৯:৩৭ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা
ads
প্রকাশ : এপ্রিল ২৪, ২০২১ ১:৫০ অপরাহ্ন
বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা
ক্যাম্পাস

২৪ এপ্রিল বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে ।সারা বিশ্বের প্রাণী সেবায় নিয়োজিত চিকিৎসকদের জন্য বিশেষ একটি দিন। একটি দেশের পুষ্টি বিশেষ করে প্রোটিন, আমিষের চাহিদার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন এই ভেটেরিনারিয়ানরা।

ভেটেরিনারি পেশা নিয়ে শিক্ষার্থীদের রয়েছে নানান ধরনের আবেগ-অনুভূতি ও অনুপ্রেরণার গল্প।বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি  অনুষদের শিক্ষার্থীদের ভেটেরিনারি  দিবসে ভাবনা ও প্রত্যাশা  তুলে ধরেছেন আমাদের এগ্রিভিউ২৪ এর  প্রতিনিধি তাজুল ইসলাম।

 

“ভেটেরিনারি” শব্দটির উৎপত্তি ল্যাটিন এবং প্রথম ব্যাবহার ‘থমাস ব্রাউনি’ এর মাধ্যমে , যদিও এদেশের মানুষ ‘গরুর ডাক্তার’ শব্দটির প্রয়োগেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ পেশা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করা আগে মানুষের মুখে ‘গরুর ডাক্তার’ শব্দটা শুনেই বেশি অভ্যস্ত হয়ে গেছিলাম। কিন্তু ভার্সিটির প্রথম বর্ষে যখন পড়তাম তখন একজন সিনিয়র ভাইয়ের পোস্টে দেখেছিলাম ‘নাসা থেকে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের’ অতিলোভনীয় পোস্ট গুলোতে ভেটেরিনারিয়ানরা বিরাজ্যমান। এরপর ২০১৯  এ দুনিয়া জুড়ে করোনা ভাইরাস প্রভাব বিস্তার করা শুরু করলো চীনের উহান থেকে, বাংলাদেশে ৮মার্চ ২০২০ থেকে কোভিড আক্রান্ত রোগী পাওয়া শুরু হয়েছিলো। কোভিড-১৯ কালীন আলোচিত ভ্যাক্সিন Pfizer-BioNTech COVID-19 এর প্রস্তুতকৃত কোম্পানি ফাইজার এর CEO আলবার্ট বরুলা-ও একজন ভেটেরিনারিয়ান। উল্লেখ্য একমাত্র নোবেল বিজয়ী ভেটেরিনারিয়ান Dr. Peter C. Doherty। এর কিছুদিন পর এটাও জেনে গেলাম অণুজীববিজ্ঞানী বিজন কুমার শীল গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গবেষণাগারে স্বল্প মূল্যের করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট আবিষ্কার করে আলোচিত হয়েছেন। ড. বিজন কুমার শীল যিনি একজন ভেটেরিনারিয়ান এবং যার এমন সাফল্য এই প্রথম নয়। ১৯৯৯ সালে ছাগলের মড়ক ঠেকানোর জন্য পিপিআর ভ্যাকসিন আবিষ্কার করেছিলেন। ২০০৩ সালে সার্স ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে সিঙ্গাপুরে ভাইরাসটি দ্রুত নির্ণয়ের পদ্ধতিও উদ্ভাবন করেন তিনি। করোনাভিরিডি ফ্যামিলির ভাইরাস গুলো নিয়ে শুরু থেকেই কাজ করে আসছিলেন আমাদের ভেটেরিনারিয়ানরা, যেহেতু শতকরা ৬০ ভাগ মানব রোগ আসে পশু-পাখীর মাধ্যমে ,যাকে আমরা ‘zoonotic diseases’ হিসেবে চিনে থাকি। এ চিন্তাধারা থেকেই শুরু হয়েছিল One Health, One Medicine এর যাত্রা যেখানে হিউম্যান ডাক্তার এবং ভেটেরিনারিয়ানরা  একসাথে কাজ করছেন সুস্থ স্বাভাবিক পৃথিবীর জন্য। কোভিড-১৯ চলাকালীন বাকি সব পেশার মতো ভেটেরিনারি পেশাটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা। লকডাউনে বেশ কিছু ভেটেরিনারিয়ান বড় ভাইদের সাথে ফিল্ডে কিছুদিন কাজ করবার সৌভাগ্য হয়েছিল,যতটা স্বপ্ন দেখানো হয়েছিলো এ পেশা থেকে উপার্জিত অর্থের বা সম্মানের প্রতি কিন্তু কতটা কষ্ট করতে হয় তা কখনই কেউ সেভাবে বলেনি। হয়ত সকল সৌভাগ্যের পেছনে অনেক কষ্ট লেখা থাকে এজন্যিই বলেন নি তারা। সকালে শুরু হওয়া একজন ভেটেরিনারি ডাক্তার বিকেল পর্যন্ত বা কখনও তার বাইরেও সেবা দিয়ে যান নিরলস ভাবে, তার মুখের হাসি ফোটে যখন, একজন খামারি মুখে হাসি ফোটাতে পারেন সঠিক চিকিৎসা দিয়ে। অনেক পরিচিত মানুষজন ফোন দেয় মাঝে মধ্যে তাদের পোষা প্রানীদের অসুস্থের কথা বলে, নিজে অনেক সময় না পারলেও বড় ভাই বা আপুদের মাধ্যমে চিকিৎসা জানিয়ে দেই।পরে ফোন দিয়ে যখন জানায়, তার পোষা প্রানীটা সুস্থ হয়ে গেছে তখন ভাল লাগে এ পেশা নিয়ে এই ভেবে, ‘অন্তত কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পেরেছি’। পরিশেষে এত টুকু চাওয়া ভেটেরিনারিয়ান হিসাবে যথাযথ সম্মান এবং শুধু গরুর ডাক্তার না হয়ে সকল প্রানীর চিকিৎসক হিসেবে মানুষ চিনুক এটাতেই প্রশান্তি।

-আরাফাত ইবনে মাহবুব ,৩য় বর্ষ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

 

وَ اِنَّ لَکُمۡ فِی الۡاَنۡعَامِ لَعِبۡرَۃً ؕ نُسۡقِیۡکُمۡ مِّمَّا فِیۡ بُطُوۡنِہٖ مِنۡۢ بَیۡنِ فَرۡثٍ وَّ دَمٍ لَّبَنًا خَالِصًا سَآئِغًا لِّلشّٰرِبِیۡنَ ﴿۶۶﴾

অবশ্যই (গৃহপালিত) চতুস্পদ জন্তুর মধ্যে তোমাদের জন্য শিক্ষা রয়েছে; ওগুলির উদরস্থিত গোবর ও রক্তের মধ্য হতে তোমাদেরকে আমি পান করাই বিশুদ্ধ দুগ্ধ, যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু। And verily! In the cattle, there is a lesson for you. We give you to drink of that which is in their bellies, from between excretions and blood, pure milk; palatable to the drinkers. (সূরা নাহল, আয়াত ঃ ৬৬) কুরআনের এ আয়াতের মাধ্যমে Biosynthesis of Milk in Cow বিষয়টি আলোচনা হয়েছে।  আমিষ উৎপাদনে অক্লান্ত প্ররিশ্রম করে যাচ্ছে আমাদের দেশের খামারী ও ভেটেরিনারি ডাক্তারগণ।  দুধ , মাংস, ডিমের মাধ্যমে আমাদের আমিষের চাহিদা মেটাতে ভেটেরিনারিয়ান কাজ করে যাচ্ছে নিরবে নিভৃতে নিরলস ভাবে। আজ তরু্ণ ভেটেরিনারি ডাক্তারগণ এ পেশাতে মনোনিবেশ করতে প্রস্তুত যাতে দেশের মানুষের প্রোটিনের চাহিদা মিটিয়ে  রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারে, কিন্ত সরকার কর্তৃক যথাযথ স্বীকৃতি না পাওয়ায় তরুণ ডাক্তারগণ মনঃক্ষুন্ন। তাই বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে সরকারের কাছে শিক্ষার্থী ও তরুণ ডাক্তাররা চায় কাজের যথাযথ মূল্যায়ন ও  সম্মান। শিক্ষার্থী ও তরুণ ডাক্তারগণ মনে করেন যদি তাদের কাজের যথাযথ মূল্যায়ন ও সম্মান দেওয়া হয় তাহলে তাদের কাজের আগ্রহ আরো উদ্দীপিত হবে যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে। একজন শিক্ষার্থী  হিসেবে মনে করি আমরা যত টুকু কাজ করি সেগুলো দেশের জাতীয় পত্রিকা ও মিডিয়াতে না আসায়, বিষয় গুলো উপর মহলের দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না।ভেটেরিনারিয়ানদের কাজ ও অর্জন গুলো যেন  প্রচারিত হয় দেশের মানুষের মাঝে এটা আমার  প্রত্যাশা।

-সাব্বির শুভ, ৪র্থ বর্ষ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়

 

প্রতি বৎসর বিভিন্ন দিনে বিশ্বব্যাপী নানা “দিবস” পালিত হয়। প্রতিটি দিবসেই ‘প্রতিপাদ্য বিষয়’ নির্ধারণ করা হয় যা দিবসটির ভূমিকাকে সর্বসমক্ষে আরো গুরুত্ব ও অর্থবহ করে তোলে। তেমনিই বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস অন্যতম। বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস সারা বিশ্বে প্রানিসেবায় কর্মরত ভেটেরিনারিয়ানদের জন্য একটি বিশেষ দিন। প্রতি বছর এপ্রিল মাসের শেষ শনিবার সারা বিশ্বে যথাযথ মর্যাদায় পালিত হয় এ দিবসটি। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় : Veterinarian response to the Covid-19 crisis .ওয়ার্ল্ড ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন(WVA) ও ওয়ার্ল্ড অরগানাইজেশন ফর এনিমেল হেলথ ( OIE ) ২০০১ সাল থেকে প্রতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষ শনিবার বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস পালন শুরু করলেও দেশে প্রথম ২০০৮ সালে দি ভেট এক্সিকিঊটিভ আয়োজন করে এই দিবসটি।তবে বর্তমানে কেন্দ্রিয়ভাবে বাংলাদেশ ভেটেরিনারি এসোসিয়েশন (বিভিএ), দি ভেট এক্সিকিউটিভ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ভেটেরিনারি স্টুডেন্টস ফেডারেশন (বিভিএসএফ), সারাদেশের ভেটেরিনারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  দিনটিকে সাফল্যমণ্ডিত করতে বিভিন্ন কর্মসুচি গ্রহন করে থাকে। । কর্মসুচির মধ্যে বর্ন্যাঢ্য শোভাযাত্রা, সেমিনার, বিনামুল্যে প্রাণি সেবা ক্যাম্পেইন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকে। বর্তমানে অদৃশ্য ভাইরাস করোনার আক্রমনে সারা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। বাংলাদেেশও এই মহামারীর প্রকোপে চলছে লক ডাউন।  ভেটেরিনারি দিবস মূলত ভেটেনারিয়ানদেরকে কেন্দ্র করেই ,এই করোনার ভিতরে ভেটেনারিয়ানরা মানুষ ও প্রাণিস্বাস্থ্য সেবা এবং খাদ্য নিরাপত্তায় নিরলস ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন। ভেট ডাক্তার আলবার্ট বোরোলা ফাইজারের কোভিড ভ্যাক্সিন আবিষ্কারক টিমের প্রধান।  বাংলাদেশের ভেটেরিনারিয়ান দের গর্ব ড. বিজন কুমার শীল বাংলাদেশে সর্বপ্রথম স্বল্পমূল্যে কোভিড টেস্ট কিড আবিষ্কার করেছেন। এছাড়া দেশের অন্যতম প্রাণিস্বাস্থ্য সেবা খাত ও দেশের প্রান্তিক খামারীগণ তারা যেন পোষা প্রাণির স্বাস্থ্য সহ, ডেইরি ও পোল্ট্রির সুচিকিৎসা পেতে পারেন সেজন্য ত দিন রাত পরিশ্রম করে চলেছেন। তাই ভেটেরিনারি সেবাকে জরুরি ঘোষণা করা এখন সময়ের দাবি।

-মোঃ বাবর আলী , ৩য় বর্ষ ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

 

 

প্রতিনিয়ত দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি,পুরো পৃথিবী আজ থমকে গেছে। বর্তমান সভ্যতার মানুষ যেখানে পৃথিবীকে জয় করে আজ মহাকাশ জয়ের স্বপ্নে বিভোর,সেখানে অতি ক্ষুদ্র অণুজীবের কাছে আমরা এখন অসহায়। ২০১৯ সালের শেষদিকে এই অণুজীব নিয়ে সতর্ক করা প্রথম ব্যক্তি ডাঃ লি ওয়েনলিয়াং, যিনি নিজেও এর সংক্রমণে অকালে প্রাণ হারালেন। দেখে যেতে পারলেন না আজ বিশ্বের প্রায় ১২ কোটি মানুষ এই অণুজীব দ্বারা আক্রান্ত এবং ২৫ লক্ষের বেশি মানুষ পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছে।

নভেল করোনা ভাইরাস, যার উৎস সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় নি, তবে জেনেটিক এভিডেন্স বলছে উহানের বন্যপ্রাণী বিক্রয়কেন্দ্র থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে থাকতে পারে এবং বাদুড় কিংবা বনরুই হতে পারে উৎস। করোনা ভাইরাস ছড়ানোর প্রাক্কালে বিশ্বনেতারা যেভাবে একে গুরুত্বের সাথে নেয় নি, ঠিক তেমনি এখনও মানুষ জুনোটিক রোগব্যধি নিয়ে সচেতন নয়। One Health নিয়ে মানুষের জ্ঞান সীমিত এবং এসব নিয়ে তেমন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় নি। প্রাণীচিকিৎসায় ভেটেরিনারিয়ানদের ভূমিকা যেমন অপরিহার্য,তেমনি জুনোটিক রোগ নিয়ন্ত্রণেও ভেটেরিনারিয়ানদের অংশগ্রহণ প্রয়োজন ও অতীব জরুরি।যেহেতু শতকরা ৬০ ভাগ মানব রোগ আসে পশু-পাখীর মাধ্যমে।  করোনা ভাইরাস শুধু মানুষকেই নয়,মানুষের দ্বারা প্রাণীতেও সংক্রমিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে কানাডা ও হংকংয়ে বিড়াল এবং নিউইয়র্কের ব্রোংকস চিড়িয়াখানায় দুটি সিংহ ও চারটি বাঘের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য।

বাংলাদেশেও করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুরুর দিকে কোভিড-১৯ টেস্টের জন্য পরীক্ষাগারের সংকট দেখা দেয়। সেসময় বাংলাদেশ প্রাণীসম্পদ গবেষণা ইন্সটিটিউট (BLRI) তাদের দুটি সর্বাধুনিক পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ টেস্টের আহ্বান জানায়। গণস্বাস্থ্যের স্বল্পমূল্যে করোনা টেস্ট কিট আবিষ্কার  সারা দেশে ও বিশ্বে  হৈচৈ ফেলে দেন ভেটেরিনারিয়ান ড. বিজন কুমার শীল। ইতিপূর্বেও ২০০৩ সালে তিনি সার্স ভাইরাসের দ্রুত শনাক্তকারী কিট আবিষ্কার করেছিলেন। বর্তমানে বিশ্বে যে কয়টি করোনা টিকা নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম ফাইজার-বায়োএনট্যাকের টিকা। এই টিকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন ফাইজারের প্রধান নির্বাহী ভেটেরিনারিয়ান ড. আলবার্ট বোরলা।

যদি করোনার উৎস থেকে টিকা,এসব কিছু চিন্তা করা হয়, সবক্ষেত্রেই ভেটেরিনারিয়ানদের ভূমিকা ও নীরব অংশগ্রহণ রয়েছে।এসবই ভবিষ্যত সুস্থ পৃথিবীকে নিরাপদ ও সামনের দিকে এগিয়ে নিতে One Health এর তাৎপর্য ও ভূমিকা নির্দেশ করে। আমাদের সকলকে আরো বেশি সচেতন হওয়া উচিত। বন্যপ্রাণী ধরা ও খাওয়া থেকে বিরত  থাকতে হবে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে।মানুষ, প্রাণী আর পরিবেশ। এই তিনের স্বাস্থ্যই একে ওপরের সঙ্গে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত।তাই কোনোটা বাদ দিয়েই সুস্থভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। আর এই তিনের স্বাস্থ্য ‍সুরক্ষায় বিশ্ব স্বীকৃত ‘ওয়ান হেলথ’ এর ধারণাকে কাজে প্রয়োগের জন্য চিকিৎসক, খামারি ও সাধারণ মানুষদের উদ্বুদ্ধ  করতে হবে ।

-আরিজ আহম্মেদ সাদ, ৩য় বর্ষ ,  সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়।

 

আমি একজন ভেটেরিনারি মেডিসিন এ অধ্যায়ণরত স্টুডেন্ট। ভেটেরিনারি কি, কেমন সেটা ছোটবেলা থেকে স্বচ্ছ ধারণা না ধাকলে ও পশু পাখির প্রতি অমায়িক একটা টান ছিল, আর সেই টান থেকেই আদ্য পরিণতি হলো প্রিয় ভেটেরিনারি পেশা। বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবস ২০২১ বিষে বিষময় এর ক্রান্তিলগ্নে বাঙালি জাতির নিরাপদ আমিষ খাদ্য যোগানে ভেটেরিনারিয়ান নিঃসন্দেহে প্রথম সারির যোদ্ধা। শুধু নিরাপদ খাদ্য নয় দেশের সকল পশু পাখির স্বাস্থ্য সেবায় ভেটদের অনবদ্য সেবা। এছাড়াও করোনার বিভিন্ন গবেষণায়, ভাক্সিন তৈরী সহ অনেক কিছুতে ভেটেরিনারিয়ানদের রয়েছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কিন্তু ভেটেরিনারিয়ানদের এই অনবদ্য সেবা কি জরুরি সেবার অন্তর্ভুক্ত, এমন প্রশ্ন করতেই হয় ওহে কান্ডারী! যে পরিশ্রম, সেবায় ভিখারির শেষ সম্ভব মুরগী, ছাগল পালনের স্বপ্নকে বাচিঁয়ে রাখছে কিংবা সমাজের, দেশের আমিষ খাদ্য চাহিদায় বৃহৎ ভূমিকা রাখছে! সেই পেশা কি হবে জরুরি সেবার আওতায়!! এবারের বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে আমার চাওয়া হবে আমার কাজের স্বীকৃতি,ভেটেরিনারিয়ানদের সেবার স্বীকৃতি, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সেবায় পরিণত হয়ে জরুরি ঘোষণার দাবি।

-মোঃ হাবিবুল্লাহ শেখ,৪র্থ বর্ষ,পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

 

গত তিন দশকে ৩০ এর অধিক মানুষের রোগজীবাণু শনাক্ত করা হয়েছে, যার ৭৫% এসেছে প্রাণী থেকে।যাদের মধ্যে সবচেয়ে   ভয়ঙ্কর  বর্তমান সময়ের করোনাভাইরাস।ধারণা করা হচ্ছে  বাদুড়  মাধ্যমে এটি ছড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে প্রাণীদের স্বাস্থ্যসেবার বিকল্প নেই। যেখানে কারোনা ভাইরাসের কারণে আজ সারা বিশ্ব অচল হয়ে আছে সেখানেও থেমে নেই ভেটেরিনারিয়ানদের কার্যক্রম। চলছে সার্বক্ষণিক অফলাইন/অনলাইনে সেবা প্রদান।এবার কোভিডের জন্য দেশে RT-PCR টেস্টও শুরু করেন ভেটেরিনারিয়ানরা।সেইসাথে দেশজুড়ে স্বল্পমূল্যে প্রাণীজ আমিষ মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়া;ডিম,মাংস,দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন।এছাড়াও ড. বিজন শীলের স্বল্পমূল্যে রেপিড টেস্ট কিট আবিষ্কার, গ্লোব বায়োটেকের ভ্যাক্সিন টিমে ভেটেরিনারিয়ানের কাজ করা এমনকি ফাইজারের আবিষ্কৃত ভ্যাক্সিন টিমের প্রধান ড. আলবার্ট বোরলা নিজেও একজন ভেটেরিনারিয়ান। এতকিছুর পরেও আজ আমাদের দেশে ভেটেরিনারিয়ানরা অবহেলিত।২০১৮-১৯ সালের তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে মাংস উৎপাদন হয় ৭৫.১৪ লাখ টন,দুধ উৎপাদন হয় ৯৯.২৩ লাখ টন,ডিম উৎপাদন হয় ১৭১১ কোটি।তবুও প্রতি উপজেলায় নিয়োগপ্রাপ্ত ভেটেরিনারিয়ান সংখ্যা মাত্র ২/৩ জন।সরকারি উপজেলা ভেটেরিনারি হাসপাতালগুলো এখনো পর্যন্ত সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা খোলা রাখার প্রতি গুরুত্ব নেই।আর সমাজে ভেটেরিনারিয়ানদের পরিচিতি হচ্ছে গরুর ডাক্তার ।সত্যিই কি তাই???প্রশ্ন রেখে গেলাম!!! পরিশেষে আমি গর্বিত, কারণ আমি একজন ভেটেরিনারিয়ান।

-মোঃ মাহাদী হাসান,৩য় বর্ষ , সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় 

শেয়ার করুন

ads

One thought on “বিশ্ব ভেটেরিনারি দিবসে শিক্ষার্থীদের ভাবনা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop