৬:৫৭ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • গোপালগঞ্জে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ মেট্রিক টন
ads
প্রকাশ : অগাস্ট ১১, ২০২২ ২:৩৯ অপরাহ্ন
গোপালগঞ্জে মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ মেট্রিক টন
মৎস্য

গোপালগঞ্জে ২০৪১ সালে মধ্যে ১ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে মৎস্য অধিদপ্তরে আওতাধীন জেলা মৎস্য অফিস।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে জেলা মৎস্য অফিস এ  উদ্যোগ নিয়েছে।

জলাভূমি বেষ্টিত  গোপালগঞ্জ জেলায় প্রতি বছরই জেলা মৎস্য অফিসরে তত্ত্বাবধানে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এ জেলায় উচ্চ ফলনশীল মাছ চাষে খামারীদের উদ্বুদ্ধ করছে জেলা মৎস্য অফিস। উচ্চ ফলনশীল জাতের কার্প, কই, শিং, পাবদা ও গুলশা ট্যাংরা চাষ করে খামারীরা লাভবান হচ্ছেন। সফল খামরীদের দেখাদেখি এ জেলায় মাছ চাষে ঝুঁকছেন নতুন নতুন খামারী।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, গোপালগঞ্জ জেলার ৫ উপজেলায়  ২২৯ টি বিল ও জলাভূমি, ১০ টি নদী, ৬টি বাওড় ও ৩৩৪ টি খাল রয়েছে।

এসব উৎস হতে প্রতি বছর ১০ হাজার মেট্রিক টন পুঁটি, ট্যাংরা, শৈল, মাগুর, কই, শিং, টাকি, খলিশা, গজার, রুই, কাতলা, বোয়াল, আইড়, চিংড়ি, ইলিশ, নান্দেলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হয়। ১৯ হাজার ৩৫০টি বেসরকারি পুকুর ও ১৩২টি সরকারী খাস পুকুরে ১৭ হাজার ১৫৮ জন খামারী  ৩১ হাজার ২ শ’ মেট্রিক টন রুই, কাতলা, মৃগেল, পাঙ্গাস, তেলাপিয়া,গ্রাসকার্প, কই, শিং, পাবদা,গুলশা ট্যাংরা, উৎপাদন করেন। এছাড়া ২ হাজার ৩৭৫ চিংড়ি ঘেরে ১০০০ খামারী ১ হাজার ৭শ’ ১৩ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন করেন। সব মিলিয়ে জেলায় ৪১ হাজার ৯ শ’১৩ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। প্রতি কেজি মাছ গড়ে ২ শ’ টাকা দরে খামারী ও মৎস্যজীবীরা বিক্রি করেন। সে হিসেবে এ জেলায় ৮ শ’ ৩৮ কোটি ২৬ লাখ টাকার মাছ উৎপাদিত হয়।

জেলা মৎস্য  কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, এ জেলায় মাছ চাষের অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। টুঙ্গিপাড়া, কোটালীপাড়া, সদর, মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলার বিশাল এলাকা বছরের ৭ মাস জলমগ্ন থাকে। ওইসব এলাকায় মাছ চাষ বৃদ্ধি করে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে মাছের উৎপাদন ১ লাখ মেট্রিক টনে উন্নিত করব। এতে মৎস খামরীর আয় দ্বিগুন হবে। সেই সাথে আমরা বিদেশে মাছ রপ্তানী করব। এছাড়া মাছের প্রক্রিয়াজাত খাবর প্রস্তুত করার পরিকল্পনা মৎস্য অধিদপ্তর গ্রহণ করেছে।

মাছের প্রক্রিয়াজাত খাবার প্রস্তুত ও বিপণনের কাজে এখানে বিশাল জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে গোপালগঞ্জ মৎস্য কেন্দ্রিক অর্থনীতি জোনে পরিণত হবে।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার উলপুর ইউনিয়নের তেতুলিয়া গ্রামের খামারী ইকরাম আলী সিকদার (৫৮) বলেন,  ২ একরের ২ টি পুকুরে ২০২২ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত কই মাছ চাষে ৪ লাখ টাকা লাভ করেছি। বাকী ৫ মাসে আরো কই, শিং ও শুলশা ট্যাংরা থেকে আরো ৬ লাখ টাকা লাভ হবে। একই পুকুরে বছরে ৩ বার কই মাছ চাষ করা যায়। সেই সাথে ২ বার শিং মাছ পুকুর থেকে তোলা যায়।  গত বছর ৫ একরের ৫টি পুকুরে কই, শিং ও গুলশা ট্যাংরার চাষ করে ১৬ লাখ টাকা আয় করেছিলাম। কার্প জাতীয় মাছের তুলনায় কই, শিং ও গুলশা ট্যাংরা চাষে  লাভ বেশি হয়। উৎপাদন প্রায় ৩গুন বেশি পাওয়া যায়।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার করপাড়া গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী মোঃ ইয়াদুল সিকদার (৩৫) বলেন, আমি নিজে মাছ চাষ করি। আবার বিভিন্ন পুকুর থেকে মাছ ধরে হাট-বাজারে বিক্রি করি। আমাদের এলাকার মিঠা পানির সব মাছের  স্বাদ খুবই ভালো। তাই ফরিদপুরের ভাঙ্গা, ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলার হাট বাজারে এ মাছের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ মাছ প্রতি কেজি ১০ থেকে ২০ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়। এ  মাছ বিক্রি করে আমরাও লাভের টাকা ঘরে তুলতে পারছি।

তেতুলিয়া গ্রামের মৎস্য চাষি আব্দুর রহমান বিশ্বাস (৬০) বলেন, আগে কার্প জাতীয় মাছ চাষ করতাম। এখন মৎস্য অধিদপ্তরের পরামর্শে আমরা উচ্চ ফলনশীল জাতের কই, শিং, পাবদা ও ট্যাংরার চাষ করছি। এতে কার্প জাতীয় মাছের তুলনায় ৩ গুন বেশি লাভ করতে পারছি। বছরে ৩ বার পুকুর থেকে কই মাছ বিক্রি করছি। বছরে ২ বার শিং , গুলশা ট্যাংরা ও পাবদা বিক্রি করছি। এ জাতীয় মাছ চাষাবাদে সারবছরই হাতে টাকা আসতে থাকে।

নতুন উদ্যোক্তা সদর উপজেলার উলপুর গ্রামের সাদেক আহমেদ (৩৫) বলেন, আমি দেখছি তেতুলিয়া গ্রামের ইকরাম আলী সিকদার গত ২ বছর ধরে কই, শিং, পাবদা ও ট্যাংরা চাষে ভালো লাভবান হয়েছেন। তাই আমি তার দেখাদেখি আগামী বছর আমার ৫ একরের নতুন ঘেরে এ জাতীয় মাছের চাষ করব। আশা করছি এখান থেকে আমিও লাভের মোটা অংকের টাকা ঘরে তুলতে সক্ষম হব।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বৈরাগী বলেন, আমরা মৎস্য খামরীদের ট্রেনিং দিচ্ছি। সেই সাথে মৎস্য চাষের পরামর্শ প্রদান করছি। খামারে গিয়ে মাছের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত দিচ্ছি। এছাড়া তাদের বিভিন্ন উপকরণ দেয়া হচ্ছে।

সমবায় সমিতির মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে সরকারি জলাশয়ে মাছ চাষের সাথে সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। জলা ভূমির সর্বোচ্চ ব্যবহারের মাধ্যমে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধি করে লক্ষ্যমাত্রা অর্জণে আমরা সচেষ্ট রয়েছি।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop