আখ সংকটে ঠাকুরগাঁও সুগার মিল, অবৈধভাবে গুড় উৎপাদন
এগ্রিবিজনেস
ঠাকুরগাঁওয়ে আখের অভাবে মাড়াই মৌসুমে ব্যাহত হচ্ছে মিলের কার্যক্রম। আখ সংকটে নির্ধারিত সময়ের আগেই মিল বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
অথচ উৎপাদিত আখ থেকে অবৈধ পাওয়ার ক্রাশার মেশিনে দেদার তৈরি হচ্ছে গুড়। মেশিনে গুড় উৎপাদন লাভজনক হওয়ায় মিলে আখ সরবরাহ করছেন না চাষিরা।শ্যালোমেশিনে নিয়ন্ত্রিত পাওয়ার ক্রাশার মেশিনের সাহায্যে ঠাকুরগাঁওয়ের মিল জোন এলাকায় গ্রামে গ্রামে অবৈধভাবে তৈরি করা হচ্ছে আখের গুড়। মাড়াই মৌসুমে সরকারি বিধিনিষেধ থাকলেও কোনোরকম তোয়াক্কা না করেই গুড় তৈরিতে ব্যস্ত জেলার বিভিন্ন এলাকার চাষিরা।
কৃষকের উৎপাদিত আখ সুগার মিলে সরবরাহ করে ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়। অথচ দিনে একটি পাওয়ার ক্রাশার মেশিনে ১০ থেকে ১১ মণ আখ থেকে গুড় উৎপাদন হচ্ছে এক মণের বেশি। যেখানে প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হয় ৯০-১১০ টাকায়। এতে মিলে আখ সরবরাহ থেকে তিনগুণ বেশি লাভ হওয়ায় অবৈধ পন্থা অবলম্বন করছেন কৃষকরা। ফলে আখ সংকটে সুগার মিলের কার্যক্রম বন্ধ রাখতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
আখ চাষিরা বলছেন, গুড় প্রক্রিয়াজাত করতে শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না। তারা নিজেরাই কাজ করেন। এরপর বাজারে বিক্রি করে আয়ের টাকায় সংসারের ব্যয় মেটান বলেও জানান তারা।
মিল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগও বিস্তর। চাষিরা বলছেন, মিলে আখ দিলে ঠিকমতো টাকা পাওয়া যায় না। এদিকে আখ শুকিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে, অবৈধ এ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার অভিযান পরিচালনা করা হলেও বন্ধ হচ্ছে না গুড় উৎপাদন। এ জন্য জোরালো পদক্ষেপের দাবি মিল কর্তৃপক্ষের।
ঠাকুরগাঁও সুগার মিলের ইক্ষু সংগ্রহ উপমহাব্যবস্থাপক মনজুরুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে আমরা ইতোমধ্যে মিলজোন এলাকায় যে সমস্ত জায়গায় অবৈধভাবে পাওয়ার ক্রাশার দ্বারা আখ মাড়াই করে গুড় তৈরি হচ্ছে সেখানে অভিযান চালিয়েছি এবং বেশকিছু মাড়াই কল জব্দ করেছি। এভাবে আখ মাড়াই হলে মিলে আখের স্বল্পতা দেখা দেবে ফলে সরকারি প্রতিষ্ঠান আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে।
২০০ থেকে সাড়ে ৩৮ কোটি টাকা ঋণ আর ৭১৬ কোটি টাকা লোকসান নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর থেকে চলতি মৌসুমে আখ মাড়াই কার্যক্রম শুরু করবে ঠাকুরগাঁও সুগার মিল।