মরিচ গাছের পোকা দমনে কৃষি তথ্য সার্ভিসের পরামর্শ
কৃষি বিভাগ
নানা সময় মরিচ গাছের যত্ন নিয়ে সমস্যায় পড়েন কৃষকরা। বিশেষ করে পোকা দমন নিয়ে। কারণ মরিচ গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে ফেলে পোকা। এতে দুর্বল হয়ে যায় গাছ। ফলে কমে যায় ফলন। এ থেকে প্রতিকারের উপায় জানিয়েছে কৃষি তথ্য সার্ভিস।
মরিচের ফল ছিদ্রকারী পোকার লক্ষণ
এই পোকা কচি ফল ও ডগা ছিদ্র করে ভেতরে কুরে কুরে খায়। এরা ফুলের কুঁড়িও খায়।
প্রতিকার
ক্ষেত পরিষ্কার রাখতে হবে। আক্রান্ত ডগা ও ফল সংগ্রহ করে নষ্ট করতে হবে। চারা রোপণের ১৫ দিন পর থেকে ক্ষেত ঘন ঘন পর্যবেক্ষণ করা প্রয়োজন। জৈব বালাইনাশক ব্যবহার যেমন- নিমবিসিডিন ৩ মি.লি. বা লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
এছাড়া শতকরা ১০ ভাগের বেশি ক্ষতি হলে যে কোনো একটি বালাইনাশক ব্যবহার করতে হবে। যেমন- সাইপারমেথ্রিন ১ মি.লি. বা ডেল্টামেথ্রিন ০.৫ মিলি বা প্রোপেনোফস (৪০%), সাইপামেথ্রেন (২.৫%) ২ মিলি বা সুমিথিয়ন ২ মিলি অথবা ডায়াজিনন ২ মি.লি. বা লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মরিচের জাব পোকার লক্ষণ
এই পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে ফেলে। গাছকে দুর্বল করে দেয়।
প্রতিকার
গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা। প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই দেওয়া। পরিষ্কার পানি জোরে স্প্রে করা। ক্ষেত পরিষ্কার রাখা। হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা। তামাকের গুড়া (১০ গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫ গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা। প্রতি গাছে ৫০টির বেশি পোকা দেখা দিলে ইমিডাক্লোপ্রিড ০.৫ মিলি/লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
মরিচের সাদা মাছি পোকার লক্ষণ
এরা পাতার রস চুষে খায়, ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে গাছ। পাতায় অসংখ্য সাদা সাদা পাখাযুক্ত মাছি দেখা যায়। ঝাঁকি দিলে উড়ে যায়।
প্রতিকার
সাদা আঠাযুক্ত বোর্ড স্থাপন বা আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা। নিয়মিত ক্ষেত পরিদর্শন করা। ৫০ গ্রাম সাবানের গুড়া ১০ লিটার পানিতে গুলে পাতার নিচে সপ্তাহে ২-৩ বার ভালো করে স্প্রে করা। সাথে পাঁচ কৌটা গুল (তামাক গুড়া) পানিতে মিশিয়ে দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ইমিডাক্লোপ্রিড ০.৫ মিলি/লিটার বা ২ মিলি ডায়মেথয়েড গ্রুপের কীটনাশক প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।
মরিচের থ্রিপস পোকার লক্ষণ
এর আক্রমণে পাতা কুঁকড়ে যায়। পোকা গাছের কচি পাতা ও ডগার রস শুষে খেয়ে গাছকে দুর্বল করে ফেলে।
প্রতিকার
গাছের আক্রান্ত অংশ অপসারণ করা। প্রাথমিক অবস্থায় শুকনো ছাই প্রয়োগ করা। পরিষ্কার পানি জোরে স্প্রে করা। ক্ষেত পরিষ্কার রাখা। হলুদ রঙের ফাঁদ ব্যবহার করা। তামাকের গুড়া (১০ গ্রাম), সাবানের গুড়া (৫ গ্রাম) ও নিমের পাতার নির্যাস প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করা। বেশি পোকা দেখা দিলে ইমিডাক্লোপ্রিড গ্রুপের কীটনাশক ০.৫ মিলি/ লিটার হারে পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।