৬:১৮ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • ব্রি-২৮ ধান চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষকরা
ads
প্রকাশ : এপ্রিল ১৯, ২০২১ ২:১৭ অপরাহ্ন
ব্রি-২৮ ধান চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে কৃষকরা
কৃষি গবেষনা

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ করে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ধানের নেক ব্লাস্ট (শীষ মরা) রোগের আক্রমণে তারা এখন দিশেহারা। অধিক খরচে আবাদ করে কৃষকের মাথায় এখন হাত পড়েছে।

অনেকেই এখন জমির ধান কেটে বাড়িতে আনতে চান না বলে জানিয়েছেন। ব্রি-২৮ জাতের ধানে চিটার পরিমাণ বেশি হওয়ায় খড় ছাড়া আর কিছুই পাওয়া যাবে না বলে ধান কাটতে অনীহা কৃষকদের। তাদের দাবি শীষ মরা রোগে আক্রান্ত ধানের খড়ও গবাদিপশু খেতে চায় না।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৫শ’ হেক্টর বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এবছর ১৬ হাজার ২১২ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়। যার মধ্যে ৩ হাজার ১শ হেক্টর জমিতে ব্রি-২৮ ধান চাষ করা হয়েছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে উপজেলার সোনাহাট ইউনিয়নের দক্ষিণ ভরতের ছড়া, উজির পাড়া, মাহিগঞ্জ, লক্ষী মোড়, পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাটেশ্বরী ব্রিজ পাড়, বেলদহ, আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের মোগলকাটা, ভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের দেওয়ানের খামার, বাগভান্ডার, ঈশ্বরবরুয়া, কামাত আঙ্গারীয়া, তিলাই ইউনিয়নের পশ্চিম ছাট গোপালপুর, বানিয়াটারী, পাথরডুবি ইউনিয়নের মইদাম, বাঁশজানী, শিলখুড়ি ইউনিয়নের উত্তর তিলাই, দক্ষিণ ধলডাঙ্গা ও কাঠগীর এলাকায় ব্রি-২৮ জাতের ধানের শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে চিটায় পরিণত হয়েছে। কৃষকদের মতে এই রোগের নাম ‘শীষ মরা’ আর কৃষি অফিসের মতে এটি ‘নেক ব্লাস্ট’ রোগ।

আন্ধারীঝাড়ের কৃষক ফজলুর রহমান জানান, এক বিঘা ধান কেটে বাড়িতে নিয়েছি, এই ধানের খড় গরুও খেতে চায় না। অপর কৃষক রফিকুল জানান, বিঘা প্রতি ছয় মণ ধান দেয়ার চুক্তিতে তিন বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ ধান চাষ করেছি। শীষ মরা রোগে সমস্ত জমির ধান চিটা হয়ে গেছে। লাভ তো দুরের কথা, খরচ উঠবে না। জমির মালিক যদি ছাড় না দেন বাজার থেকে ধান কিনে দিতে হবে তাকে।

পাইকের ছড়ার বেলদহ গ্রামের কৃষক ভুট্টু জানান, ধানের শীষের গোড়ার দিকে কালো দাগ হয়, দুইদিনের মধ্যে সমস্ত শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। ওষুধ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। তিনি আরো জানান, তার এক প্রতিবেশীর এক বিঘা জমিতে ১ মণের কম ধান হয়েছে। দক্ষিণ ভরতের ছড়ার কৃষক ইদ্রিস আলী জানান, এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি, ওই জমিতে ৩/৪ মণ ধান হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

একই এলাকার কৃষক শাহ আলম জানান, ৩৮ শতাংশ জমিতে ধান লাগিয়েছিলাম। ধানের যে অবস্থা তাতে ধান কাটা আর না কাটা একই সমান।

অধিকাংশ কৃষকের দাবি উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ক্ষেতে ওষুধ স্প্রে করেও শীষ মরা ঠেকানো সম্ভব হয়নি।

সোনাহাট ডিগ্রী কলেজের কৃষি বিভাগের প্রভাষক আজিজুল হক বলেন, ধানের শীষ বের হওয়া শুরু হলে জমিতে সব সময় দুই আড়াই ইঞ্চি পানি রাখলে এবং পটাশিয়াম ও ছত্রাক নাশক স্প্রে করলে ধানের শীষ সাদা হয়ে ধান এত বেশী নষ্ট হবে না এবং ধান নেকব্লাষ্টে আক্রান্ত কম হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, নেকব্লাস্ট দমনে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। ব্রি-২৮ জাতটি বর্তমান সময়োপযোগী নয়। কৃষি অফিসের তৎপরতায় ব্রি-২৮ জাতের ধান চাষ গত বছরের তুলনায় এবছর অর্ধেকে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। জমিতে অধিক পরিমাণে ইউরিয়া ও ডিএপি সার প্রয়োগ, পরিমাণ মতো এমওপি সার প্রয়োগ না করার কারণে নেকব্লাস্টের পরিমান বেড়ে গেছে। প্রাথমিক লক্ষণ দেখা দেয়া জমিতে ৬৬ লিটার ওষুধ মেশানো পানি স্প্রে করতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কৃষি অফিস থেকে। কৃষকরা সঠিকভাবে স্প্রে না করায় নেক ব্লাস্ট প্রতিরোধ সম্ভব হচ্ছে না। তিনি কৃষকদের ব্রি-২৮ জাতের পরিবর্তে ব্রি-৭৪, ব্রি-৮৬, ব্রি-৮৯ ও ব্রি-৯২ জাত চাষ করার পরামর্শ প্রদান করেন।

 

সূত্রঃ কালের কণ্ঠ

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop