৩:০৪ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • পোকা দমনে কীটনাশক এর বদলে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘আলোর ফাঁদ’
ads
প্রকাশ : নভেম্বর ৪, ২০২১ ৪:০০ অপরাহ্ন
পোকা দমনে কীটনাশক এর বদলে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘আলোর ফাঁদ’
কৃষি গবেষনা

সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় ধানক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার না করে আলোর ফাঁদ পেতে ক্ষতিকর পোকা দমন করা হচ্ছে। আমনের খেত সুরক্ষায় আলোর ফাঁদ প্রযুক্তির ব্যবহার দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহায়তায় কৃষকেরা ‘আলোর ফাঁদ’ স্থাপন করেছেন। এতে পোকা দমনসহ ক্ষেতে ক্ষতিকর কি ধরনের পোকা রয়েছে, তা শনাক্ত করা যাচ্ছে। ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকামাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তা দমন করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে এই পদ্ধতি কৃষকদের মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে।

বুধবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার কাশিপুর ব্লকে ‘আলোর ফাঁদ’ স্থাপন করা হয়। ধান পাকার আগ পর্যন্ত ক্ষেতে ওই আলোর ফাঁদ কার্যক্রম চলবে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

বড়বিলা গ্রামের একটি আমনের ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, ধানের জমির পাশে তিনটি খুঁটি দিয়ে একটি বৈদ্যুতিক বাতি ঝোলানো হয়েছে। বাতির নিচে একটি পানির পাত্র রাখা হয়েছে, পাত্রে ডিটারজেন্টমিশ্রিত পানি। বাতি জ্বালানোর সঙ্গে সঙ্গে ফসলের জমির বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা এসে নিচে রাখা পানিতে পড়ে মারা যাচ্ছে। এভাবেই আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে ফসলের জমিতে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করা হয়। বৈদ্যুতিক বাতি, চার্জার ও সৌরবাতি দিয়ে এই কাজ করা হয়।

কাশিপুর গ্রামের কৃষক শেখ আতিয়ার রহমান ও বড়বিলা গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, তিনটি বাঁশের লাঠি, একটি বৈদ্যুতিক লাইট, আর পানি রাখার একটি পাত্র দিয়ে তৈরি করা হয় আলোর ফাঁদ। সন্ধ্যাবেলা জমির পাশে বসানো হয় এই ফাঁদ। অন্ধকার ধানের জমি থেকে বিভিন্ন প্রজাতির পোকা ছুটে এসে আলোর ফাঁদে আটকে পড়ে। আটকে পড়া পোকার মধ্য থেকে ক্ষতিকর পোকা চিহ্নিত করে এসবের গায়ে সঠিক মাত্রায় কীটনাশক ও রাসায়নিক প্রয়োগ করা হয়।

তারা বলছেন, এর আগে বিভিন্ন ধরনের কিটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহার করে কোন সুফল পাওয়া যায়নি। কিন্তু আলোর ফাঁদের মাধ্যমে পোকা চিহ্নিত করে সঠিক মাত্রায় কিটনাশক ও রাসায়নিক ব্যবহার করে সুফল মিলছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর তালা উপজেলায় ৯ হাজার ৬০৫ হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ করা হয়েছে। রোপা আমন মৌসুমে সচেতনতার অভাবে অনেক কৃষক জমিতে ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করার আগেই কীটনাশক প্রয়োগ করে থাকেন। এতে ফসলের জমির উপকারী অনেক পোকা মারা যায়। আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি নির্ণয়ের পর ধানের জমিতে পিলা করে কীটনাশক প্রয়োগ করতে এই প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহ দেয়া হচ্ছ।

তালার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা পীযুষ কান্তি পাল বলেন, এরই মধ্যে কিছু কিছু গাছে শীষও বের হয়েছে অনেক জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। এই সময়ে ধানে বাদামি ঘাসফড়িং (কারেন্ট পোকা), সবুজ ঘাসফড়িং, পাতা মোড়ানো পোকা, গান্ধি পোকা, মাজরা পোকাসহ বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা আক্রমণ করে। পোকার উপস্থিতি নির্ণয় করতে আমন খেতে আলোর ফাঁদ ব্যবহার শুরু করা হয়, আর চলবে ধান কাটা পর্যন্ত।

তিনি আরও বলেন, কৃষকেরা ক্ষতিকর পোকা দমনে ধানক্ষেতে সাধারণত কীটনাশক ব্যবহার করে থাকেন এতে কৃষকের অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হয়। এ কারণে পোকা দমনে আলোর ফাঁদ পদ্ধতি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে কোনো খরচ নেই। তিনি বলেন কারেন্ট পোকার আক্রমণে অল্প সময়ের মধ্যে খেতের ধান বিনষ্ট করে ফেলে।

তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, উপজেলার ৩৬টি ব্লকে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি বিষমুক্ত ফসল উৎপাদনের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি। অতিমাত্রায় কীটনাশক ব্যবহারের ফলে কৃষক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মানুষ এই প্রক্রিয়া ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে, দিন দিন এটি জনপ্রিয় হচ্ছে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop