৪:০৬ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • দিনাজপুরে পোল্ট্রি শিল্পে লোকসান, বন্ধ হচ্ছে ছোট-বড় খামার
ads
প্রকাশ : মে ২৮, ২০২২ ১০:২৫ অপরাহ্ন
দিনাজপুরে পোল্ট্রি শিল্পে লোকসান, বন্ধ হচ্ছে ছোট-বড় খামার
প্রাণিসম্পদ

প্রতিনিয়ত বাড়ছে মুরগির বাচ্চা ও খাবারের দাম। কিন্তু সে অনুপাতে দাম বাড়ছে না। ফলে চরম লোকসানের মুখে পড়েছেন দিনাজপুরের পোলট্রি খামারিরা। ব্যয়ের সঙ্গে আয়ের সংকুলান করতে না পারায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে এ শিল্প। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ছোট ছোট খামার। আর এতে করে বাড়ছে বেকারত্ব।

এ অবস্থায় আমিষের ঘাটতি পূরণ ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাচ্চা ও খাবারের দাম কমানোসহ সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন খামারিরা। তারা বলছেন, ক্রমাগত ছোট ছোট খামার বন্ধ হয়ে গেলে সব ধরনের ডিম এবং মুরগির মাংসের দাম দ্বিগুণ হবে।

দিনাজপুর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় লেয়ার মুরগির ১৯৭টি, ব্রয়লার মুরগির ৮৯৩টি, সোনালি মুরগির ৭৮৬টি খামার রয়েছে। সব মিলিয়ে জেলায় পোলট্রি খামার রয়েছে ১ হাজার ৮৭৬টি। তবে খামারিদের হিসাবে এ সংখ্যা ৫ হাজারের বেশি। এসব খামারে সর্বনিম্ন ৫০০ থেকে ১ লাখ পর্যন্ত মুরগি রয়েছে।

গত কয়েক দিন জেলার সদর, চিরিরবন্দর, বিরলসহ বেশ কয়েকটি উপজেলার খামার ঘুরে দেখা যায়, মাস ছয়েক আগেও মুরগির ডাকে মুখরিত ছিল যে খামারগুলো সেখানে এখন সুনসান নিরবতা বিরাজ করছে। মুরগির বাচ্চা আর খাদ্যপণ্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির সঙ্গে তাল মেলাতে না পেরে মুরগি কমিয়ে ফেলছেন খামারিরা। কেউবা পুঁজি হারানোর ভয়ে একেবারেই খামার গুটিয়ে নিয়েছেন।

বিরল উপজেলার কাজীপাড়ার লিটন পোলট্রি খামারের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক হাজার মুরগি নিয়ে শুরু করা খামারে বর্তমানে প্রায় ৭ লাখ টাকা খরচ হয়। ৪-৫ মাস আগেও এ খরচ ৫ লাখের মধ্যে ছিল।

তিনি বলেন, বিরল উপজেলায় দুই শতাধিক খামার আছে। সব মিলে নতুন করে মুরগি তুলেছেন সর্বোচ্চ ২০ জন খামারি। লোকসানের ভয়ে অনেক খামারি মুরগি তুলছেন না।

চিরিরবন্দর উপজেলার আন্ধারমুহা গ্রামের সোনালি মুরগির খামারি আব্দুস সালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মুরগির খামার করে আর টিকে থাকা যাচ্ছে না। ২২০০ মুরগিতে খরচ হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। আর বিক্রি করেছি ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা। একটি চালানেই লোকসান হয়েছে ১৯ হাজার টাকা। এভাবে কয়েকটি চালানে লোকসান হয়েছে। পরে জমি বন্ধক রেখে ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছে। তাই খামারে আর মুরগি তুলছি না।

একই উপজেলার হাজির মোড়ের খামারি প্রবাস ফেরত দুলাল ইসলাম বলেন, প্রবাস থেকে ফিরে মুরগির খামার করছি। এখন পুজি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। মুরগির বাচ্চা আর খাবারে দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে।

বিরল উপজেলার খামারি শহিদুল ইসলাম বলেন, তিনটি শেডে মুরগি ছিল ৪ হাজার। এখন দুটি শেড বন্ধ। একটিতে ১ হাজার ২০০ মুরগি আছে। খামারিদের কাছ থেকে আড়তদাররা প্রতিটি ডিম কিনছেন সাড়ে সাত টাকায়। সম্প্রতি পোলট্রি খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় একটি ডিমের উৎপাদন খরচ দাঁড়িয়েছে সাড়ে আট টাকা। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি ডিমে লোকসান হচ্ছে এক থেকে দুই টাকা টাকা। এ কারণে মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন খামারের মালিকরা। এতে কর্মহীন হয়ে পড়ছেন খামার সংশ্লিষ্ট কয়েক হাজার শ্রমিক।

দিনাজপুর পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন গঠনের আলোচনা চলছে বলে জানিয়েছেন সদর উপজেলার খামারি মুস্তাহিদ ইসলাম। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে লোকসানের মুখে ক্ষুদ্র ও মাঝারি পোলট্রি খামারগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অ্যাসোসিয়েশন গঠনের জন্য প্রায় মাসখানেক সময় ধরে খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় আড়াই শতাধিক খামারি বর্তমানে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। পাঁচ শতাধিক খামারি তিন ভাগের দুই ভাগ মুরগি বিক্রি করে দিয়েছেন। তাদের অনেকেই দোকান বা বেসরকারি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বিপদে পড়েছেন।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop