৫:২৪ অপরাহ্ন

শনিবার, ২৭ এপ্রিল , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • প্রায় দুই যুগ ধরে কৃষকের আস্থা অর্জনকারী ব্রি ধান ২৮
ads
প্রকাশ : অগাস্ট ১৬, ২০২২ ২:৩৩ অপরাহ্ন
প্রায় দুই যুগ ধরে কৃষকের আস্থা অর্জনকারী ব্রি ধান ২৮
কৃষি বিভাগ

প্রায় দুই যুগ ধরে কৃষকের আস্থা অর্জনকারী ব্রি ধান ২৮ এর জায়গা দখল করেছে ব্রি ধান ৫৮। মেহেরপুর জেলায় চলতি বছরে বোরো ধান মৌসুমে ব্রি ধান ২৮ এ ব্যাপকভাবে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণ করে। বিপরীতে অনেকটাই ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ও উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান ৫৮।

ফলে কৃষকের মাঝে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) উদ্ভাবিত লেটেস্ট এই ভ্যারাইটি।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সদ্য শেষ হওয়া বেরো মৌসুমে জেলায় ২৩ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে অর্জিত হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার হেক্টর। ধান উৎপাদন হয়েছে প্রায় এক লাখ মে. টন। ব্লাস্ট সংক্রমিত জমি থেকে ধানের ফলন কম হলেও উচ্চ ফলনশীল ব্রি ধান ৫৮, ব্রি ধান ২৯ এবং ব্রি ধান ৬৩ তে অধিক ফলনের কারণে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছেছে।

গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের কৃষক তহসিন আলী জানান, তিনি এবারের বোরো মৌসুমে এক একর জমিতে ব্রি ধান ৫৮ আবাদ করেছিলেন। একই মাঠে অনেক কৃষকের ক্ষেতে ব্রি ধান ২৮ ব্লাস্ট নামক ছত্রাকে নষ্ট হলেও তার ক্ষেত ভালো ছিল। তাই ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়াও ধান গাছ খাড়া থাকায় বিচুলি করতে পেরে গো খাদ্যের সংকট মিটেছে।

ভাটপাড়া গ্রামের কৃষক সোহেল রানা জানান, কৃষি অফিসের প্রদর্শনীর আওতায় তিনি দেড় বিঘা জমিতে ব্রি ধান ৫৮ আবাদ করেছিলেন। বিঘায় (৩৩ শতক) ফলন হয়েছে ৩০ মণের উপরে। তার পাশের ক্ষেতের কৃষকদের ব্রি ধান ২৮ এর ফলন হয়েছে ২০-২২ মণ। ব্রি ধান ৫৮ দেখতে অনেকটাই ২৮ এর মতো হওয়ায় ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। আগামী মৌসুমে এ অঞ্চলের মানুষ ব্রি ধান ৫৮ চাষের উপর জোর দেবেন বলেও জানান তিনি।

রাইপুর গ্রামের কৃষক হাফিজুর রহমান মোকলেছ বলেন, ‘আমি এবার ২০ বিঘা জমিতে ব্রি ধান ৬৩ আবাদ করে ব্যাপক ফলন পেয়েছি। যা বিঘায় ২৫-৩০ মণ। ধান লম্বা ও সরু যা মিনিকেট সাদৃশ্য। ফলে অন্যান্য ধানের চেয়ে প্রতি মণে ১০০-২০০ টাকা বেশি দরে বিক্রি করতে পেরেছি। এর ভাত সু-স্বাদু ও ঝরঝরে হওয়ায় সহজেই মানুষ আকৃষ্ট হচ্ছেন।’

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডক্টর আখতারুজ্জামান জানান, ‘আমাদের ব্রি’র বিজ্ঞানিরা নিরলসভাবে চেষ্টা করে সময় উপযোগী বিভিন্ন প্রকার ভ্যারইটি উদ্ভাবন করছেন। বোরো ধানের উচ্চ ফলনশীল জাত ব্রি ধান ৫৮ এবং ব্রি ধান ৬৩ সত্যিই কৃষকদের জন্য উপকারী। এর আবাদ সম্প্রসারণের জন্য আমরা চেষ্টা করছি। ব্রি ধান ২৮ দীর্ঘ দুই যুগ ধরে আবাদ করা হচ্ছে। ফলে এতে অনেক রোগ বালাই ঢুকে গেছে। নির্বিঘ্নে ধান আবাদের জন্য ব্রি উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতের ধান আবাদে কৃষকদের প্রতি পরামর্শ দিচ্ছি।’

জানা গেছে, ব্রি ধান ২৮ চাষাবাদের জন্য ১৯৯৪ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড থেকে অনুমোদিত হয়। এর পরে আরও অনেক জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম জাত হচ্ছে ব্রি ধান ২৯, ৫৮ ও ৬৩। এদের মধ্যে ব্রি ধান ২৯ এর জীবনকাল একটু বেশি। দেশের যে অঞ্চলগুলোতে ব্রি ধান ২৮ ও ২৯ চাষাবাদ হয় সেই অঞ্চলগুলোতে চাষাবাদ এবং ফলন পরীক্ষার পর ২০১২ সালে ব্রি ধান ৫৮ চাষাবাদের জন্য অনুমোদন দেয় জাতীয় বীজ বোর্ড। ঝড় বৃষ্টিতে ধান গাছ হেলে পড়ে না তাই ফলন বিপর্যয় হওয়ার আশঙ্কা কম।

অন্যদিকে ব্রি ধান ২৮ সহজেই হেলে পড়ে। ৫৮ ও ৬৩ জাতের অন্যতম বৈশিষ্ট হল শীষ থেকে ধান ঝরে পড়ে না। ব্রি ধান ২৮ এর প্রায় সমান জীবন কাল হওয়ায় একই সময়ে কাটা মাড়াই করা যায়। প্রতি হেক্টরে ব্রি ধান ২৮ এর ফলন ৫.৫ থেকে ৬ মেট্রিক টন, ব্রি ধান ২৯ এর ফলন ৭.৫ মেট্রিক টন, ব্রি ধান ৫৮ এর ফলন ৭ থেকে ৭.৫ মেট্রিক টন, ব্রি ধান ৬৩ এর ফলন ৬.৫ থেকে ৭ মেট্রিক টন।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop