৬:৩৫ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • জাতীয় স্বার্থে জরুরী ভিত্তিতে বাংলাদেশে ভেনামী চাষ উন্মুক্ত করা প্রয়োজন
ads
প্রকাশ : অগাস্ট ১০, ২০২১ ২:২৮ অপরাহ্ন
জাতীয় স্বার্থে জরুরী ভিত্তিতে বাংলাদেশে ভেনামী চাষ উন্মুক্ত করা প্রয়োজন
মতামত-ফিচার

জানতে পারলাম মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের দু‘একজন গবেষক এখনো দেশে ভেনামী চিংড়ি চাষের বিরোধিতা করছে। তাদের সাথে এ বিষয়ে একটা কনফারেন্স করতে চাই। জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার নিকট বিজ্ঞান পরাস্ত হলে দেশে উন্নয়ন হয় না।

চিংড়ি হ্যাচারি ও চাষ সেক্টরে দেশ-বিদেশে ৪০ বছর চিংড়ি বিষয়ে কাজের অভিজ্ঞতা ও প্রাপ্ত তথ্যাদি থেকে জানতে পারি, ২০১৯ সালে সারা বিশ্বে ১.৬ মিলিয়ন এস.পি.এফ লি. ভেনামী চিংড়ির ব্রুড বিপণন হয়েছে। এ ব্রুডের বাজার মুল্য ছিল ৮৯ মিলিয়ন ডলার। ১.৬ মিলিয়ন ব্রুডের প্রধান ক্রেতা ছিল চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া এবং অপেক্ষাকৃত কম পরিমাণের ক্রেতা ছিল মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা ও তাইওয়ান।

তাছাড়া, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ ও আমেরিকাও এস. পি. এফ ব্রুড ক্রয় করেছে। ১.৬ মিলিয়ন ব্রুডের অতিরিক্ত ০.২৪ মিলিয়ন ব্রুড ভারতসহ কতিপয় দেশ নিজ দেশে উৎপাদন করেছে। এশিয়ার বিভিন্ন দেশে ও মধ্যপ্রাচ্যের কতিপয় দেশে এস.পি.এফ. ব্রুড চিংড়ির ব্রুড উৎপাদন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ভারতে ভেনামী চিংড়ির হ্যাচারি ও পোনা উৎপাদন:
২০১৯ সালে ভারত হাওয়াই থেকে ২,৩৩, ৪২৫ টি এস. পি এফ. লি. ভেনামী চিংড়ির ব্রুড আমদানি করেছে। ২০১৮ সালে ভারত ২,৫৪,২৭০ টি ব্রুড আমদানি করেছিল।

মুহুর্তে ভারতের ১৪৯ টি হ্যাচারি এস.পি.এফ ভেনামী চিংড়ির ব্রুড আমদানি করছে। আগস্ট-২০ এ তারা ২৩,৪৯০ টি ব্রুড আমদানি করে। ভারতের বর্তমান বাৎসরিক এস.পি.এফ ব্রুড স্টকের চাহিদা ২,৬০,০০ এবং এ চাহিদা আগামী ২/৩ বছরে ৪,৫০,০০০ উন্নীত হবে ধারণা করা হচ্ছে।

২০১৯ সালে ভারতের ৩১১ টি হ্যাচারি এস. পি. এফ. ব্রুড আমদানির জন্য নিবন্ধিত ছিল। তন্মধ্যে, ১৪০ টি হ্যাচারি ব্রুড আমদানি করে এস.পি.এফ.পোনা উৎপাদন করে। ভারতের “ভাইসাকি কোম্পানি” সর্বাধিক ১৫ হাজার ব্রুড আমদানি করে এবং “বি.এম.আর.গ্রুপ” আমদানি করে ১৩ হাজার। বি.এম.আর. গ্রুপ নিজস্ব বি.এম.সিতে ২০১৯ সালে প্রায় ২৫ হাজার ব্রুড উৎপাদন করে। বি.এম.আর. গ্রুপের বাৎসরিক ৮০ হাজার ব্রুড উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে। বি.এম.আর. গ্রুপ আগামীতে ভারতের বিভিন্ন হ্যাচারিতে এস.পি. এফ ব্রুডের মুখ্য সরবরাহকারী হিসেবে কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ভারতের আমদানি নির্ভরশীলতা অনেক কমে যাবে।

ভারতের “সপ্তগিরি গ্রুপ” ২০১৯ সালে ১০ হাজারের অধিক এস.পি.এফ ব্রুড আমদানি করেছে। সিপি, ভারত ২০১৯ সালে মোট ৮,৮০০ এস.পি. এফ ব্রুড নিজস্ব হ্যাচারিতে ব্যবহার করছে। এর মধ্যে ৩,২০০ আমদানি করেছে এবং ৫,৬০০ রাজীব গান্ধী সেন্টার ফর এ্যাকুয়াকালচার (RGCA),চেন্নাই থেকে ক্রয় করেছে।

ভারতে ২০১৯ সালে ৮,০৪,০০০ টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়েছে। আগামী ২/৩ বছরের মধ্যে ভারত ১০ লক্ষ টন চিংড়ি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছে। বাংলাদেশের চিংড়ি রপ্তানি ৩০- ৪০ হাজার টনে সীমাবদ্ধ।

বাংলাদেশে ভেনামী চিংড়ির পোনা উৎপাদন ও চাষ:
এশিয়ায় ভেনামী চিংড়ি চাষ আরম্ভের ২২ বছর পর ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে বাংলাদেশে ভেনামী চিংড়ির পরীক্ষামূলক চাষ আরম্ভ হয়। প্রাপ্ত তথ্য মোতাবেক ফলাফল সন্তোষজনক। তাই এ মূহুর্তে মিটিং-সিটিংয়ের মাধ্যমে সময় নষ্ট না করে অনতিবিলম্বে চাষিদের ভেনামী চিংড়ি চাষ আরম্ভে করার বিষয়টি উন্মুক্ত করে দেয়া দরকার। সাথে সাথে অবকাঠামো ও এস.পি.এফ বিষয়ে সক্ষমতা থাকা আগ্রহী হ্যাচারি কতৃক এস.পি.এফ. ব্রুড আমদানি করে পোনা উৎপাদনের অনুমতি দিতে হবে। বহু আগ্রহী উদ্যোক্তা ভেনামী চিংড়ি চাষ করতে আগ্রহী।

বহু মানুষ চাষের অনুমোদনের জন্য আবেদন করলেও আবেদন কর্তৃপক্ষের ফাইলে বন্দী আছে। চাষের অনুমোদন ও পোনার দুষ্প্রাপ্যতা চাষ আরম্ভ করার প্রধান অন্তরায়। হ্যাচারিতে উৎপাদন আরম্ভ না হওয়া পর্যন্ত সময়ে এস.পি.এফ পোনা আমদানির সহজ সুযোগ করে দিতে হবে। পোনা ও ব্রুড আমদানির সহজ ও হয়রানি মুক্ত করার জন্য স্থানীয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে আমদানি অনুমোদনের ক্ষমতা দিতে হবে।

জানতে পারলাম মৎস্য গবেষণা ইনিস্টিউটের দূএকজন গবেষক এখনো দেশে ভেনামী চিংড়ি চাষের বিরোধিতা করছে। তাদের সাথে এ বিষয়ে একটা কনফারেন্স করতে চাই। অজ্ঞানীর নিকট বিজ্ঞান পরাস্ত হলে দেশে উন্নয়ন হয় না।

বাংলাদেশে এ্যাকুয়েটিক কোয়ারেনটাইন কেন্দ্র স্থাপিত না হওয়া পর্যন্ত রপ্তানিকারক দেশের স্বীকৃত ল্যাবের জীবানু বিষয়ক সনদের মাধ্যমেই এস. পি.এফ পোনা ও ব্রুড আমাদানি করার অনুমোদন দিতে হবে।

বাংলাদেশে এস. পি.এফ পোনা উৎপাদনের সঠিকতা পর্যবেক্ষণ, তদারকি এবং এস. পি. এফ হ্যাচারি সম্প্রসারণ, এ্যাকুয়েটিক কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্র স্থাপন, প্যাথোলজিক্যাল ল্যাব স্থাপন, পিউর ফাইটোপ্লাংটন চাষের ইনডোর ল্যাব স্থাপন, এস.পি.এফ জীবিত খাদ্য উৎপাদন ইত্যাদি বিষয়ে মৎস্য অধিদপ্তর কতৃক জরুরী ভিত্তিতে পদক্ষেপ নিতে হবে।

উন্নত পদ্ধতি এবং অর্ধ নিবিড় ও নিবিড় পদ্ধতির চিংড়ি চাষ সম্প্রসারিত চাষ না হলে এস. পি. এফ পোনার চাহিদা সৃষ্টি হবে না এবং উৎপাদনও বাড়বে না। তাই, উন্নত পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষের জন্য সম্প্রসারণ কাজ এবং চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ প্রাপ্তির ব্যবস্থা করতেই হবে।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশে চিংড়ি উৎপাদন বাড়ছে; আর বাংলাদেশে তা প্রতি বছর কমছে। লজ্জার বিষয় হল বিরূপ পরিবেশের মধ্যপ্রাচ্যের কতিপয় দেশ বাংলাদেশ থেকে অধিক চিংড়ি উৎপাদন করছে।

লেখক:এম কবির আহমেদ
কনসালটেন্ট, হালদা ফিশারিজ লিঃ
শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop