৯:১৭ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • স্মার্ট উন্নত দেশ গড়তে হলে ডিম দুধ মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে
ads
প্রকাশ : জুন ২, ২০২৪ ৯:৫২ পূর্বাহ্ন
স্মার্ট উন্নত দেশ গড়তে হলে ডিম দুধ মাংসের প্রাপ্যতা বাড়াতে হবে
প্রাণিসম্পদ

ডক্টরস’ ডায়ালগ অন রাইট টু প্রোটিন

বুদ্ধিমান ও স্বাস্থ্যবান জাতি গড়তে হলে প্রোটিনের প্রাপ্যতা বাড়াতেই হবে। উন্নত দেশের মানুষ যেখানে বছরে গড়ে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০টি ডিম খায় সেখানে সরকারি হিসাবে আমাদের দেশে এ সংখ্যা ১৩৬টি। শুধুমাত্র হাঁস ও মুরগির ডিমের হিসাব করলে প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক কম। মুরগির মাংসের প্রাপ্যতা উন্নত দেশের তিন ভাগের এক ভাগ। দুধের মাথাপিছু দৈনিক প্রাপ্যতা ২৫০ মি.লি. এর বিপরীতে মাত্র ২২২ মি.লি.। তাই ২০৪১ সালের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য পূরণ করতে হলে ডিম, দুধ, মাংসের মাথাপিছু প্রাপ্যতা বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই। ৩০ মে ২০২৪ রাজধানীতে অনুষ্ঠিত “ডক্টরস’ ডায়ালগ অন রাইট টু প্রোটিন” শীর্ষক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সাইন্সেস (বিএউএইচএস), বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এবং ইউ.এস. সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিল (ইউএসএসইসি) যৌথভাবে সেমিনারটি আয়োজন করে।

বিএউএইচএস এর উপাচার্য্য প্রফেসর ডা. ফরিদুল আলম বলেন- আপাত বিচারে মাথাপিছু আয় কম হওয়াকে প্রোটিন বা পুষ্টি ঘাটতির কারণ হিসেবে দায়ী করা হলেও সচেতনতার অভাবকেও এ দায় থেকে মুক্ত করা যায় না। তিনি বলেন- বেসরকারি এমনকি সরকারি টিভি চ্যানেলগুলোতেও ডিম কিংবা দুধের বিজ্ঞাপন চোখে পড়েনা অথচ প্রতিবেশি দেশে প্রচারিত দারুণ চিত্তাকর্ষক বিজ্ঞাপনগুলো সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে। ডা. ফরিদুল আলম বলেন- প্রচারেই প্রসার। তাই জনসচেতনতা বাড়াতে তথ্য মন্ত্রণালয়কে আরও এগিয়ে আসতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব হেলথ সাইন্সেস জেনারেল হাসপাতালের মহাপরিচালক, প্রফেসর ডা. মোঃ ফজলুর রহমান বলেন, তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে মানুষকে কোনো বিষয় সম্পর্কে অবহিত করা আগের চেয়ে অনেক বেশি সহজ হয়েছে তবে আচরণে পরিবর্তন আনা অনেক কঠিন একটি কাজ। আশার কথা হলো অধিকাংশ মানুষ এখনও ডাক্তার, পুষ্টিবিদ কিংবা হেলথ প্রফেশনালদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করেন। তাই প্রোটিন ও পুষ্টি বিষয়ক জনসচেতনতা বাড়াতে ডাক্তার ও হেলথ প্রফেসশনালদের এগিয়ে আসতে হবে।

ইউএস সয়াবিন এক্সপোর্ট কাউন্সিলের বাংলাদেশ টীম লীড খাবিবুর রহমান কাঞ্চন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষ অপুষ্টিতে ভুগছে। পুষ্টি সূচকে উন্নতি করতে পারলে দক্ষিণ এশিয়ার চিত্র পাল্টে যাবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মের প্রোটিন চাহিদা পূরণ করতে হলে আমাদেরকে স্বল্প জায়গায় এবং পরিবেশের ক্ষতি না করে অধিক পরিমান মাছ, মাংস, ডিম উৎপাদনের কথা ভাবতে হবে। কাঞ্চন বলেন, সয়াবিন এমন একটি শষ্য যা একদিকে যেমন উদ্ভিজ্জ্য প্রোটিনের চাহিদা মেটাচ্ছে অন্যদিকে তেমনি প্রাণিজ প্রোটিন উৎপাদনেও বড় ভূমিকা রাখছে।

ওয়ার্ল্ড’স পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন- বাংলাদেশ শাখা’র সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব প্রামাণিক বলেন, পশ্চিম ইউরোপের দেশ মোনাকোর মানুষের গড় আয়ু সবচেয়ে বেশি। চীনের একজন মানুষ ৭৫ বছর বয়সেও অনেক বেশি কাজ করতে পারেন। নেদারল্যান্ডসের মানুষেরা এখনকার মত এতটা লম্বা ছিল না। অলিম্পিকের মেডেল তালিকায় আমেরিকা এবং ইউরোপই শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে বহুকাল কারণ তাঁরা পর্যাপ্ত প্রোটিন গ্রহণ করেন। তিনি বলেন, এক শলাকা সিগারেটের দাম ১৫-১৮ টাকা অথচ পৃথিবীর প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন- একটি ডিমের দাম ১৩ টাকা হলেই তুলকালাম কান্ড বেধে যায়। এ মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে হবে।

ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ড. খালেদা ইসলাম বলেন- জাতি গঠনের প্রেক্ষাপটে প্রতিটি নাগরিকের জন্য পর্যাপ্ত প্রোটিন নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। প্রোটিনের ঘাটতি একটি শক্তিশালী জাতিকেও দূর্বল জাতিতে পরিণত করতে পারে। অপুষ্টিতে আক্রান্ত ও দূর্বল শিশুর জন্মহার, খর্বাকৃতি ও কম ওজনের শিশুর সংখ্যা বাড়তে থাকলে পরিণামে বৃহত্তর সমাজ ও জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বারডেম হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন নাহার নাহিদ মহুয়া বলেন, ডিম সম্পর্কে অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত আছে যেমন- ডিম খেলে হার্টের সমস্যা হয়, প্রেসার হয়, শরীর মোটা হয়ে যায়, অপারেশনের রোগীকে ডিম দেয়া যাবেনা, বয়স্কদের ডিম-মাংস দেয়া যাবেনা; ব্রয়লার মুরগির মাংস খাওয়া ঠিক নয় ইত্যাদি। অথচ ডিম ও দুধ হচ্ছে সুপার ফুড। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির মাংস হচ্ছে পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ও স্বাস্থ্যকর মাংস।

বিইউএইচএস -এর পাবলিক হেলথ ফ্যাকাল্টির ডীন, প্রফেসর ডা. মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে নেতিবাচক প্রচারণা বাদ দিয়ে ইতিবাচক প্রচারণাকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্য বিষয়ক কার্যকর বার্তাগুলো যদি ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে মানুষ উপকৃত হবে, জনস্বাস্থ্যের উন্নতি হবে, জাতি আরও মেধাবি হবে এবং সার্বিক বিচারে সরকার ও রাষ্ট্র উপকৃত হবে।

সেমিনারে প্রায় ২৫০ জন ডাক্তার, পুষ্টিবিদ, হেলথ প্রফেশনাল ও শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop