৪:১৮ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বরগুনায় হিমালয়ী গৃধিনী শকুন উদ্ধার
ads
প্রকাশ : জানুয়ারী ১৬, ২০২২ ২:১০ অপরাহ্ন
বরগুনায় হিমালয়ী গৃধিনী শকুন উদ্ধার
প্রাণ ও প্রকৃতি

বরগুনায় হিমালয়ী গৃধিনী প্রজাতির (Himalayan griffon) একটি অসুস্থ শকুনকে উদ্ধার করেছে বন বিভাগ।শকুনটিকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে বনে অবমুক্ত করা হবে। এটি একটি পরিযায়ী প্রজাতির শকুন; শীতকালে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে খাবারের সন্ধানে বাংলাদেশে এসে থাকে। এই সময় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এদের দেখা মেলে।

শনিবার বরগুনা সদর উপজেলার পাজরাভাঙা গ্রামের বাসিন্দারা শকুনটিকে দেখতে পেয়ে আটক করেন। পরে বন বিভাগকে খবর দেওয়া হলে তারা এসে শকুনটিকে উদ্ধার করেন।

স্থানীয়রা জানান, গত দুই দিন ধরে বরগুনা সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে একটি বৃহৎ আকার পাখি ঘুরে বেড়িয়েছিল। অনেকেই পাখিটিকে দেখে ভয় পেয়েছিলেন। এই পাখিটিই হলো শকুন।

ধারণা করা হচ্ছে খাদ্য সংকট অথবা পথ ভুলে শকুনটি লোকালয়ে এসেছিল। শনিবার সকালে বরগুনা সদর উপজেলার পাজরাভাঙা গ্রামে শকুনটিকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা ধাওয়া দিয়ে শকুনটিকে বন্দী করে।

পরবর্তিতে তারা বন বিভাগকে খবর দিলে বন বিভাগ এসে শকুনটিকে উদ্ধার করে। শকুনটি অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের চিকিৎসকদের কাছে হস্তান্তর করেন। চিকিৎসা শেষে বরগুনার তালতলী উপজেলার সখিনা সংরক্ষিত বনের টেংরাগিরি ইকোপার্কের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

বন বিভাগের বরগুনা সদর উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মতিউর রহমান বলেন, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে শকুনটিকে উদ্ধার করে আমরা নিয়ে আসি। শকুনটি কোন প্রজাতির নিশ্চিত হওয়া না গেলেও প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি বাংলা শকুন।

বরগুনা সদর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান বলেন, উদ্ধারকৃত শকুনটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে শকুনটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। তাই হয়তো বাঁচার তাগিদে লোকালয়ে এসেছিল। এখন শকুনটি মোটামুটি সুস্থ রয়েছে।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, সাধারণত এরা বট, পাকুড়, অশ্বত্থ, ডুমুর প্রভৃতি বিশালাকার গাছে লোকচক্ষুর অন্তরালে বাসা বাঁধে। এদের গলা, ঘাড় ও মাথায় কোনো পালক থাকে না। প্রশস্ত ডানায় ভর করে আকাশে ওড়ে। শকুন খুব একটা প্রয়োজন না হলে জীবন্ত প্রাণী শিকার করে খায় না। মৃত প্রাণীর মাংস খেয়ে এরা বেঁচে থাকে।

তিনি আরও বলেন, শকুনের নাম শুনে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। শকুন আমাদের পরিবেশের জন্য খুবই উপকারী একটি প্রাণী। সারাবিশে^ শকুন এখন একটি বিপন্ন প্রাণী। তাই আমাদের পরিবেশ ও প্রতিবেশের ভারসাম্য ঠিক রাখতে এই প্রাণীটিকে বাঁচিয়ে রাখা উচিত।

ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটি বাংলাদেশের কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বাংলাদেশের জন্য হিমালয়ী গৃধিনী একটি পরিযায়ী শকুন। এদেরকে শীতকালে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আইইউসিএন এর লাল তালিকা অনুযায়ী এটি “প্রায় সংকটাপন্ন” একটি প্রাণী। বাংলাদেশে এ পর্যন্ত ৭ জাতের শকুন দেখা গেছে তার মধ্যে দুটি ছাড়া বাকি সবগুলোই হুমকির সম্মুখীন।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন অগ্রগামীর সভাপতি প্রভাতী মিত্র বলেন, পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য এবং বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির বন্ধু হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে।

‘শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানোর পাশাপাশি মানবজাতি অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু থেকে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। তাই সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই পাখিটিকে রক্ষা আমাদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত।’

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop