৭:০৮ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • সাপের খামার যেন এখন এক দুঃস্বপ্ন তার
ads
প্রকাশ : জুন ৭, ২০২২ ১০:৫৬ পূর্বাহ্ন
সাপের খামার যেন এখন এক দুঃস্বপ্ন তার
পাঁচমিশালি

পরিকল্পনা ছিলো সরকারি অনুমোদন পেলে সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে দেশসেরা উদ্যোক্তা হবেন। কিন্তু রাজ্জাকের সেই স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। ২০০০ সালে নিজ বসত বাড়ির পাশে তৈরি করেন বিষধর সাপের খামার পটুয়াখালী সদর উপজেলার মাদারবুনিয়া ইউনিয়নের নন্দিপাড়া এলাকার বাসিন্দা রাজ্জাক বিশ্বাস।

সম্প্রতি সাপের কামড়ে তার খামারের এক কর্মচারীর মৃত্যুর পর খামারটি বন্ধ করতে উদ্যোগ নেয় বন বিভাগ। তবে রাজ্জাকের দাবি, সরকারি সব নিয়ম মেনেই খামার পরিচালনা এবং খামারের অনুমোদনের জন্য তিনি অবেদন করেছেন। যে প্রক্রিয়া এখনও চলমান। সেক্ষেত্রে খামারটি বন্ধ করলে তার প্রতি অন্যায় করা হবে। এদিকে সম্ভাবনাময় এই শিল্পটি অংকুরেই বিনষ্ট না করে এটি কীভাবে অনুমোদন এবং নিয়মের মধ্যে নিয়ে আশা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহণের দাবি স্থানীয়দের।

রাজ্জাক বিশ্বাস জানান, ২০০০ সালে একটি কিং কোবরা সাপ এবং ২৪টি ডিম দিয়ে তার এই খামারের যাত্রা শুরু। ২০০৮ সালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বেসরকারি পর্যায়ে সাপ এবং কুমিরের খামার স্থাপনের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করলে এর আলোকে আবেদন করেন তিনি। তবে সেই আবেদনের আর কোনো অগ্রগতি হয়নি।

কোনো পথ না পেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আবেদন করেন রাজ্জাক বিশ্বাস। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৪ সালের ২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পরিচালক ড. মো. সহিদুল্যাহ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর একটি চিঠি দেন। যাতে রাজ্জাক বিশ্বাসের মালিকানাধীন ‘বাংলাদেশ স্নেইক ভেনম’ একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বলে বিধি মোতাবেক খামার অনুমোদনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়।

প্রথমদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় খামারের অনুমোদনের প্রক্রিয়া শুরু করলেও বন বিভাগ এক্ষেত্রে আপত্তি জানায়। এরপর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বিষয়টি অবহিত করা হয়। তখন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আইনগত মতামত দেওয়ার জন্য বন বিভাগের কাছে চিঠি দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাপের খামারের অনুমোদন দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ রেখে বন বিভাগ একটি খসড়া আইন তৈরি করে।

রাজ্জাক বিশ্বাস জানান, ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর পটুয়াখালী সোনালী ব্যাংকের নিউ টাউন শাখায় সরকারি চালানের মাধ্যমে খামার নিবন্ধনের জন্য ২৫ হাজার টাকা জমা দেন। সর্বশেষ ২০১৯ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক মতিউল ইসলাম চৌধুরী সাপের খামার সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠান। এর পেরিপ্রেক্ষিতে পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সাপের খামার পরিদর্শন করেন। তবে নীতিমালায় সাপের খামারে এন্টি ভেনাম সংরক্ষণ করা এবং সাপের বিষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকার কথা বলা হয়। কিন্তু লাইসেন্স না থাকায় রাজ্জাক বিশ্বাস এন্টি ভেনম সংগ্রহ করতে পারেননি। ফলে অনুমোদন প্রক্রিয়া আবারও আটকে যায়।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১১ এপ্রিল বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক রাজ্জাক বিশ্বাসের সাপের খামার বন্ধ করে সাপ বনে ছেড়ে দেওয়ার জন্য একটি নোটিশ দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্জাক বিশ্বাস প্রধান বন সংরক্ষক বরাবর গত ১৭ এপ্রিল একটি আবেদন করে খামার বন্ধ করা ও সাপ ছেড়ে দেওয়ার নোটিশটি প্রত্যাহারের আবেদন করেন।

এ বিষয়ে উপকূলীয় বন বিভাগ পটুয়াখালীর বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. অব্দুল্লাহ আল মামুন বলে জানান, রাজ্জাক বিশ্বাস সাপের খামার তৈরি করে ঝাড় ফুকের মাধ্যমে ওঝা বৃত্তি করছেন, পাশাপাশি তিনি ইউটিউবে এসব আপলোড করছেন।

এছাড়া তিনি সমাজে এসব কুসংস্কার ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যেহেতু তিনি নিয়ম মেনে সাপের খামার করছেন না, সে কারণে খামারটি বন্ধ করে সাপগুলো অবমুক্ত করার জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। ইতোমধ্যে টেকনিকেল সাপোর্টের জন্য অধিদপ্তরকে জানানো হয়েছে।

পটুয়াখালী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি খামারটি পরিদর্শন করেছি। নিয়ম অনুযায়ী তার খামারে যে এন্টি ভেনমসহ বিষ সংগ্রহ এবং অন্যান্য সুযোগ সুবিধা থাকার কথা তা নেই। সে কারণে অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হয়নি।

রাজ্জাক বিশ্বাস বলেন, বাংলাদেশে আমি প্রথম সাপের খামার শুরু করলেও একে একে সারাদেশে ৫৮টি খামার গড়ে ওঠে। কিন্তু অনুমোদন জটিলতায় বর্তমানে চারটি খামার চালু আছে। আমার সাপের খামার নিয়ে দেশি-বিদেশি সংবাদ মাধ্যমে অনেক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop