৪:১৪ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্রুডিং এ খাবার দেবার সময়…
ads
প্রকাশ : ডিসেম্বর ১৪, ২০২১ ২:৪৯ অপরাহ্ন
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্রুডিং এ খাবার দেবার সময়…
পোলট্রি

ডাঃ শুভ দত্ত: ব্রয়লার বাচ্চাকে ব্রুডিং এ খাদ্য দেবার সময় নিয়ে আমরা অনেকেই দ্বিধা-দ্বন্দে থাকি। কেউ বলে বাচ্চা ব্রুডারে ছাড়ার ২-৩ ঘন্টা পর খাদ্য দিতে হবে। কেউ বলে ৪ ঘন্টা পর, কেউ বলে ৬ ঘন্টা পর তো কেউ বলে বাচ্চা ব্রুডারে ছাড়ার ১০ ঘন্টা পর খাদ্য দিতে হবে। সবগুলোই হয়তো সঠিক তবে সবচেয়ে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতি হলো ব্রুডারে বাচ্চা ছাড়ার পূর্বেই খাদ্যের পাত্রে খাদ্য দিয়ে দেয়া যেন বাচ্চার ব্রুডিং শুরু হবার সাথে সাথে খাদ্য খেতে পারে।

ব্রয়লার বাচ্চাকে স্টারভেশনে না রেখে দ্রুত খাদ্য দিয়ে ব্রুডিং করার পিছনে কিছু উপকার আছে যা বিভিন্ন গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে। যেমন, একটি গবেষণায় জানা গেছে, বাচ্চা না খেয়ে থাকলে তার কুসুমথলি ধীরে ধীরে শোষিত হয়। অপরদিকে যে বাচ্চা দ্রুত খাদ্য গ্রহন করে তার কুসুম থলি দ্রুত শোষিত হয় (Moran and Reinhart, 1980)।
অপর এক গবেষণা জানা গেছে, ব্রুডিং এর প্রথমদিকে না খেয়ে থাকা বাচ্চার চেয়ে খাদ্য গ্রহন করা বাচ্চার গাট একটিভিটি অনেক বেশি থাকে। ফলে এই বাচ্চাগুলোর কুসুম থেকে বিভিন্ন নিউট্রিয়েন্ট সহজে ইনটেস্টাইনে প্রবেশ করে। ফলে কুসুমথলি দ্রুত শোষিত হয় ( Noy et. al, 1996)। যা বাচ্চার দৈহিক ওজন বৃদ্ধি ত্বরানিত করে।
একই ধরনের আরেকটি গবেষণায় জানা যায় যে, ব্রুডিংর এর প্রথম দিকে না খেয়ে থাকা বাচ্চা কুসুমথলিতে বিদ্যমান নিউট্রিয়েন্ট সহজে গ্রহন করতে পারে না। উক্ত গবেষণায় বলা হয়, ডায়জেস্টিভ সিস্টেম সক্রিয় হবার সাথে কুসুমথলি শোষিত হওয়া পরস্পর সম্পর্কযুক্ত ( Santos Silversides, 1996)। আর ডায়জেস্টিভ সিস্টেম সক্রিয় হয় যখন থেকে বাচ্চা খাদ্য গ্রহন করতে শুরু করে।
এছাড়াও দেরিতে খাদ্য ও পানি দিলে বাচ্চার ওজন বৃদ্ধি বিশেষ করে ব্রেস্ট মাসল বৃদ্ধিতে নেগেটিভ প্রভাব পরতে পারে (Noy & Skylan, 2001), (Kidd et al, 2007)
দেরিতে খাদ্য ও পানি দিলে বাচ্চার গ্রোথ ৫% পর্যন্ত হ্রাস পেতে পারে (Uni and Ferket, 2004)
দেরিতে খাদ্য ও পানি দিলে বাচ্চার ডায়জেস্টিভ ও ইমিউন সিস্টেম ধীর গতিতে গঠিত ও সক্রিয় হয় (Bhanja et al, 2010)।
দেরিতে খাদ্য ও পানি দিলে ইমিউন সিস্টেমের ম্যাচুরেশন ঠিক মত হয় না। ফলে বাচ্চা প্যাথোজেন দ্বারা সহজেই আক্রান্ত হয় (Dibner et al, 1999)।
এছাড়া বিশ্বের অন্যতম প্রেডিগ্রি প্রডিউসার প্রতিষ্ঠান “এভিয়াজেন” তাদের ব্রিডার ম্যানেজমেন্ট ম্যানুয়ালে চিকস প্লেসমেন্টের সাথে সাথে খাদ্য দেবার বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন।
তাছাড়া বেশি দুরত্বের স্থানে বা যেখানে বাচ্চা পৌছাতে অনেক সময় লাগবে এমন স্থানে বাচ্চা ডেলিভারী করার সময় বাচ্চাকে ডিহাইড্রেশন ও স্টারভেশন মুক্ত রাখতে হ্যাচারী থেকেই বাচ্চার বক্সে কিছু বিশেষ ধরনের খাদ্য দিয়ে দেয়া হয় যা বাচ্চাকে দ্রুত খাদ্য দেবার প্রয়োজনীয়তা প্রমাণ করে।
সাধারনত হ্যাচারীতে হ্যাচার থেকে সকাল ৫-৭ টার মাঝে হ্যাচ হওয়া বাচ্চা বের করে আনা হয়। তারপর গ্রেডিং করে বাচ্চাগুলো বক্সে রাখা হয়। সেই বাচ্চা সাধারনত সন্ধ্যার দিকে হ্যাচারী থেকে বিভিন্ন ডিলার পয়েন্টে রওয়ানা হয়। অতঃপর সেই বাচ্চা খামারে পৌছাতে পৌছাতে রাত ১০ টা বেজে যায়। দুরে হ্যাচারী হলে পরের দিন সকাল ১০ টায় বাচ্চা খামারে পৌছে। অর্থাৎ হ্যাচ হবার পর থেকে খামারে পৌছাতে দীর্ঘ ১৮-৩৬ ঘন্টা বাচ্চা না খেয়ে থাকে। এমতাবস্থায় যদি খামারে পৌছার পর বাচ্চাগুলোকে আরো ২-১০ ঘন্টা খাদ্য দেয়া না হয় তবে সেটা যে ভাল ফলাফল বয়ে আনবে না সেটা উপরের গবেষণাগুলো থেকেই বুঝা যাচ্ছে।
সুতরাং বাচ্চা খামারে পৌছার সাথে সাথে খাদ্য ও পানি একসাথে দিয়ে ব্রুডিং শুরু করতে হবে। ব্রুডিং শুরুর পর যত দেরিতে খাদ্য দিবেন আপনার বাচ্চার খাদ্যতন্ত্র তত দেরিতে এ্যকটিভ হবে এবং গ্রোথ পারফরম্যান্স তত খারাপ হতে শুরু করবে।
শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop