খুলনায় বোরো মৌসুমে ৩৫ প্রকার কীটনাশক আমদানি
এগ্রিবিজনেস
বোরো আবাদ উপলক্ষে এবার সাতটি বহুজাতিক কোম্পানী ছত্রাক ও পোঁকা দমনে ৩৫ প্রকার কীটনাশক খুলনার বাজারে আমদানি করেছে। এ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার শুরু হবে। অধিক উৎপাদনের লক্ষে অনিভজ্ঞ কৃষক অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করবে। ফলে বন্ধু পোঁকা-মাকড়ের ধ্বংস, জলাশয়ে মাছের খাবার প্লাংটন ধ্বংস ও কৃষি শ্রমিকরা পরোক্ষভাবে হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগতে পারে।
খুলনা জেলায় এবার ৬০ হাজার হেক্টর জমি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্র নিয়ে ৮০ হাজার কৃষক বীজতলা তৈরি করেছে। এমাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মাজড়া পোঁকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার শুরু হবে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে বোরো আবাদে কীটনাশক ব্যবহারের পরিমাণ বাড়বে। কালিবাড়ি এলাকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, বহুজাতিক কোম্পানীগুলো ছত্রাক ও কীটনাশক দমনে ইমপেল, গোল্ডজিন, সাইপেরিন, পাইক্লোরেড, থ্রীমিড, টোক্সিমাইড, কাজিম, নোইন, ম্যানচার, গেইন, বিনতা, সাইব্রোন, টাইফুন, ডাইমেনশন, সলভেনশন-সহ মোট ৩৫ প্রকার কীটনাশক আমদানি করেছে। বহুজাতিক কোম্পানীগুলোর মধ্যে অসম প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে।
বোরো চাষী ওয়াহিদুজ্জামান মল্লিক জানিয়েছেন, ৫ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করবেন। ৯ কেজি হাইব্রীড জাতের বীজ দিয়ে বীজতলা তৈরি করেছেন। গেল মৌসুমে সিনজেনটা কোম্পানীর কীটনাশক ব্যবহার করেন। বোরোর ভরা মৌসুমে কোন মাসে ১৫ দিন পর, আবার কোন মাসে ১ সপ্তাহ পর কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে।
কীটনাশক কোম্পানী হেকেম বাংলাদেশ লিমিটেডের মার্কেটিং অফিসার জানান, ইতোমধ্যে ৩৫ প্রকারের কীটনাশক খুলনা ও ডুমুরিয়ার বাজারে মজুদ হয়েছে। গেল মৌসুমে শুধুমাত্র হেকেম বাংলাদেশ ৬০ লক্ষ টাকার কীটনাশক বিক্রি করে।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রোটেকনোলজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষক প্রফেসর ড. মতিউল ইসলাম জানান, কীটনাশক ব্যবহারের ফলে লেডি বার্ড বিটল নামক বন্ধু পোঁকার বংশ ধ্বংস হবে। এতে ভারসম্য নষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে। কীটনাশক পানির সাথে মিশে জলাশয়ে পড়লে মাছের খাবার প্লাংকটন নষ্ট হবে। কীটনাশকের পরোক্ষ ব্যবহারে কৃষি শ্রমিক হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ রোগে ভুগতে পারে।