৫:৪৫ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • চাষাবাদে আধুনিকতার ছোঁয়া, উৎপাদন খরচ কমবে ২৫-৩০ শতাংশ
ads
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ২৫, ২০২৩ ৮:১৫ অপরাহ্ন
চাষাবাদে আধুনিকতার ছোঁয়া, উৎপাদন খরচ কমবে ২৫-৩০ শতাংশ
কৃষি বিভাগ

জমির অপচয় রোধ ও খরচ কমিয়ে ফসল উৎপাদনে আশার আলো দেখাচ্ছে ‘সমলয়’ নামের নতুন চাষাবাদ পদ্ধতি। এই পদ্ধতি বৃহৎ পরিসরে প্রয়োগ করায় পুরো প্রক্রিয়ায় যন্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচ অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কম হয়। সমলয় পদ্ধতিতে ভিন্ন ভিন্ন জমিতে নানা জাতের ধান চাষ না করে কৃষকরা একটি জমিতে সব প্লটে একই জাতের ধান রোপণ করেন। এই পদ্ধতিতে চারা রোপণ থেকে শুরু করে সব প্লটে ফসল কাটা পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়া আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে একই সময়ে সম্পাদিত হয়।

জমির অপচয় রোধে প্রচলিত পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি না করে প্লাস্টিকের ফ্রেম বা ট্রেতে বীজ রোপণ করা হয়। ২০ থেকে ২৫ দিনের মধ্যে চারা রোপণের জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়। প্রস্তুত হয়ে গেলে রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার ব্যবহার করে চারা রোপণ করা হয়। একই সময়ে সব চারা রোপণের কারণে একটি নির্দিষ্ট এলাকার সব প্লটের ফসল একই সময়ে পাকে। ফলে সব প্লটের ধান একসঙ্গে মেশিন দিয়ে কাটা ও মাড়াই করা যায়।

কৃষি অধিদপ্তর বলছে, ছোট ছোট জমিতে বড় কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার কষ্টকর। তাই এলাকাভিত্তিক কৃষকদের সংগঠিত করে অধিক জমিতে কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে একই সময়ে, উন্নত মানের একই জাতের ধান লাগানো হয়েছে। এতে করে ধানগুলো একসঙ্গে পাকলে সহজেই যন্ত্র দিয়ে কাটা সম্ভব হবে। এতে করে একদিকে যেমন কৃষিযন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে, অন্যদিকে সব জমি একসঙ্গে চাষ করায় উৎপাদন খরচও কম পড়ছে। আবার যেকোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্যও এই পদ্ধতির চাষাবাদ ব্যাপক উপকারী। কারণ ফসল পেকে যাওয়ার পর কোনো দুর্যোগের পূর্বাভাস পেলে সহজেই ফসল কেটে ফেলা যাবে কৃষিযন্ত্রের মাধ্যমে। এতে যে সময় লাগবে, একই সময়ে শ্রমিক দিয়ে এটা করা সম্ভব হয় না।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেছেন, ‘সমলয়’ হলো, আমরা একই সময় ফসল লাগাব, আবার একই সময় মেশিনে ফসল কাটব। কৃষি অধিদপ্তরের সঙ্গে ব্রিও সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা কৃষকদের নানাভাবে সাহায্য দিচ্ছে। ব্রির ১১টি আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রধান কার্যালয়ে ধান কাটার মেশিন আছে। ব্রি উদ্ভাবিত এই মেশিনগুলো বিভিন্ন স্থানের কৃষকদের ধান কাটার জন্য বিনামূল্যে দেওয়া হবে।

কৃষি তথ্য সার্ভিসের (এআইএস) তথ্য বলছে, ধানচাষ লাভজনক করার পথ হলো উৎপাদন ব্যয় কমানো। আর উৎপাদন কমাতে হলে সমলয় চাষের বিকল্প নেই।

ব্রির গবেষণা তথ্য বলছে, সমলয় পদ্ধতিতে ধান চাষ করলে উৎপাদন ব্যয় কমছে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। পাশাপাশি বেড়ে যাচ্ছে কৃষকের লাভ। এর মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে আধুনিক চাষাবাদেও অভ্যস্ত হতে শুরু করেছেন দেশের কৃষকরা। সরকারি উদ্যোগে যে কৃষি ব্লকগুলো তৈরি করা হয়েছে, সেখানে কৃষকদের বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হয়েছে। বীজতলা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্লাস্টিক ট্রে দেওয়া হয়েছে। রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টারের মাধ্যমে যে বীজ রোপণ করা হয়েছে, তার খরচও সরকার দিচ্ছে। ব্লকের জমিগুলোতে যতটুকু রাসায়নিক সার দরকার, তার সবটাই বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ধান পাকলে কম্বাইন্ড হার্ভেস্টরের মাধ্যমে কেটে মাড়াই, ঝাড়াই করে বস্তায় তোলা পর্যন্ত কাজগুলোও করা হবে মেশিনের মাধ্যমে, এর খরচও সরকার বহন করছে।

কর্মকর্তারা বলেন, উৎপাদন খরচ কম পড়ায় এবং লাভের মার্জিন বেশি হওয়ায় কৃষকরা দিন দিন সমন্বিত পদ্ধতিতে ধান চাষে আরো উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

২০১৯-২০ সালে ১২টি জেলায় সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা হয়। ওই সময় প্রদর্শনী আকারে ৬০০ একর জমিতে বোরো চাষ করা হয়। এ থেকে সফলতা পাওয়ার পর থেকেই কৃষকদের মধ্যে বাড়তে থাকে নতুন চাষপদ্ধতির জনপ্রিয়তা।

চলতি বোরো মৌসুমে ৬১ জেলার মোট ৫ হাজার ৫৫০ একর জমিতে ১১০টি ব্লক সমলয় পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে। এগুলো সবই হচ্ছে সরকারি প্রণোদনার আওতায়। এছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলে কৃষকরা নিজ খরচেই এই পদ্ধতিতে চাষ করছেন।

প্রচলিত পদ্ধতিতে এক হেক্টর জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে এলাকাভেদে খরচ হয় প্রায় ১২ থেকে ১৬ হাজার টাকা, যেখানে রোপণ যন্ত্র (রাইস ট্রান্সপ্ল্যান্টার) ব্যবহার করলে ব্যয় থাকে ১০ হাজার টাকার টাকার মধ্যে। একইভাবে ধান কাটার ক্ষেত্রেও সময়স্বল্পতা এবং সারা দেশে প্রায় পাশাপাশি সময়ে কর্তনকাজ শুরু হওয়ায় শ্রমিকের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে একটি কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে ধান কাটলে হেক্টরপ্রতি ৩ হাজার ৫০০ থেকে ৪ হাজার টাকা খরচ হয়- সেখানে শ্রমিক দিয়ে কাটা, পরিবহন, মাড়াই ও ঝাড়াই বাবদ এলাকাভেদে প্রায় ১৮ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এই হিসাবে শুধু রোপণ ও কাটায় যান্ত্রিকীকরণ করা সম্ভব হলে ধানের উৎপাদন খরচ হেক্টরপ্রতি প্রায় ২০ হাজার টাকা কমে আসবে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop