৪:২৯ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বাতাসি মাছের কৃত্রিম প্রজনন উদ্ভাবন বিএফআরআই‘র বিজ্ঞানীদের
ads
প্রকাশ : মে ২৪, ২০২১ ৫:২৯ অপরাহ্ন
বাতাসি মাছের কৃত্রিম প্রজনন উদ্ভাবন বিএফআরআই‘র বিজ্ঞানীদের
বিজ্ঞান ও গবেষণা

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) বিজ্ঞানীরা এবার করোনার মধ্যে কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে বিলুপ্তপ্রায় বাতাসি মাছের পোনা উৎপাদনে সফল হয়েছেন। এই সাফল্য বিলুপ্তপ্রায় বাতাসি মাছ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছেন তারা।

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ময়মনসিংহ সদর দপ্তর থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

ইনস্টিটিউট সূত্র জানায়, পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা কারণে এ মাছ জলাশয়ে এখন আর তেমন পাওয়া যায় না। ক্রমান্বয়ে মাছটি বিপন্নের তালিকায় চলে গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বিলুপ্তপ্রায় বাতাসি মাছ পুনরুদ্ধারে গবেষণার মাধ্যমে ইনস্টিটিউট থেকে এর প্রজনন কৌশল উদ্ভাবন করা হয়েছে। ফলে মাছটি এখন চাষ করা সম্ভব হবে।

বাতাসি মাছের বৈজ্ঞানিক নাম Notropis Atherinoides| এই প্রজাতির মাছ বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং মিয়ানমারে পাওয়া যায়। সুস্বাদু এ মাছটি বর্তমানে বাজারে খুব কম দেখা যায়। এটি দৈর্ঘ্যে সর্বোচ্চ ১৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হয়ে থাকে। এর দেহ চ্যাপ্টা ও ওপরের চোয়াল নিচের চোয়ালের চেয়ে কিছুটা লম্বা। বিএফআরআই সূত্রে জানা গেছে, তারা ২৫ প্রজাতির বিলুপ্তপ্রায় ও দেশি মাছের প্রজনন ও চাষাবাদ কৌশল ইতোমধ্যে উদ্ভাবন করেছে।

এর সর্বশেষ সংযোজন হলো বাতাসি মাছ। দীর্ঘ গবেষণার মাধ্যমে গত ১৯ মে এই সফলতা অর্জিত হয়। বগুড়া জেলার সান্তাহারে অবস্থিত ইনস্টিটিউটের প্লাবন ভূমি উপকেন্দ্রে এই সফলতা অর্জিত হয়। গবেষক দলে ছিলেন প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. ডেবিড রিন্টু দাস, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান ও বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মালিহা খানম।

বগুড়ার সান্তাহার প্লাবনভূমি উপকেন্দ্র থেকে যমুনা ও আত্রাই নদীসহ বিভিন্ন উৎস থেকে বাতাসি মাছের পোনা সংগ্রহ করে প্রথমে পুকুরে তা নিবিড়ভাবে প্রতিপালন করা হয়। ওই সময় বাতাসি মাছের খাদ্যাভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে সে অনুযায়ী খাবার সরবরাহ করা হয়।

গবেষকরা একটি পরিপকস্ফ বাতাসি মাছের খাদ্যনালিতে শতকরা ৮৬ ভাগ প্লাংটন ও ১৪ ভাগ অন্যান্য খাদ্যবস্তুর উপস্থিতি লক্ষ্য করেন। তাছাড়া বছরব্যাপী জিএসআই ও হিস্টোলজি পরীক্ষণের মাধ্যমে বাতাসি মাছের সর্বোচ্চ প্রজনন মৌসুম নির্ধারণ করা হয় মে-জুলাই মাস। এর ডিম ধারণ ক্ষমতা আকার ভেদে হচ্ছে ১২০০-২৫০০টি। একটি পরিপকস্ফ স্ত্রী বাতাসি মাছ ৪ থেকে ৬ গ্রাম ওজনের হলেই প্রজনন উপযোগী হয়।

গবেষণার আওতায় চলতি মে মাসে বাতাসি মাছকে হরমোন ইনজেকশন দেওয়া হয়। হরমোন প্রয়োগের ১২-১৫ ঘণ্টা পর বাতাসি মাছ ডিম ছাড়ে এবং ২৩-২৫ ঘণ্টা পরে নিষিক্ত ডিম থেকে রেণু পোনা উৎপাদিত হয়। ডিম নিষিক্তের হার ছিল শতকরা প্রায় ৭৩ ভাগ। উৎপাদিত রেণু বর্তমানে প্লাবনভূমি উপকেন্দ্রের হ্যাচারিতে প্রতিপালন করা হচ্ছে।

গবেষক দলের প্রধান ড. ডেভিড রিন্টু দাস জানান, প্রতি ১০০ গ্রাম খাবার উপযোগী বাতাসি মাছে পটাশিয়াম ৬১০ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪০০ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেশিয়াম ২০০ মিলিগ্রাম, জিঙ্ক ১৪.৪ মিলিগ্রাম, আয়রন ৩৩ মিলিগ্রাম এবং ম্যাঙ্গানিজ ২০০ মিলি গ্রাম রয়েছে। যা অন্যান্য দেশি ছোট মাছের তুলনায় অনেক বেশি। জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। করোনাকালের বাতাসি মাছ খেতে বিজ্ঞানীরা পরামর্শ দেন।

বিএফআরআই মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ জানান, বিলুপ্তপ্রায় মাছ পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যে ইনস্টিটিউটের গবেষণা কার্যক্রম সম্প্রতি জোরদার করা হয়েছে। ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারের ফলে গত ১২ বছরে পুকুরে দেশি মাছের উৎপাদন বেড়েছে প্রায় চার গুণ (২ দশমিক ৫ লাখ মেট্রিক টন)। পর্যায়ক্রমে সব দেশি ছোট মাছ প্রজনন ও চাষাবাদের মাধ্যমে মানুষের পাতে ফিরিয়ে আনা হবে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop