১২:০৭ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে ভোলার চাষিদের
ads
প্রকাশ : জুলাই ৮, ২০২১ ১২:০৭ পূর্বাহ্ন
সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে ভোলার চাষিদের
কৃষি বিভাগ

পতিত জমি ব্যবহার করে ভোলা জেলায় সার্জর পদ্ধতিতে সবজি চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছরে ৭ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে এ পদ্ধতিতে সবজি ও মাছ চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে দুই হাজার ৭’শ ৪৩ হেক্টর জমি বেশি। ফলে সবজির পাশাপাশি মাছ চাষ করে জমির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করছেন কৃষকরা।

জানা যায়, এ পদ্ধতিতে রাসয়নিক সারমুক্ত নিরাপদ প্রচুর সবজি উৎপাদন করা সম্ভব। এসব সবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, শসা, বরবটি, করোল্লা, মিষ্টি কুমর রেখা, দুন্দল ইত্যাদি। এছাড়া মাছের মধ্যে স্বল্প সময়ে বড় হওয়া গ্লাস কার্প, রুই, মৃগেল, তেলাপিয়া, পাঙ্গাস, চাইনিজ পুটি, স্বরপুটি রয়েছে।

প্রতি খণ্ডকালীন ৩-৪ মাস পর পর এখানে সবজির মৌসুম হিসেবে চাষ হয়। একেকটি মৌসুমে প্রায় এক লাখ ৪৫ হাজার মেট্রিকটন সবজি উৎপাদন হয়। যার বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা।

এছাড়া বেশ কিছু ফল বাগান সার্জন পদ্ধতির আওতায় আনা হয়েছে। এতে করে বর্ষার প্রায় ৬ মাস পতিত জমিতে মাছ চাষে করে কৃষকরা বাড়তি লাভবান হচ্ছে। তাই অনেকেই এ পদ্ধতির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছে।

চরফ্যাসন উপজেলার হাজারিগঞ্জ ইউনিয়নের চর ফকিরা গ্রামে ৪০ জন কৃষকের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল ৭০ একর জমিতে সম্মিলিতভাবে সার্জন পদ্ধতিতে সবজির চাষ করছেন। এ দলের কৃষক মো: সোলায়মান, মো: কামাল, আইয়ুব আলী, লোকমান, মফিজুল ইসলাম জানান, তারা ২০১৬ সালে মাত্র ৯ একর জমিতে সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষ শুরু করেন। যা বর্তমানে ৭০ একর জমিতে পৌঁছেছে। তাদের একর প্রতি সবজি চাষে খরচ হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। আর লাভ হয় ২ লাখ ৩০ থেকে আড়াই লাখ টাকা। আর মাছ চাষে একর প্রতি আয় হয় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

এ দলের অপর কৃষক মো: জসিম উদ্দিন জানান, বর্ষাকালের এ ৬ মাসে ৫০ গ্রাম ওজনের গ্লাস কার্প মাছ ছাড়লে তা ২ কেজি পর্যন্ত ওজন হয়। রুই ও মৃগেল ৫০ গ্রাম ছাড়লে সাড়ে ৪’শ গ্রাম হয়। এছাড়া তেলাপিয়া ও পুটি মাছ বিক্রির উপযোগী হয় ৬ মাসে। এসব জলাশয়ে মাছের সাধারণত খাবার দিতে হয়না। বিশেষ সবজি বা ঘাসের পচা অংশ, শামুক, ছোট পোকা ইত্যাদি প্রাকৃতিক খাবারই এরা বেশি খায়। বৃষ্টির নতুন পানিও মাছকে বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।

কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার ৭ উপজেলার মধ্যে সবচে বেশি সার্জন পদ্ধতি অনুসরণ হচ্ছে চরফ্যাসন উপজেলায়। এ উপজেলায় ৬ হাজার হেক্টর জমি এ পদ্ধতির আওতায় এসেছে। একইভাবে সদর উপজেলায় ১৪৩ হেক্টর, দৌলতখানে ১৫০, বোরহানউদ্দিনে ৩৫০, লালমোহনে ৫০০, তজুমদ্দিনে ৭৫ ও মনপুরায় ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: রিয়াজউদ্দিন জানান, ভোলায় সাধারণত জোয়ারে পানি উঠে এবং ভাটায় নেমে যায়। যাকে বলে জোয়ার ভাটার এলাকা। আর সবজি ফসল স্থায়ীভাবে পানি সহ্য করতে পারেনা। এজন্য সার্জনের মাধ্যমে সবজি লাগানোর স্থান উঁচু করে নেওয়া হয়। পানি বেশি বা বৃষ্টি হলেও গাছের গোড়ায় পানি জমেনা। সার্জনে ১২ মাস সবজি আবাদ করতে কোন সমস্যা হয়না। ধান বা অনান্য ফসলের চেয়ে সবজিতে লাভ বেশি। সদর উপজেলার মধ্যে শীবপুর ইউনিয়ন, রাজাপুর, চরসামাইয়া ও ভেলুমিয়া ইউনিয়নে এ পদ্ধতি বেশি হয় বলে জানান তিনি।

লালমোহন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এফ এম শাহাবুদ্দিন জানান, তার উপজেলায় সার্জন পদ্ধতিতে সবজি চাষে কৃষকদের আগ্রহী করা হচ্ছে। চলতি বছর বেশ কিছু আম ও মাল্টা বাগান সার্জনের আওতায় আনা হয়েছে। ্এতে করে ফলের পাশাপাশি মাছ ও সবজি বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আবু মো: এনায়েতউল্লাহ জানান, সার্জন পদ্ধতি কৃষি জমির অসাধারণ ব্যবহার। বিশেষ করে শীতের সময় সবজির বেশি দাম না পাওয়া গেলেও বর্ষার সময়টাতে সবজির ভালো দাম পাওয়া যায়। সামনের কোরবানীর ঈদে প্রচুর শসার চাহিদা থাকবে। মাছকে তেমন খাবার দিতে হয়না, সবজিতেও রাসয়নিক সার দিতে হয়না। তাই খরচ কম হয়। প্রায় ১০ হাজার পরিবার সার্জনের সাথে জড়িত বলে তিনি জানান।

এগ্রিভিউ/এসএমএ

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop