কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীতে বিলীন কৃষকের স্বপ্ন
কৃষি বিভাগ
কুড়িগ্রামে অসময়ের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকের কাঙ্খিত ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। আর কদিন পরেই যে ফসল ঘরে তুলে ঋণের বোঝা কমাতে চেয়েছিল, সেই ফসল হারিয়ে এখন দিশেহারা কৃষকেরা।
কৃষকেরা জানালেন, আবার বৃষ্টি হলে ক্ষয়ক্ষতি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ বলছে, আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের কৃষকদের তালিকা করছি।
এদিকে কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জেলার ৫ উপজেলায় ২৭৩ হেক্টর বোরো ধান, পেঁয়াজ, তরমুজ, পাট, ভুট্টা, চীনাবাদাম, শাক-সবজির ক্ষেত আক্রান্ত হয়েছে বলে জেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।
তিস্তার নিচু চরে লাগানো চাষিদের বিভিন্ন ফসলাদি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে এখন পচা গন্ধ ছড়িয়েছে। এবারে চাষিরা বাদাম, পিঁয়াজ, পটল, ঝিঙা, মরিচ, করলা, শসা, চিচিঙ্গা, কালজিরা, ধনিয়া, পালং শাকের বীজ, মিষ্টি কুমড়া, বোরোধানসহ বিভিন্ন ফসল লাগিয়েছিল। চৈত্র মাসের এই অসময়ের বৃষ্টিতে এখন হাঁটু পানির নীচে সেগুলো অবস্থান করছে। ধার-দেনা আর ঋণ করে সার, কীটনাশক, ওষুধ, বীজ কিনে লাখ-লাখ টাকা খরচ করে এখন কৃষকের কাটছে নির্ঘুম রাত।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামগঞ্জ গ্রামের আব্দুর রশিদ জানান, প্রায় ২ লাখ টাকা খরচ করে আড়াই একর জমিতে পিঁয়াজ আবাদ করেছি। মাত্র ৮ মণ পিঁয়াজ তুলতে পেরেছি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সব তলিয়ে গেছে। এখন আমার আসল টাকাই উঠল না।
কৃষক সেলিম মিয়া বলেন, বন্যায় শুধু ফসলের ক্ষতি করেনি। আমার দেড় একর বোরোধানি জমি তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে। এখন বাড়িও ভেঙে যাওয়ার উপক্রম। এখন যাই কই, আর খাইবা কী!
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আব্দুর রশীদ জানান, বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের তালিকা প্রস্তুত করা শুরু হয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত বেশি হলে ক্ষতির সম্ভাবনা আরো বাড়তে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আউশ মৌসুমে সরকারি প্রণোদনায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানান তিনি।