কক্সবাজারে সামুদ্রিক শৈবাল চাষে ব্যাপক সাফল্য
কৃষি বিভাগ
সামুদ্রিক শৈবাল চাষে ব্যাপক সাফল্য এসেছে কক্সবাজারের উপকূলীয় এলাকায়। শৈবাল থেকে পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্য, ওষধি পণ্য, প্রসাধনী, সার, বায়োফুয়েল ও পরিবেশ দূষণরোধক পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে।
লবণাক্ত-আধা লবণাক্ত পানির পরিবেশে এটি জন্মে এবং সহজে চাষাবাদ করা যায়। গবেষকরা বলছেন, সামুদ্রিক শৈবাল বিভিন্নভাবে ব্যবহারের পাশাপাশি রপ্তানিরও সুযোগ রয়েছে।
কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলে শৈবাল চাষ উৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনষ্টিটিউট ২০১৬ সাল থেকে ১০টি প্রজাতির সামুদ্রিক শৈবালের উপর গবেষণা ও চাষ শুরু করে। বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের সমন্বয়ে ও কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এ প্রকল্পের কাজ চলবে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
সম্ভাবনাময় রপ্তানিযোগ্য ও উন্নত পুষ্টিসমৃদ্ধ সামুদ্রিক শৈবাল উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাত ও বাজারজাতকরণে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। প্রায় ৪ কোটি টাকার সহায়তায় এসব কৃষক কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া, রেজুখাল, চরপাড়া ও চৌফলদন্ডী উপকূলীয় অঞ্চলে শৈবালের চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।
সম্ভাবনাময় এ খাতে জড়িয়ে পড়েছে উল্লেখযোগ্য প্রায় ৪ শতাধিক কৃষি পরিবার। এতে আর্থিক সক্ষমতার পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হয়েছে।
শৈবাল চাষীরা জানান, এগুলো নিয়ে আমরা উৎপাদন করে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছি। তাতে করে আমাদের সংসার খুব ভালোভাবে চলছে।
ল্যাবরেটরিতে প্রতি কেজি ২০ হাজার টাকা মূল্য মানের ‘এগার’ ও ‘কেরাবিনা’ তৈরি সম্ভব। শৈবালের চাষাবাদ বাড়াতে ল্যাবরেটরিতে বীজ উৎপাদন হচ্ছে, যা কৃষকদের মধ্যে সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের নির্বাহী চেয়ারম্যান ডক্টর শেখ মো: বখতিয়ার জানান, ক্লাসিল আগিয়া এবং গুরুফাই- এই দুটি প্রজাতি আমরা মনে করছি এই অঞ্চলের জন্য খুবই উপযোগী।
শৈবাল চাষে সাশ্রয়ী মূল্যের পুষ্টিসমৃদ্ধ মানব ও পশুখাদ্য, পোশাক শিল্প ও ঔষধ শিল্পের কাঁচামাল উৎপাদন যেমন হচ্ছে, তেমনি সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমিতে ভূমিকা রাখছেন অসংখ্য নারী-পুরুষ।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডক্টর মো: আক্কাস আলী জানান, কিভাবে এটি কালটিভেশন করলে সারাবছর কৃষক করতে পারবে, তার জন্য একটা পদ্ধতি বের করার চেষ্টা করছি আমরা। বর্তমানে ১০টি প্রজাতির মধ্যে ২টি প্রজাতির চাষ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে উন্নতমানের পুষ্টি এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব।