৮:০৬ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • টেকসই উন্নয়নে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপক
ads
প্রকাশ : জুন ৬, ২০২২ ১২:২৮ অপরাহ্ন
টেকসই উন্নয়নে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপক
কৃষি বিভাগ

দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের নারীদের অবদান কম হলেও, গ্রামীণ অর্থনীতিতে পুরুষের তুলনায় নারীর অবদান তুলনামূলকভাবে বেশি এবং এর পরিমাণ প্রতিবছর বৃদ্ধি পাচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের নারীরা তাদের গৃহস্থালির যাবতীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে পারিবারিক দায়িত্ব হিসেবে কৃষিকাজে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে আসছে। বর্তমানে কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ও অবদান দুই-ই বাড়ছে। নারীদের এ অংশগ্রহণ জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বিরাট ভূমিকা রেখে চলেছে, বিশেষ করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা- দারিদ্র্যমোচন এবং জেন্ডার সমতা অর্জনেও কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ ব্যাপক।

আমাদের দেশের অর্থনীতির অবকাঠামো পরিবর্তনের কারণে শিল্প ও সেবাখাতের অনুপাত কৃষিখাতের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে গ্রামীণ অর্থনীতি এখনো পুরোটা কৃষিনির্ভর, যার অনেকটাই নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের হাতে ধরে। দেশের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গ্রামীণ অর্থনীতি কৃষি এবং কৃষিতে নারী উদ্যোক্তাদের অবদান-এ দুই-ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই কৃষি যেমন নারীর হাতে, তেমনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনও নারীর হাতে। টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারীর অংশগ্রহণ যেমন অত্যাবশ্যক, তেমনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও নারীর সরাসরি সম্পৃক্ততা অত্যাবশ্যক।

স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। এর ফলে ২০২৪ সালে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ঘোষিত হবে। জাতিসঙ্ঘ সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশ উল্লেখ্যযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। এমডিজি বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায় থেকে নেয়া অভিজ্ঞতা পরবর্তী পর্যায়ের জন্য নেয়া পরিকল্পনা টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নেও সাফল্যের উদাহরণ সৃষ্টির পথে বাংলাদেশ।

জাতিসঙ্ঘ টেকসই উন্নয়ন প্রতিবেদন-২০২১ অনুযায়ী এসডিজি অর্জনে বিশ্বের যে তিনটি দেশ সবচেয়ে এগিয়ে আছে, তারমধ্যে সবার ওপরে বাংলাদেশ। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যতা ও বেকারত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সামগ্রিক বিবেচনায় বাংলাদেশের গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি সচল থাকার কারণেই উৎপাদন ব্যবস্থার অবস্থান অনেকটা ভালো রয়েছে, আর এর কারণ হলো কৃষিখাতে নারী শ্রমিক ও নারী উদ্যোক্তার অংশগ্রহণ বৃদ্ধি।

বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে কৃষি খাতের উপর নির্ভরশীল। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) কৃষি খাতের অবদান প্রায় ১৪ শতাংশ। শিল্প ও সেবা খাতের প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রেও কৃষি খাতের পরোক্ষ অবদান রয়েছে। দেশের মোট শ্রমজীবীর প্রায় ৪১ শতাংশ প্রত্যক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। কৃষিখাতের উন্নয়নের সাথে দেশের বিপুল জনসংখ্যার খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। তাই খাদ্যনিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিতকরণ, দারিদ্র্যমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কৃষিখাতের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। আর অন্যতম অংশীদার এ খাতের নারী শ্রমিক ও উদ্যোক্তারা, বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারীর সময় গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতি সচল রাখতে এ খাতের নারীরা ব্যাপক অবদান রেখেছেন।

টেকসই উন্নয়নের ধারা তথা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ, নারীর ক্ষমতায়ন, পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে অংশগ্রহণ এবং দারিদ্র্যমোচন অব্যাহত রাখতে এবং নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের অবদানকে ধরে রাখতে সরকার প্রণীত বিভিন্ন নীতি, আইন, বিধি-বিধানসহ নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এনজিওদের নানা কর্মসূচি ও কর্যক্রম লক্ষ্যে পূরণে এসাথে চলমান রয়েছে।

গত কয়েক দশকে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণের লক্ষ্যে কয়েক কোটি শ্রমশক্তি নতুন যোগ হয়েছে, যার মধ্যে অর্ধেকের বেশিই নারী। আর এই নারীর বেশির ভাগই কৃষি খাতের নারী শ্রমিক এবং উদ্যোক্তা। নতুন এ সকল নারী উদ্যোক্তা মূলত গবাদিপশু পালন, হাঁসমুরগি পালন, মৎস্য চাষ, শাকসবজি-ফলমূল উৎপাদনসহ ধান, পাট গম চাষাবাদে নিয়োজিত রয়েছে। মূলত গ্রামীণ কৃষি অর্থনীতিতে গতি আনতে নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের ভূমিকাই মুখ্য।

স্বাধীনতার পরে সত্তর ও আশির দশকের দিকে গ্রামীণ নারীরা বাড়ির বাইরে গিয়ে কৃষিকাজ অংশগ্রহণ কমই করতো। তবে নব্বইয়ের দশক থেকে নারীরা কৃষিকাজে বীজ সংরক্ষণ, জমি প্রস্তুত, চারা রোপন, ফসল কাটা এবং ফসল ঘরে তোলাসহ সকল কাজের সাথে যুক্ত। তবে অনেক আগে থেকে বাড়ির গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি পালনের সাথে নারীরা জড়িত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে নারীরা বাণিজ্যিকভাবে কৃষি উৎপাদন ও বিপণনে নারীরা ব্যাপকভাবে জড়িত। মাছ চাষ, মৌমাছি চাষ, হাঁস-মুরগি পালন, ফলমূল চাষ থেকে শুরু করে বাণিজ্যিকভাবে দেশি-বিদেশী নানা জাতের সবজি উৎপাদনের বিশাল কর্মযজ্ঞে আজ নারীরা সমান অংশীদার।

পরিসংখ্যান বলছে, বৃহত্তর কৃষি অর্থনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ ক্রমেই বাড়ছে। গত ৫০ বছরে কৃষিতে নারীর সংখ্যা শতকের ঘর থেকে কোটিতে পৌঁছে গেছে। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো প্রকাশিত সর্বশেষ শ্রমশক্তি জরিপ ২০১৬-১৭ অনুসারে, কৃষিতে এখন নারীর অংশগ্রহণের সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে গেছে।

দেশে মোট শ্রমশক্তির উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে নারী। নারী শ্রমশক্তির মধ্যে ৬৮ শতাংশই কৃষি, বনায়ন ও মৎস্যখাতে জড়িত। কর্মক্ষম নারীদের বেশির ভাগ কৃষিকাজে নিয়োজিত। ফসলের প্রাক বপন থেকে শুরু করে ফসল উত্তোলন, বীজ সংরক্ষণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিপণন পর্যন্ত সম্পূণ প্রক্রিয়ায় নারী এককভাবেই করে। বাড়ির বাইরে ফসল ও সবজি চাষ, মসলা উৎপাদন, শুঁটকি ও মাছ প্রক্রিয়াকরণ, মাছ ধরার জাল তৈরি ও মেরামত, পোনা উৎপাদন, গবাদিপশু, হাঁসমুরগি গবাদিপশু পালনের কাজও নারীরা আজ প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত। সামাজিক বনায়নের কাজও হয় নারীর হাত দিয়ে।

নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার কারণে কৃষি পণ্য উৎপাদনে ডাইভারসিফিকেশন (বৈচিত্র্য) বেড়েছে। নারীরা বসতবাড়ির আঙ্গিনায় বাণিজ্যিকভাবে দেশি-বিদেশি উন্নত ফলনশীল শাক-সবজি ও ফলমূলসহ নানা জাতের কৃষিপণ্য উৎপাদন করছে। কৃষি অর্থনীতিবিদদের ভাষায়, কৃষিকাজ বলতে এখন আর শুধু মাঠে ফসল চাষাবাদকেই বোঝায় না, বরং বোঝানো হয় শস্য উৎপাদন, গবাদিপশু পালন, হাঁস-মুরগি পালন, মাছ চাষ, শাকসবজি, ফলমূল চাষ ও বনায়ন বা বাড়ির আশপাশে এমনকি বাড়ির ছাদেও গাছ লাগানো ইত্যাদি। এ বিবেচনায় এ সময় কৃষিতে পুরুষের তুলনায় নারী অংশগ্রহণ আগের তুলনা অনেক বেড়েছে। পুরুষরা মূলত শহরে পড়াশোনা, চাকরি ও ব্যবসার দিকে বেশি ঝুঁকে যাওয়া গ্রামীণ কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। পুরুষদের মধ্যে যতসংখ্যক পুরুষ কৃষিকাজে যুক্ত, তার চেয়ে নারী কর্মজীবীদের মধ্যে অনেক বেশিসংখ্যক কৃষিকাজে যুক্ত।

কৃষি উদ্যোক্তাদের নানাবিধ সমস্যার মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে, বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদেরকে । উদ্যোক্তা হিসেবে আর্থিক সংকট, ঋণ না পাওয়া, ভূমির মালিকানায় সম-অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া এবং উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বিপণন ব্যবস্থার অভাব এবং গ্রামীণ হাট-বাজারে প্রবেশেসহ যোগাযোগ অবকাঠমো ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকার করণে নারীরা কৃষি খাতে উদ্যোক্তা হতে উৎসাহিত হয় না বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিশেষ করে ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠান (এনজিও) থেকে চড়া সুদে ঋণ গ্রহণের কারণে তাদের নানাবিধ জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। নারী কৃষি উদ্যোক্তাদের জন্য সরকারি ঋণ ব্যবস্থাকে আরো সহজীকরণসহ পর্যাপ্ত করতে হবে। উৎপাদিত পণ্যের সঠিক বিপণনের জন্য নারীদের জন্য বিশেষ বাজার স্থাপনসহ অনলাইনে বাজার বিপণন ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করতে হবে। গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তারাও যাতে অনলাইন বাজার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তাদের তৈরিকৃত পণ্য বাজারজাত করতে পারেন- এজন্য প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের দক্ষ করে তুলতে হবে।

কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ খাত। কৃষি এবং কৃষকরাই বাংলাদেশর গ্রামীণ অর্থনীতির মেরুদন্ড। সরকার গৃহীত বিভিন্ন উন্নয়ন দলিল, বিশেষ করে রূপকল্প-২০২১, সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এমডিজি), সার্ক উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনাসহ বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাস্তবায়নের কৌশল অনুসরণে করে জাতীয় কৃষি নীতি- ২০১৩ প্রণয়ন করা হয়েছে। কৃষি খাতকে টেকসই ও সমৃদ্ধ করতে সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন কৃষিবান্ধব উদ্যোগের পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকও দেশের কৃষি খাতকে সহায়তা করার জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এর পাশাপাশি সরকারি চাকুরি ও কৃষিক্ষেত্রে আরো অধিক সংখ্যক নারী কৃষক এবং কৃষি শ্রম-শক্তি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত হওয়া প্রয়োজন । কৃষি প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নারীর অবদান রাখার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে, তাই কৃষি সংক্রান্ত অর্থোপার্জন কর্মকাণ্ডে নারীকে অর্থবহভাবে সম্পৃক্ত করে এবং মানব-সম্পদ উন্নয়নে সরকার নারীর ক্ষমতায়ন; উৎপাদন ও বিপণনে অংশগ্রহণ এবং আয়ের সুযোগ সৃজন তৈরির ওপর আরো অধিক গুরুত্বারোপ করা প্রয়োজন।

যেকোনো দেশের নারীদের বাদ দিয়ে বা অবহেলা করে, দূরে রেখে কোনো অর্থনৈতিক পরিকল্পনা কখনোই সফল হবে না। তাই সারা বিশ্ব আজ অনুধাবন করতে পেরেছে, নারীর সামগ্রিক উন্নয়ন ছাড়া সমগ্র বিশ্বের উন্নয়ন সম্ভব নয়, তাই এসডিজি অর্জনে নারীর প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ সম্পৃক্ততা অত্যন্ত জরুরি। বাংলাদেশের মোট জনগোষ্ঠীর অর্ধেক নারী। সেই বিবেচনায় এ দেশের জন্য উন্নয়ন কার্মকাণ্ড তথা কৃষি খাতে নারীর অংশগ্রহণ আরো বেশি জরুরি। আগের তুলনায় দেশে নারী-পুরুষের মধ্যকার ব্যবধান বা জেন্ডার গ্যাপ কমে আসছে। আয় উপার্জনক্ষম কাজে নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। নারীর অংশগ্রহণ বাড়ায় নারী-পুরুষের মধ্যকার বৈষম্য কমে আসছে। তাই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও কৃষিতে নারীর সরাসরি সম্পৃক্ততা অত্যাবশক।

লেখক : সিনিয়র তথ্য অফিসার, তথ্য অধিদফতর, বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকা

সূত্র:নয়া দিগন্ত

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop