৬:০১ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • লাভ-লসে ভেঙ্গে না পড়া খামারী মাহফুজ
ads
প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী ৬, ২০২৪ ৬:০০ অপরাহ্ন
লাভ-লসে ভেঙ্গে না পড়া খামারী মাহফুজ
পোলট্রি

স্বাবলম্বী হওয়ার সুবাদে বাবার করা খামারকে আবারো তৈরি করতে কাজ করছেন নোয়াখালী জেলার চাটখিলের আব্দুল্লাহ আল মাহফুজ। “যে মুরগি আমরা খাই তা কেউ না কেউ তো পালন করেছে”, আর সেই পালনকারীর কাতারে থেকে দেশকে আরো সম্মৃদ্ধ করার প্রয়াসে পোল্ট্রি খামারসহ বিভিন্ন উদ্যোক্তামূলক কাজে নামেন তিনি। আর পোল্ট্রি খামার করতে গিয়ে তিনি এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানান নানান সমস্যা আর সম্ভাবনা। নিন্মে পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে দেয়া সাক্ষাৎকারাটি। আপনি কতসালে খামার শুরু করেন? এমন প্রশ্নে তিনি এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে বলেন, আমি যে খামার নতুন শুরু করেছি এমনটি নয়। ২০০০ সালে আমার বাবা প্রথম খামার শুরু করে। আর তখন বাবা খামার করে লাভও করেছেন বেশ। তখন আমি দাখিলে পড়ি। আর বাবা বিদেশ যাওয়ার পর সেই খামার বন্ধ থাকে। আবার ২০১৯ সালে এসে আমি আবার খামার শুরু করি। কতটি মুরগির বাচ্চা দিয়ে খামার শুরু করলেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি প্রথম প্রায় ৪৩ হাজার টাকায় ১৫‘শ বাচ্চা দিয়ে ২০১৯ সালের অক্টোবরে খামার শুরু করি। আলহামদুলিল্লাহ প্রথম সেডেই আমি ত্রিশ হাজার টাকা লাভ করি। তারপর আরেক সেডে ৫০ হাজার টাকার মত লাভ করলেও ২০১৯-২০ সালে আমার লসের অংকটা একটু বেশি গুনতে হয়। আমি প্রায় তিন লক্ষ টাকার মত লস করি। এই লসের কারণ কি বলে আপনি মনে করেন? তিনি বলেন,করোনার কারণে অনেকটা লসে পড়তে হয়। তার উপর ছিলো সিন্ডিকেট বানিজ্য। সিন্ডিকেট বলতে বাচ্চা যারা উৎপাদন করে আবার তারাই খাদ্য উৎপাদনও করে আবার মুরগিও তারাই উৎপাদন করে। এতে করে একজন প্রান্তিক খামারির চাইতে তাদের উৎপাদন খরচ অনেক কম পড়ে। অন্যদিকে তারাই আবার মুরগির বাজার মূল্য নির্ধারণ করে। ফলে বাচ্ছা, খাদ্য এবং একই সাথে মুরগী উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের উৎপাদন ব্যায় অনুযায়ী বাজার মূল্য নির্ধারণ করায় প্রান্তিক খামারিগন ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। ফলে প্রান্তিক খামারিগন আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। ২০২১ সালে এসে নতুন বছর কেমন যাচ্ছে? ২০২১ সালের এসে প্রথম ব্যাচ ভালো করতে পারি নাই। শীতের কারণে আবার নানারকম রোগের কারণে প্রায় ২০ হাজার টাকার মত লস দিয়েছি। আর ২য় ব্যাচ শুরু করেছি ইনশাআল্লাহ।২য় ব্যাচের বয়স মাত্র ৮ দিন বলে তিনি জানান। একজন খামারী কিভাবে লাভ করতে পারবে বলে আপনি মনে করছেন? একজন খামারী লাভ করতে হলে প্রথমত বাচ্চার দাম কমাতে হবে। একটা খামারের ৯০%খরচ ধরা হয় খাদ্যে। তাই খাদ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বাজারের অন্যান্য দ্রব্যের ন্যায় মুরগির দামেরও একটা স্থিতিশীল পরিস্থিতি থাকতে হবে। হুট করে বাচ্চার দাম, খাদ্যের দাম বাড়ানোর প্রবণতা কমাতে হবে।একটা স্থিতিশীল বাজার মূল্য নির্ধারণ করতে হবে।যাতে বাচ্ছা উৎপাদনকারী, খাদ্য উৎপাদনকারী এবং খামারি ক্ষতিগ্রস্ত না হয় আবার জনগণকেও উচ্চমূল্যে মুরগী কিনতে না হয়। এছাড়া ভারতের সিন্ডিকেটসহ যেকোন ধরণের সিন্ডিকেট হ্রাস করতে হবে। প্রয়োজনের তুলনায় অধিক বাচ্চা উৎপাদন কমাতে হবে।আবার বাজারে কেবল বাচ্চার দাম কমালেই হবে না। বাচ্চার সাথে সাথে তার প্রাসঙ্গিক সব কিছুর দাম কমাতে হবে। এক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক একটা কমিটি গঠন করা উচিত। যারা বাজার মনিটরিং করবে। পোল্ট্রির খামার দিয়েই কি প্রতিষ্ঠিত হবেন ভাবছেন? মাহফুজ বলেন,পোল্ট্রি নিয়ে অনেক পরিকল্পনা আছে। আবার মাছ, গরু, দুগ্ধজাত দ্রব্য নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা আছে। এসবের উপরে আমি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর বিভিন্ন প্রশিক্ষণের আওতায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এ ছাড়া উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রকল্প থেকেও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করি। আমার ছোট আরো দুই ভাই আছে তারাও লেখাপড়ার পাশাপাশি যুব উন্নয়নসহ ব্যাক্তিকেন্দ্রিক নানান প্রতিষ্ঠানে গরু মোটাতাজা করন, গাভী পালন, দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন, মৎস্য পালন সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছে। মূলত আমরা খামারিরা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই খামার করি। যদিও এই শিল্পকে এগিয়ে নিতে সরকারের অনেক পরিকল্পনা আছে। যদিও তা যথা সময়ে প্রান্তিক খামারিদের কাছে এসে পৌঁছায়না। সরকারি সুবিধাগুলো যদি যথাসময়ে প্রান্তিক খামারিদের কাছে এসে পৌঁছায় তা হলে এই শিল্প আরো এগিয়ে যাবে বলে আমি মনে করি। এতে জাতীয় চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি বিদেশেও রপ্তানি করার সুযোগে সৃষ্টি হবে। সুতরাং সুযোগ সুবিধা এবং আমার দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে খামার করে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার ইচ্ছা আছে বলে জানান মাহফুজ। প্রাণিসম্পদ থেকে কেমন সুবিধা পাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রাণিসম্পদ থেকে এখনও যেভাবে পাওয়ার কথা সেভাবে সহযোগিতা পাইনি। প্রথমত এই সেক্টরে প্রয়োজনীয় লোকবলের অভাব, প্রয়োজনীয় ভ্যাক্সিনের অভাব। যার কারনে ভ্যাকসিন নিজ টাকা দিয়েই কিনতে হচ্ছে। যদিও পারিবারিক খামারের জন্য সরকারি ভ্যাক্সিন পাওয়া যায়। আবার বাজার থেকে কেনা ভ্যাক্সিন দিলেও অনেকক্ষেত্রে কাজ হচ্ছে না। আর কোন ধরনের উদ্যোগ নিলে আপনাদের জন্য ভালো হবে বলে মনে করেন? প্রথমত সিন্ডিকেটের বন্ধ করতে হবে। বাচ্ছা উৎপাদনকারী শুধু বাচ্ছাই উৎপাদন করবে, খাদ্য উৎপাদনকারী শুধু খাদ্যই উৎপাদন করবে আর খামারিরা মুরগী উৎপাদন করবে। সাথে যত্রতত্র হ্যাচারি বন্ধ করতে হবে। কারণ যত্রতত্র হ্যাচারি মান সম্মত বাচ্চা দিতে পারে না। বাচ্চা নিয়ে আসলেই দেখি কয়েকদিনের ভিতরে মারা যায়। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়।যত্রতত্র হ্যাচারির কারণে মানহীন বাচ্চা ছড়িয়ে পড়ে। যার কারণে খামারীরা উঠে দাঁড়াতে পারে না। করোনায় প্রণোদনার টাকা পেয়েছেন? এমন প্রশ্নে তিনি সরকারের প্রশংসা করে এগ্রিভিউ২৪.কম‘কে বলেন, এটা সরকার খুব ভালো একটা কাজ করেছে। অনেকে এখনও প্রণোদনার টাকা না পেলেও আমি পেয়েছি। আমি প্রায় ২৩ হাজার টাকা পেয়েছি।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop