২:১০ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • স্বল্প মূলধনে কেঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী মাকসুদা
ads
প্রকাশ : মে ১৫, ২০২১ ১০:৪১ পূর্বাহ্ন
স্বল্প মূলধনে কেঁচো সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী মাকসুদা
কৃষি বিভাগ

পটুয়াখালীর সদর উপজেলার মাকসুদা আক্তার (২৮) কেঁচো সার (ভার্মিকম্পোস্ট) উৎপাদন করে এখন স্বাবলম্বী। এ সারকে ভার্মিকম্পোস্ট বলা হয়। ভার্মিকম্পোস্ট উৎপাদন করে ক্রমেই চাষিদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন তিনি। স্বল্প মূলধনের এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দিতে চান মানুষের মাঝে। প্রতি মাসে এ সার বিক্রি তিনি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা উপার্জন করছেন।

সম্প্রতি পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বহালগাছিয়া গ্রামে মাকসুদার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে একচালা টিনের ঘর। ওই ঘরেতে তিনি কেঁচো সার উৎপাদন করে থাকেন। ঘরের মেঝেতে নিজের হাতে বানানো ৫টি মাটির চারি (পাত্র) ও ৬ টি রিং স্লাব রয়েছে।

মাকসুদা আক্তার বলেন, ২০১৫ সালে তিনি কুয়াকাটায় এক উদ্যেক্তার ভার্মিকম্পোস্ট সার উৎপাদন দেখে অনুপ্রাণিত হন। তারপর কৃষি কর্মকর্তাদের কাছে কিছু কেঁচো সংগ্রহ করে দিতে বলি। ওই সময় সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুস সালাম কিছু কেঁচো সংগ্রহ করে দিলে অল্প পরিসরে ছোট একটা পাত্রে কেঁচো সার তৈরি করি।

তিনি কেঁচো সার উৎপাদন শুরু করেছেন। প্রথমদিকে একটু কষ্ট হলেও এখন ভালোই বিক্রি হচ্ছে। কোঁচো সার উৎপাদনে উপকরণ হিসেবে থাকছে কচুরি পাতা, পচা গোবর, খৈর, ডিমের খোসা, মাছের আইস ও শাকসবজির উচ্ছিষ্ট। আমার চারি (পাত্র) বেশ বড় আকারের। প্রতি চারিতে প্রায় ৬ মণ সার রাখা যায়। আমার এখানে কেঁচোর বংশবিস্তার হচ্ছে। তাই বাহির থেকে আমার আর কেঁচো সংগ্রহ করতে হয় না।

তিনি জানান, প্রথমে গোবর সংগ্রহ করে ১০ দিন যাবত পচাতে হবে। গোবরে যদি পানি থাকে তাহলে রোদে শুকাতে হবে। তারপর ওই গোবর ঠান্ডা করে চারিতে (পাত্র) রাখতে হবে। তারপরে কেঁচো দিতে হবে। তারপর কচুরি পাতা, পচা গোবর, খৈল, ডিমের খোসা, মাছের আইস ও শাক-সবজির উচ্ছিষ্ট মিশিয়ে চটের বস্তা দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়।

কেঁচো আবার ছায়া বা অন্ধকার জায়গা পছন্দ করে। এভাবে ১ মাসের মধ্যে তৈরি হয় ভার্মিকম্পোস্ট বা কেঁচো সার। আমার এখানে এখন ৩ লাখ টাকার কেঁচো সার রয়েছে। প্রতি কেজি সার ১৫ টাকা করে বিক্রি করি। ১ কেজি কেঁচো ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করি। এ ছাড়াও কেঁচো ২ টাকা পিচ হিসেবে বিক্রি করি। আমার সংসার ভালোই চলতেছে। ভবিষ্যতে আমার খামারে আরো বেশি পরিমাণ কোঁচো সার উৎপাদনের পরিকল্পনা রয়েছে। পাশাপাশি আমি ব্লু গোল্ড প্রেজেক্টের আওতার আমি বিভিন্ন স্থানে গিয়ে কেঁচো সার তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।

কিভাবে কেঁচো সার করি তা দেখতে বিভিন্ন স্থান থেকে আমার এ খামার মানুষ আসতেছে। এটা আমার কাছে ভালোই লাগে। আমি চাই নারীরা এগিয়ে আসুক। এ সার উৎপাদন করে আমার মত তারা স্বাবলম্বী হোক। সহজেই কম পুঁজিতে ভার্মিকম্পোস্ট সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হতে পারে। এখন বাজারে রাসায়নিক সারের মান খুবই খারাপ। আবার দামও বেশি। সেখানে ভার্মিকম্পোষ্ট পুরোপুরি প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে তৈরি একটি সার। এ সারের দামও কম। তাই স্থানীয় কৃষকদের মাঝে সারটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।

বহালগাছিয়া এলাকার কবির হোসেন জানান, আমাদের এলাকার মাকসুদা ঘরে বসে সার বিক্রি করে টাকা উপার্জন করছে। এটা আমাদের কাছে প্রশংসার। আমরা চাই তিনি আরও বড় উদ্যোক্তা হোক।

কৃষক বাতেন জানান, আমার একটি সবজি বাগান রয়েছে। আমি শুনতে পাই কেঁচো দিয়ে মাকসুদা নামের এক নারী প্রাকৃতিক উপায়ে সার তৈরি করছেন। আমি সেখান থেকে সার নিয়ে এসে সবজি বাগানে দেই। এবার সবজি বাগানে ফলন ভালোই এসেছে। এই সারটি প্রকৃতিক একটা সার কোনো ভেজাল নেই দামও কম।

স্বামী নুরুজ্জামান খান জানান, নারীরা যদি ঘরে বসে অর্থ উপার্জন করতে পারে তা তো ভালোই। এ সারটি যে কোন নারী তার ঘরে বসে উৎপাদন করতে পারবে। আমি আমার স্ত্রীকে সার তৈরিতে যথেষ্ট সাহায্য করি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ কে এম মহিউদ্দিন বলেন, জৈব পদার্থ হলো মাটির প্রাণ। ক্রমেই মাটির প্রাণ হ্রাস পাচ্ছে তাই আমরা জৈব সার প্রয়োগের উপরে জোর দিচ্ছি। কেঁচো সারে ফলন ভালো হয় এটা প্রমাণিত। তাই আমরা চাষিদের সবজি খেতে ও ফলের বাগানে ভার্মিকম্পোস্ট সার প্রয়োগ করতে বলি।

স্বল্প পরিসরে হলেও এখানে ভার্মিকম্পোস্ট সার উৎপাদন করা হচ্ছে। ভার্মিকম্পোস্টকে কেন্দ্র করে উদ্যোক্তা তৈরির প্রচেষ্টা রয়েছে আমাদের। পাশাপাশি এ জেলাকে ভার্মিকম্পেস্ট সম্পন্ন জেলা হিসেবে পরিণত করা। এ সারের যতই ব্যাবহার বাড়বে ততই ক্ষতিকর রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমে আসবে বলে জানান তিনি। সূত্র: জাগো নিউজ

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop