৮:৩১ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বর্ষাকালে ছাদ বাগানের যত্ন
ads
প্রকাশ : জুলাই ৭, ২০২১ ১:০৪ অপরাহ্ন
বর্ষাকালে ছাদ বাগানের যত্ন
প্রাণ ও প্রকৃতি

আবারও এসেছে বর্ষাকাল,গাছ লাগানোর মৌসুম।এমন দিনে চলে রোদ ও মেঘের লুকোচুরি খেলা। এই রোদ, আবার এই আকাশ থেকে নামছে অঝোর ধারায় বৃষ্টি।প্রকৃতির এই নান্দনিক দৃশ্যগুলো যদি দেখা যায় বারান্দায় গড়ে ওঠা সবুজ বাগানে বসে, তবে সেই অনুভূতি কী রকম হয়, তা শুধু সেখানে বসেই অনুভব করা যাবে।

ইট-পাথরের এই শহরে যেদিকেই চোখ যায়, উঁচু দালান, গাড়ি, নানা চোখ ধাঁধানো স্থাপনা। সবুজ, সতেজ গাছগুলো ঠাঁই পাচ্ছে ছাদের ওপরেই।ইট-পাথরের শহুরে বাড়িঘরে একটু সবুজের পরশ যেন প্রাণের সঞ্চার করে।ঘরের সামনে একফালি সবুজ নিমেষে আপনার মন ভালো করে দিতে পারে। সারাদিনের ক্লান্ত অবসন্ন শরীর-মন নিয়ে যখন আপনি ঘরে ফেরেন, তখন এই সাধের সবুজ গেরস্থালিই, আপনার  মনে বুলিয়ে দিতে পারে শান্তির পরশ তাই অবসর পেলেই গাছের একটু যত্নআত্তি করুন।বিনিময়ে পান ফ্রেশ অক্সিজেনের আবিরাম যোগান।

বর্ষাকালে বৃষ্টির পানি গাছের জন্য অনেক উপকারী। বৃষ্টির পানিতে যেমন থাকে পটাশিয়াম তেমনি থাকে সোডিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, সালফেট ও নাইট্রেট আয়ন। তাছাড়া এই বৃষ্টির পানিতে রয়েছে নাইট্রোজেন যা গাছের প্রয়োজনীয় খাদ্য সুনিশ্চিত করে। এক পশলা বৃষ্টির পর ছাদ বা বারান্দার গাছগুলোকে অন্যরকম লাগে। চির সবুজ একান্তই সতেজ নির্মল লাগে যা চোখে দৃষ্টি নন্দিত মনে হয়। হ্যাঁ এই বৃষ্টির পানি আপনার ট্যাপের পানির চেয়ে অনেক পুষ্টি সমৃদ্ধ যার জন্যে বর্ষাকালে গাছের পাতাগুলো আরো চির সজীব আরোও সবুজ মনে হয়। তবে এই অতিরিক্ত বৃষ্টি গাছের জন্য অনেক ক্ষতিকর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।তাই এমনভাবে বাগান সাজাতে হবে, যাতে শুধু বৃষ্টির পানিটুকুই গাছ পায়। তার ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে বাগানকে।বর্ষায় ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে বাগানকে রক্ষা করতে আপনাদের জন্য উপস্থাপন করা হলো কিছু টিপস।

 

) গাছকে ছায়ায় রাখা

বর্ষাকালের অতিবৃষ্টি কিছু কিছু গাছের জন্য অনেক ক্ষতি বয়ে আনে। ক্যাকটাস বা সাকুলেন্ট সদস্যদের গাছ বেশি পানি সহ্য করতে পারে না তাই এদের খোলা আকাশের নিচে না রাখাই ভালো। এই জাতীয় গাছগুলোকে  কোনও শেডের তলায় নিয়ে গিয়ে রাখতে হবে। অথবা ছাদের একটা পাশে নিয়ে গিয়ে তার উপরে টিন বা এ জাতীয় কিছু দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। শেডের সুবিধে না থাকলে চারাগুলিকে বারান্দার কোণে বা ঘরের জানালার কাছেও রাখতে পারেন।

) পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা রাখা: সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গাছে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।গাছের গোড়ায় যেন বৃষ্টির পানি না জমে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।  যেকোনো ঘরোয়া গাছের জন্য এমন টব বা পাত্র বাছাই করা দরকার যেটায় পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনমত ছিদ্র থাকে। আর ইদানীং বড় বড় ড্রাম ব্যবহার করা হয় তাই এই ড্রামগুলোতে যেন নির্দিষ্ট পরিমাণ ছিদ্র থাকে তা খেয়াল রাখা জরুরি।খোলা জায়গায় বাগান থাকলে যাতে সেখানে পানি না জমে সেদিকে নজর দিতে হবে।

) মাটির ক্ষয় রোধ:

অনেক সময়েই দেখা যায়, বর্ষার পানিতে গাছের মাটির উপরের স্তর ধুয়ে যায়। এর সঙ্গে কিন্তু মাটির সার, উর্বর অংশটুকুও ধুয়ে সাফ হয়ে যায়। ফলে গাছ পানি পেলেও পুষ্টি পায় না। তাই গাছের কাণ্ড থেকে প্লাস্টিক বেঁধে টবের মাটি ঢেকে রাখতে পারেন। তবে অস্বচ্ছ আবরণের পরিবর্তে পারফোরেটেড শিট দিয়ে টবের উপরটা ঢেকে দিতে পারেন। এতে বৃষ্টির পানি চুয়ে চুয়ে মাটিকে পুষ্ট করবে। এঁটেল মাটি বেশি ব্যবহার করতে পারেন। এরা খুব তাড়াতাড়ি জল টেনে নেয়।

) প্রুনিং:

বর্ষায় অনেক গাছই খুব ঝাঁকড়া হয়ে যায়। ফলে একনাগাড়ে অনেক দিন বৃষ্টির পরে মাঝেমাঝে রোদ উঠলেও গাছের সব জায়গায় সেই রোদ পৌঁছয় না। বিশেষ করে শিকড়ে রোদ, অক্সিজেন না পৌঁছলে গাছের গোড়া পচে যেতে পারে। তাই গাছের ডাল ছেঁটে দিতে হবে। ফুলের গাছে যে ডালে ফুল শুকিয়ে যাবে, তা কেটে দিতে পারেন। তা হলে সেখান থেকে আবার নতুন কুঁড়ি জন্মাবে।

) কেঁচোর কারবার:

বর্ষায় কেঁচোর আনাগোনা বাড়ে। তবে এরা বন্ধু কীট। মাটি খুঁড়ে যেমন মাটি উর্বর করে তেমনই নাইট্রোজেনের জোগান দিয়েও গাছকে পুষ্টি দেয়। তাই কোনও গাছের গোড়ায় যদি দেখেন, একাধিক কেঁচো জমা হয়েছে, তাদের তুলে অন্যান্য গাছের টবে সমানভাবে ছড়িয়ে দিতে পারেন। এতে সব গাছেরই উপকার হবে।

) কীটনাশক:

বর্ষার আর্দ্র পরিবেশে পোকামাকড়ের আক্রমণ বাড়ে। নতুন পাতার রস খেতেও এরা গাছে জড়ো হয়। তাই বর্ষার শুরু থেকেই কীটনাশকের ব্যবহার শুরু  করতে হবে। প্রাকৃতিক কীটনাশক হিসেবে নিমের তেল, গোলমরিচ গুঁড়ো, শুকনো মরিচের গুঁড়া দিতে পারেন গাছের গোড়ায়। এতেও কাজ না হলে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।

) সার প্রয়োগ:

যেহেতু বর্ষার পানি উপরের স্তরের মাটি অনেকটাই ধুয়ে যায় তাই গাছে সার দিতে হবে নিয়মিত।  তবে এ সময়ে গলা-পচা সারের তুলনায় শুকনো সারের উপরে ভরসা রাখাই ভাল। চায়ের পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে,  ডিমের খোলা শুকিয়ে গুঁড়ো করে দিতে পারেন।

নামঃসৈয়দা সাজেদা খসরু নিশা
শিক্ষার্থী, কৃষি অনুষদ
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop