৪:৫৬ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • চলনবিলে মাছ ধরার বাউত উৎসব
ads
প্রকাশ : ডিসেম্বর ৩, ২০২২ ১০:০৫ অপরাহ্ন
চলনবিলে মাছ ধরার বাউত উৎসব
মৎস্য

শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা। পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার রুহুল বিল। শীত উপেক্ষা করে ১০ বছরের ছেলে রবিউলকে সঙ্গে নিয়ে মাছ ধরতে এসেছেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসাদুল ইসলাম। সকালের সোনা রোদ তাদের চোখে-মুখে অন্যরকম অতুভূতি প্রকাশ করছে।

হাজারো সৌখিন মানুষের ঢল নেমেছে চলনবিলে। পলোসহ মাছ শিকারের নানারকম সরঞ্জাম নিয়ে সবাই একসঙ্গে মাছ শিকারের এই আয়োজনের নাম ‘বাউত উৎসব’। গ্রামীণ ঐতিহ্য হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে বছরের পর বছর এই সময়ে পাবনার চলনবিলে চলে আসছে এই উৎসব। তবে দিন দিন বিল-জলাশয়ের আয়তন কমে যাওয়ায় মিলছে না আগের মতো দেশীয় প্রজাতির মাছ। প্রভাবশলীদের দাপটে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে গ্রামীণ এই উৎসব।

জানা যায়, শীতকে উপেক্ষা করে কাক-ডাকা ভোরে মোটরসাইকেল, বাস, সিএনজি চালিত থ্রি হুইলার, অটোরিকশা, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে বিল অভিমুখে ছুটছে মানুষ। সূর্যের আলো ফুটতে না ফুটতেই বিলপাড়ে হাজির তারা। এরপর নিজেদের প্রস্তত করে একসঙ্গে বিল অভিমুখে যাত্রা। কারো হাতে পলো, আবার কারো হাতে ঠেলা জাল, বাদাই জালসহ মাছ ধরার নানা উপকরণ। এভাবেই চলনবিলে উপস্থিত বিভিন্ন জেলার হাজারো শৌখিন মৎস্য শিকারি।

লোকজ রীতিতে বিলের জলে মনের আনন্দে চলছে মাছ শিকার। সূচনার ইতিহাস অজানা হলেও চলনবিলাঞ্চলে এমন উৎসব চলছে বছরের পর বছর। দলবেঁধে মাছ ধরার এ আয়োজনে মৎসশিকারীদের ডাকা হয় বাউত। তাদের ঘিরেই উৎসবের নামকরণ। চলনবিলের রুহুল বিল, ডিকশির বিল, রামের বিল সহ বিভিন্ন বিলে মাসব্যাপী চলে এই বাউত উৎসব।

বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর নভেম্বরের শেষে অথবা ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে শুরু হয় মাসব্যাপী এই উৎসব। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবার ভোর থেকে বিলাঞ্চলের পূর্বনির্ধারিত এলাকায় দলঁবেধে মাছ শিকারে নামেন বাউতেরা। বিভিন্ন বয়সী মানুষের উপস্থিতিতে বিলপাড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। কারো ভাগ্যে মেলে শোল, বোয়াল, রুই, কাতল, গজার, টাকিসহ বিভিন্ন দেশী মাছ। আবার কেউ ফেরেন খালি হাতে। তবে আনন্দটাই তাদের কাছে মুখ্য।

নাটোরের গুরুদাসপুরের আনিছুর রহমান, সিরাজগঞ্জের তাড়াশের আকবর হোসেনসহ অন্যরা জানান, প্রতিবছর বাউতে নেমে একসঙ্গে মাছ ধরার অনুভূতি ভালো লাগার। কেউ মাছ পাই বা না পাই তাতে কারো মন খারাপ হয় না। আনন্দটাই আসল।

সৌখিন মৎস শিকারি বেশ কয়েকজনের অভিযোগ, একদিকে কমে আসছে বিল, জলাশয়। অন্যদিকে, প্রভাবশালীদের দৌরাত্মে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে গ্রামীণ এই উৎসব। যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে, তখন সেই দলের প্রভাবশালী নেতারা ভোগদখলে থাকে। চায়না জালে ধ্বংস করা হয় মাছের প্রজনন। বিলপাড়ে দেখা গেলো বেশকিছু নিষিদ্ধ চায়না জাল। যেকারণে আগের মতো দেশী মাছ পাওয়া যায় না বলে দাবি তাদের।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদ হাসান খান জানান, ‘গ্রামীণ এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে বিল, জলাশয়ে দেশী মাছে অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হয়েছে। আরো অনেক পরিকল্পনা সামনে রয়েছে। সেইসঙ্গে প্রভাবশালীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ এবং নিষিদ্ধ চায়না জালের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে। আমরা চাই গ্রামীণ এই ঐতিহ্য যেন হারিয়ে না যায়। এজন্য প্রশাসন তৎপর থাকবে।’

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop