২:৫৬ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • মহিষের দইয়ে মিলেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
ads
প্রকাশ : জানুয়ারী ৯, ২০২২ ২:০৭ অপরাহ্ন
মহিষের দইয়ে মিলেছে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া
প্রাণিসম্পদ

দই খেতে কে না ভালোবাসেন। আর সেই দই যদি হয় মহিষের, তাহলে তো কথাই নেই কিন্তু যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে দই বানানোর ফলে এই মহিষের দইয়ে মিলেছে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর উপাদান।

আর্ন্তজাতিক গবেষণা জার্নাল নেচার রিসার্চ এর ‘সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এমন তথ্য।

গবেষণায় দেখা গেছে, মহিষের দইয়ে ক্যান্ডিডা, আয়োডোফেনাস, এপিওট্রাইকাম ও ট্রাইকোস্পোরন নামে ছত্রাকের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। যা মানবদেহে চুলকানি ও চামড়ায় সংক্রমণ, হজমে সমস্যা এবং রক্তে মারাত্মক বিষক্রিয়ার জন্য দায়ী।

এছাড়াও মহিষের দইয়ে ল্যাক্টোব্যাসিলাস এবং অ্যান্টারোব্যাকটার, অ্যাসিনেটোব্যাক্টার, শিগেলা, ক্লেবসিয়েলা, সাইট্রোব্যাক্টার ও অ্যারোমোনাস প্রজাতির অণুজীব পাওয়া গেছে। যা মানবদেহের বিভিন্ন রোগ যেমন: পাকস্থলীর সংক্রমণ, ডায়রিয়া ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেওয়া ইত্যাদির জন্য দায়ী বলে মনে করছেন গবেষকরা।

দেশে উৎপাদিত দইয়ের মান কেমন, তা যাচাই করাই ছিল এ গবেষণার লক্ষ্য। গবেষণার নমুনা বিশ্লেষণ করে প্রাপ্ত তথ্য আরও নিশ্চিত হতে অস্ট্রেলিয়ায় ব্যারি মার্শাল গবেষণাগারের গবেষকরাও পুনঃনিরীক্ষা করেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বিসিএসআইআর, বন গবেষণাগার, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অস্ট্রেলিয়ার কার্টীন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা যৌথভাবে এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, মানিকগঞ্জ, রংপুর, মুন্সিগঞ্জ, বগুড়া ও কক্সবাজারের বিভিন্ন স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পর পর তিন মাস তিনটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে সংগ্রহ করা হয় বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসব দই। পরে পিসিআর, জেল ইলেকট্রোফোরেসিস, অ্যামপ্লিকন সিকোয়েন্সিং (সিক্সটিন এস ও আইটিএস), অ্যাটোমিক এবসর্পশন, স্পেকট্রোফটোমেট্রি পদ্ধতিতে পরীক্ষা-নিরীক্ষা  করা হয়।

এ গবেষণায় আরও দেখা যায়, পুষ্টিগুণের দিক থেকে টক দই অনেক বেশি এগিয়ে। টক দইয়ের সবগুলো ব্র্যান্ডে উপকারী খনিজ যেমন: সোডিয়াম, পটাশিয়াম এবং ক্যালসিয়ামের পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে মিষ্টি দইয়ের তুলনায়, যা দ্বিগুণেরও বেশি। এছাড়া মানবদেহের জন্য উপকারী উপাদান জিংকের পর্যাপ্ত পরিমাণ দেশে উৎপাদিত ৭০ শতাংশ দইয়ে নেই বলে গবেষণায় উঠে আসে।

২০১৯ এর জুলাই থেকে ২০২১ এর আগষ্ট পর্যন্ত চলা এ গবেষণায় আরও দেখা যায়, টক দইয়ের তুলনায় মিষ্টি দইয়ে উপকারী অণুজীবের পরিমাণ কম। এর পেছনে অতিরিক্ত চিনি বা অন্যান্য দ্রব্য মেশানো একটি কারণ হতে পারে বলে মনে করেন গবেষকেরা।

অন্যদিকে, দেশে উৎপাদিত পাঁচটি ব্রান্ডের দইয়ে কপারের উপস্থিতি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় পাওয়া গেলেও তা ক্ষতিকারক মাত্রায় নেই- বলছেন গবেষকরা।

গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক এস এম রফিকুল ইসলাম বলেন, বাজারে পাওয়া যায় এমন টক এবং মিষ্টি দইয়ের ব্র্যান্ডগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক, আর্সেনিক বা ভারী ধাতব পদার্থের উপস্থিতি না থাকা একটি স্বস্তির খবর। এটি  নিরাপদ খাদ্য হিসেবে দইয়ের গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মহিষের দইয়ে বিভিন্ন অণুজীবের উপস্থিতি নির্ণয়ের জন্য বিশ্লেষণ করা হয়। দেশে মহিষের দইয়ের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরতে আরও গবেষণার পরিকল্পনা আছে।

এই গবেষণায় সহ গবেষক হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক আদনান মান্নান এবং অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার মার্শাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজের গবেষক আলফ্রেড চ্যান এবং কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক মোহাম্মদ জাভেদ ফয়সাল।

গবেষক দলে ডেইরি বিশেষজ্ঞ হিসেবে ছিলেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক জুনায়েদ সিদ্দিকি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. নাজমুল হক।

এছাড়াও গবেষক দলে ছিলেন বাংলাদেশ ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট চট্টগ্রামের গবেষক মোহাম্মদ জাকির হোসেন, বিসিএসআইআর চট্টগ্রামের বিজ্ঞানী গোলাম মোস্তফা ও আবু বক্কর সিদ্দিক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আফসানা ইয়াসমিন তানজিনা ও মেহেদী হাসান রুমি।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop