তুলেছেন হাঁসের খামার। হাঁস আর মাছ চাষে বছরে তার আয় হচ্ছে ২৭ লাখ টাকা।

জানা গেছে, স্বল্প পরিসরে ২০১৯ সালে একটি মাত্র পুকুরে মাছ চাষ শুরু করেন ইমন। মাছ চাষে দুই বছরে সফল হওয়ার পর তিনি পরিকল্পনা করেন ‘খাঁকি ক্যাম্পবেল’ জাতের হাঁস পালনের। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি করোনা মহামারির মাঝামাঝি সময়ে গড়ে তোলেন একটি হাঁসের খামার। হাঁসের ডিম বিক্রির টাকায় চার একর জমিতে তিনটি বিশাল পুকুরে পরিকল্পিতভাবে চাষ করছেন বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। চার মাস পরপর মাছ বিক্রি থেকে তার আয় হচ্ছে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকা। এ ছাড়া ডিম বিক্রি করে মাসে লক্ষাধিক টাকা আয় হচ্ছে।

এর আগে ইমন ২০১৫ সালে ঢাকার গুলিস্তানে নিজের জমানো টাকা দিয়ে শার্ট তৈরির একটি ছোট্ট কারখানা শুরু করেন। প্রথম দিকে মাত্র তিনজন কর্মচারী নিয়ে কারখানা শুরু করলেও বর্তমানে ৫০ জনের বেশি লোক কাজ করছে তার কারখানায়। পাশাপাশি তিনি শান্তিনগরে একটি ট্রাভেল এজেন্সি খুলেছেন। ব্যবসার লাভের টাকায় বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাস কেনেন তিনি। রাজধানীতে উবারের সঙ্গে চুক্তি করে যাত্রীসেবা দেয় মাইক্রোবাসগুলো।

একইসঙ্গে নিজের বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে দেশের নামকরা অনেক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে গড়ে তোলেন সম্পর্ক। এই সুবাদে এসব প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রম ও ব্যবসার পণ্য প্রসার ঘটাতে ‘ক্রিকেট ব্র্যান্ডিং’ এর কাজ শুরু করেন। দেশের বিভিন্ন ক্লাবভিত্তিক টুর্নামেন্টসহ বাংলাদেশ জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের জার্সি ও গ্যালারিতে ব্র্যান্ডিংয়ের (বিজ্ঞাপন) কাজ করেন তিনি।

তবে চলতি বছরের মার্চে এসে তার জীবনের সব হিসেব এলোমেলো হয়ে যায়। বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপে ক্ষতি হতে থাকে একের পর এক ব্যবসায়। লকডাউনে গার্মেন্টস-কারখানা বন্ধ। উবারের গাড়ির চাকাও ঘোরেনি। সারাবিশ্বে বিমান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা ও ক্রিকেট ব্র্যান্ডিং বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সমন্বিতভাবে হাঁস ও মাছ চাষের পরিকল্পনা নেন তিনি। গড়ে তোলেন মায়ের নামে ‘হামিদা ডাক অ্যান্ড ফিশ ফার্ম’।

স্থানীয়রা জানান, ইমনের ফার্মে বর্তমানে চার-পাঁচজন শ্রমিক রয়েছে। একটি পুকুরে এক পাশে চাষ করছেন মনোসেক্স তেলাপিয়া ও আরেক পাশে চাষ হচ্ছে থাই জাতের পাঙাশ। তার পাশে পানির ওপরে বাঁশ ও টিন দিয়ে মাচা বানিয়ে হাঁসের খামার করেছেন। এ ছাড়া আরেকটি পুকুরে চাষ হচ্ছে ভিয়েতনামি কৈ, হাইব্রিড শিং, বিদেশি মৃগেল, কালিবাউশ ও সরপুঁটি। অন্যটিতে চাষ হচ্ছে দেশি জাতের মাছ।

স্থানীয় সংবাদকর্মী শাহিন মিয়া জানান, ইমরুল কাওছার ইমন মূলত সাংবাদিক। সাংবাদিকতার পাশাপাশি বেকার যুবকদের কীভাবে কাজে লাগানো যায় এমন ইচ্ছে ছিল তার অনেক দিনের। সেই ইচ্ছে থেকেই হাঁসের খামার দেন। খামারে ‘খাকি ক্যাম্পবেল’ জাতের এক হাজার হাঁস রয়েছে। এ হাঁস থেকে দৈনিক ৭০০- ৭৫০টি ডিম আসে। হাঁসের সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে করছেন মাছ চাষ। ইতোমধ্যে তার খামারটি লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছে। এ ছাড়া তিন-চারজন বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হয়েছে এখানে।

খামারটি দেখভালের দায়িত্বে আছেন ইমনের ছোট ভাই নাহিদ আনসারী। তিনি বলেন, এই খামারের উদ্যোক্তা আমার বড় ভাই ইমরুল কাওছার ইমন। তিনি ঢাকায় থাকেন। মাঝে মাঝে খামারটি পরিদর্শন করার জন্য আসেন। আমি এই খামারটির সার্বিক দেখভাল করি। এ ছাড়া দুইজন কর্মচারী রয়েছে। তারা তিন বেলা হাঁসগুলোকে খাবার দেয়। পাশাপাশি পুকুরগুলোও দেখাশোনা করে। এক হাজার হাঁস থেকে প্রতিদিন ৭০০-৮০০ ডিম আসে। দুই দিন পরপর ডিমগুলো বিক্রি করে থাকি। বর্তমানে খামারটি লাভজনক অবস্থায় আছে।

হামিদা ডাক অ্যান্ড ফিশ ফার্মের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইমরুল কাওসার ইমন বলেন, মূলত পাঁচ বছরের একটি পরিকল্পনা নিয়ে পথচলা শুরু করেছি। বর্তমানে এক হাজার খাকি ক্যাম্পবেল হাঁস এবং চার একর জমিতে দেশি-বিদেশি প্রজাতির নানা ধরনের মাছ চাষ করছি। বর্তমানে খামার ও পুকুরে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ১২ জন লোক কাজ করছে। আগামী বছরগুলোতে যা কয়েকগুণ বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, এলাকায় আরও অনেক খামার গড়ে উঠছে। প্রতিদিনই মানুষ নানা তথ্য নিতে খামারে আসছে। আমাদের অভিজ্ঞ কর্মীরাও বিভিন্ন খামারে গিয়ে বিনামূল্যে নানা ধরনের দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন। তরুণরা চাকরির পেছনে না ছুটে নিজের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে নিজের পাশাপাশি মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারে।

তিনি বলেন, করোনার এই মহামারিতে উচ্চ ঝুঁকি নিয়ে বিনিয়োগ করেছি। এর সুফল হিসেবে কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অন্তত তারা দেশের বোঝা হয়ে থাকছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিশন বাস্তবায়নে তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে, উদ্যোক্তা হতে হবে।

সম্প্রতি খামারটি পরিদর্শন করেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক এবং গাইবান্ধা-৩ আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি। তিনি বলেন ‘প্রজেক্টটি দেখে আমি অভিভূত। সাংবাদিকতার পাশাপাশি ইমন যেভাবে কাজ করছে এটা সত্যিই অকল্পনীয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান কৃষিতে যেন যুবকরা কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হয় এবং অন্যকে কাজ দিতে পারে। আমি কৃষকলীগের একজন কর্মী হিসেবে, এলাকার এমপি হিসেবে ইমনের এই প্রজেক্টকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সহযোগিতা করব।’
সূত্র: ঢাকা পোস্ট

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop