২:৫৪ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ডা. মো. নাজমুল হক এর সাথে কিছুক্ষণ
ads
প্রকাশ : অগাস্ট ১২, ২০২৩ ৯:২১ অপরাহ্ন
বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদকপ্রাপ্ত ডা. মো. নাজমুল হক এর সাথে কিছুক্ষণ
প্রাণিসম্পদ

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কর্মদক্ষতা, মননশীলতা ও উদ্ভাবনী প্রয়াসকে উৎসাহিত করতে ২০১৬ সাল থেকে জনপ্রশাসন পদক দেওয়া শুরু করে সরকার। গত বছর থেকে এই পদকের নাম বদলে বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক করা হয়। দেশের জনপ্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য এই বছর ২৮ ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানকে ‘বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক ২০২৩’ দেয়া হয়েছে। গত ৩১ জুলাই ‘জাতীয় পাবলিক সার্ভিস দিবস’ উপলক্ষে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে মনোনীতদের হাতে পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । এবার ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’ শ্রেণিতে নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নাজমুল হক বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক পান। এগ্রিভিউ২৪.কম এর সম্পাদকের সাথে কথা হচ্ছিল ডা. মো. নাজমুল হক এর, পদক প্রাপ্তির অনুভূতি ও আনুষঙ্গিক বিষয় নিয়ে এই সাক্ষাতকারটি পাঠকের জন্য তোলে ধরা হলোঃ

 

এগ্রিভিউ২৪.কম : সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে আপনি জনপ্রশাসন পদক নিয়েছেন, আপনার অনুভূতি কেমন ছিল?

ডা. মো. নাজমুল হক : আলহামদুলিল্লাহ। আল্লাহর শুকরিয়া যে তাঁর রহমতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট থেকে জনপ্রশাসনের এই সর্বোচ্চ পদক “বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক” গ্রহণ করলাম। এই সম্মাননা ও স্বীকৃতি প্রদানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। এ অনুভূতি ব্যক্ত করার মতো ভাষা আমার জানা নাই। শুধু এতটুকু বলবো এ পাওয়া আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া।

এগ্রিভিউ২৪.কম : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে অবদানের জন্য আপনি এই রাষ্ট্রীয় পদক পেয়েছেন, আসলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তে কিভাবে অবদান রাখলেন?

ডা. মো. নাজমুল হক : আসলে আমার উদ্যোগটি ছিলো “মডেল লাইভস্টক সার্ভিস” যার ৪ টি মিশন ছিলোঃ ক) ভেটেরিনারি জরুরী বিভাগ স্থাপন করা, এর জন্য জরুরী সেবা ডেস্ক নির্মাণ করেছি; খ) ভেটেরিনারি হাসপাতালের সকল সেবা কাঠামো ও ইউনিট স্থাপন করে একটি পূর্ণ ভেটেরিনারি হাসপাতাল গড়ে তোলা, এর জন্য হাসপাতালে সীমানা প্রাচীর, গেইট, গ্যারেজ, বাইকস্ট্যান্ড এর পাশাপাশি ৭ টি সেবা ইউনিট নির্মাণ করেছি, যেমন: অপারেশন থিয়েটার, আলট্রাসনোগ্রাম চেম্বার, এনিমেল কেয়ার শেড, পেট এন্ড বার্ডস কেয়ার সেন্টার, স্যাম্পল কালেকশন চেম্বার, পোল্ট্রি ভ্যাক্সিনেশন চেম্বার, জরুরী বিভাগ। এর বাহিরে আরো কয়েকটি শাখা নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে; গ) ডিজিটাল প্রযুক্তি ও মিডিয়া ব্যবহার করে প্রাণিসম্পদ সেবা, প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া। এর জন্য নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল “লাইভস্টক ভিশন” প্রতিষ্ঠা করা, অনলাইন ভেটেরিনারি মেডিকেল সার্ভিস, অনলাইন পশুরহাট, অনলাইন খামার/হ্যাচারি/ফিডমিল নিবন্ধন ইত্যাদি সেবা চালু করা। ডিজিটাল আলট্রাসাউন্ড মেশিন ব্যবহার করে এনিমেল প্রেগন্যান্সি টেস্ট, মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক এর ব্যবহার ইত্যাদি এবং ঘ) প্রাণিসম্পদ জনসুশাসনমূলক কার্যাবলী অফিস ও মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা। এর অধিনে সেবা সহজীকরণে সেবার তালিকাসহ সেবা শাখা বিভাজন, জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল লালন, সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন, ই-গভ: ও ইনোভেশনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ, তথ্য অধিকার ও অভিযোগ প্রতিকারে ব্যবস্থাগ্রহণ, নিরাপদ প্রাণিজ আমিষ নিশ্চিতকরণ, প্রাণিজাত পন্যের মান পরীক্ষা, প্রাণিসম্পদ আইন অনুশাসন বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ যেমন: প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রোগ্রাম, কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাৎসরিক কর্মমূল্যায়ন, তাদের অফিসিয়াল স্মার্ট আইডি কার্ড প্রদান ইত্যাদি নানান কার্যক্রম বাস্তবায়ন। এই ৪ টি মিশন নিয়ে যদিও আমার উদ্যোগটি ছিলো সাধারণ প্রশাসন ও ব্যবস্থাপনা ক্যাটেগরিতে। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় যাচাই বাছাই করে ওভারঅল এটিকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্যাটাগরিতে মনোনয়ন দেয়।

 

এগ্রিভিউ২৪.কম : আমরা যতদূর জানি আপনি ২৪ ঘন্টাই সার্ভিস দিচ্ছেন, ২৪ ঘন্টা কিভাবে সার্ভিস দিচ্ছেন? দেশের ভেটেরিনারি হাসপাতাল গুলোয়ে কি আসলে ২৪ ঘন্টা সার্ভিস দেবার মত জনবল কিংবা সুযোগ সুবিধা আছে? জনবল কি সরকার থেকে দেওয়া নাকি নিজেই নিয়েছেন?

ডা. মো. নাজমুল হক : মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন-২০৪১ ও স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে স্মার্ট লাইভস্টক লাগবে। আর এর জন্য লাইভস্টক সেক্টর ও ভেটেরিনারি সেবাকে জরুরী পরিসেবার আওতাভুক্ত করা অত্যন্ত জরুরী। কেননা প্রাণীদের স্বাস্থ্য ও জীবনের নিরাপত্তার জন্য ২৪ ঘণ্টা সার্ভিসের বিকল্প নেই। তাদের জন্য যে কোন সময় জরুরী চিকিৎসা, অপারেশন, ভ্যাক্সিনেশন ইত্যাদির প্রয়োজন হয়। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রাণীদের প্রতি মমত্ববোধ ও ভালোবাসা থেকে বিনামূল্যে এ সেবা কার্যক্রম চালু করেছি। এবং এটি সরকারের সর্বোচ্চ মহলের নজরে এনেছি যে, ভেটেরিনারি সেবাকে জরুরী সেবার আওতাভুক্ত করে সারা বাংলাদেশে এটিকে যেন বাস্তবায়ন করা হয়। তবে বর্তমানে আমাদের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী ২৪ ঘণ্টা জরুরী সেবা নিশ্চিত করা খুবই কঠিন একটি কাজ এবং আমাদের জনবলের প্রচুর সঙ্কট রয়েছে। তথাপি আমি এটি বাস্তবায়ন করার জন্য হাসপাতাল ক্যাম্পাসে জরুরী বিভাগ ডেস্ক স্থাপন করেছি এবং ডক্টর স্টাফদের ডিউটি ভাগ করে দিয়েছি। এছাড়া একটি ৫ সদস্যের ইমারজেন্সি ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম গঠন করে তাদের কন্ট্যাক্ট নংসহ তালিকা জরুরী বিভাগে টানিয়ে দিয়েছি। যাতে যে কোন সেবাগ্রহীতা ছুটির সময় কিংবা রাতের বেলা যদি সেবা নিতে আসে, এবং তারা যদি ডেস্কে কোন কারণে কাউকে না পান, তাহলে এই মেডিকেল টিমের সাথে যোগাযোগ করলে দ্রুততম সময়ে এ টিমের সদস্যবৃন্দ জরুরী সেবা নিশ্চিত করবে। আর এই জরুরী সেবাকে সাসটেইনেবল ও দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করার জন্য বিজ্ঞ সরকারকে আমি ২ টি প্রস্তাবনা দিয়েছি। (১) বিদ্যমান অর্গানোগ্রাম সংশোধন করে ২৪ ঘণ্টা অফিস কাঠামো তৈরী করা এবং জনবলের চাহিদা পূরণ করা। (২) সেটি এই মুহুর্তে সম্ভব না হলে আপাতত “মডেল লাইভস্টক সার্ভিস” নামক একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া। যে প্রকল্পের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ডক্টর স্টাফ নেওয়া হবে জরুরী সেবা নিশ্চিত করতে এবং ভেটেরিনারি হাসপাতালের সকল সেবা কাঠামো এই প্রকল্পের মাধ্যমে নির্মাণ করা হবে।

 

এগ্রিভিউ২৪.কম : জরুরি বিভাগ আপনি চালু করেছেন, কি কি সুযোগ সুবিধা এখানে রয়েছে??

ডা. মো. নাজমুল হক : আমি বাংলাদেশে ১ম লাইভস্টক সেক্টরে উপজেলা পর্যায়ে জরুরী বিভাগ চালু করেছি। এই বিভাগের মাধ্যমে যে কোন সময় জরুরী চিকিৎসা, অপারেশন, ডেলিভারি, ভ্যাক্সিনেশন এবং কৃত্রিম প্রজনন সেবা দেওয়া হচ্ছে। এভাবে আমরা বিগত ১ বছরের অধিক সময় জরুরী সেবা রেজিস্টার এর তথ্য অনুযায়ী পঞ্চাশ হাজারের উপর প্রাণীকে ছুটির দিনে জরুরী সেবা প্রদান করেছি।

 

এগ্রিভিউ২৪.কম : সম্প্রতি ক্যাডার সার্ভিসে ১০ বছরে পা দিয়েছেন, এই বছরগুলো কেমন কেটেছে? আগামী ১০ বছরে প্রাণিসম্পদ কে কোথায় নিয়ে যেতে চান??

ডা. মো. নাজমুল হক : হ্যাঁ, ক্যাডার সার্ভিসে আমি ৯ বছর পূর্ণ করে ১০ম বছরে পা দিয়েছি। এই ৯ বছর ভেটেরিনারি সার্জন, সায়েন্টিফিক অফিসার এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার হিসেবে কাজ করেছি। খুবই আমেজিং ও উপভোগ্য ছিল এ জার্নি। পেয়েছি সকল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের স্নেহ সান্নিধ্য ও ভালোবাসা। জুনিয়রদের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা ও সম্মান। খামারি, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও মিডিয়া প্রতিনিধিদের অকুন্ঠ ভালবাসা। পেশার প্রতি নিবেদন থেকে ইতোপূর্বে সায়েন্টিফিক অফিসার পদে কর্মরত অবস্থায় ল্যাবকে দিয়েছি “ভেটেরিনারি ল্যাব এইড” নামক স্বতন্ত্র ম্যানুয়াল। আর সর্বশেষ ইউএলও পদে থেকে ড্রিম ইনিশিয়েটিভ ছিলো “মডেল লাইভস্টক সার্ভিস”। এটি আমার স্বপ্ন ধ্যান জ্ঞান। সেই স্বপ্নের বাস্তবায়ন ও স্বীকৃতি দিয়েছে মহামান্য সরকার ” বঙ্গবন্ধু জনপ্রশাসন পদক” প্রদানের মাধ্যমে। আগামী ১০ বছর এই মডেল নিয়ে কাজ করতে চাই এবং প্রাণিসম্পদ সেক্টরকে আধুনিক, স্মার্ট, স্টান্ডার্ড, কোয়ালিটি সম্পন্ন করতে চাই। গড়ে তুলতে চাই সারা বাংলাদেশে পূর্ণ ভেটেরিনারি হাসপাতাল।। দু’আ, সহযোগিতা ও সমর্থন চাই সকলের কাছে।।

 

এগ্রিভিউ২৪.কম : ধন্যবাদ, আপনার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করি ।

ডা. মো. নাজমুল হক : আপনাকেও ধন্যবাদ, জয় বাংলা ।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop