গমের ফলন বাড়াতে যা করবেন
কৃষি বিভাগ
গম আমাদের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ফসল। এটি চাষে পানির দরকার হয় কম। হেক্টরপ্রতি পানি লাগে ১৫ একর ইঞ্চি।গমে রোগ-বালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণও কম। ফলে খুব বেশি কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না। তবে গমের ফলন বাড়াতে কিছু করণীয় আছে।
১. উঁচু ও মাঝারি দো-আঁশ মাটিতে গম চাষ ভালো হয়।২. বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বীজ নির্বাচন করতে হবে। ৩. গম উচ্চ ফলনশীল জাতসমূহের বপনের উপযুক্ত সময় নভেম্বর মাসের ১৫-৩০ তারিখ পর্যন্ত।৪. বীজ গজানোর হার ৮০ ভাগ বা তার বেশি হলে প্রতি শতকে আধা কেজি বীজ বপন করতে হবে। ৫. গজানোর হার ৮০ ভাগের কম হলে প্রতি ১ ভাগ কম গজানোর জন্য বিঘাপ্রতি ১৩০ গ্রাম করে অতিরিক্ত বীজ বপন করতে হবে।৬. বপনের আগে প্রতি কেজি বীজের সঙ্গে ৩ গ্রাম হারে প্রোভেক্স-২০০ ডব্লিউ পি মিশিয়ে বীজ শোধন করতে হবে।৭. লাইনে বা ছিটিয়ে গম বীজ বপন করা যায়। ৮. লাইনে বপনের জন্য জমি তৈরির পর ছোট লাঙল দিয়ে ৮ ইঞ্চি দূরে দূরে সারি তৈরি করে ২ ইঞ্চি গভীরে বীজ বপন করতে হয়।৯. স্থানীয় কৃষি অফিস বা মাঠকর্মীর পরামর্শে সঠিক মাত্রায় সার ব্যবহার করতে হবে।১০. উত্তরাঞ্চলের মাটিতে মাঝে মাঝে গমে চিটা দেখা যায়। এর ফলে ফলন কমে যায়। ১১. অনুমোদিত মাত্রায় জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে বিঘা প্রতি ৮০০ গ্রাম বরিক এসিড বা ১ কেজি ৩০০ গ্রাম বোরাক্স প্রয়োগ করে চিটা দূর করা যায়।
১২. বীজ বপনের পর ১০-১২ দিন পর্যন্ত পাখি তাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।১৩. নিয়মমাফিক সেচ ও আগাছা দমনের ব্যবস্থাপ করতে হবে। ১৪. গম ক্ষেতে ধানের মতো ঢালাওভাবে সেচ দেওয়া যাবে না। নালা বা ফিতা পাইপের মাধ্যমে পানি ছিটিয়ে দিতে হবে। ১৫. সঠিক সেচ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলন ৫৮% পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব।
১৬. বপনের ২৫-৩০ দিনের মধ্যে প্রথম সেচের পর একটি নিড়ানি দিলে ফলন প্রায় ১০-১২ ভাগ বাড়ে।১৭. গম ক্ষেতে কখনোই কলা গাছ বা বরইয়ের কাঁটা টানা, মই দেওয়া যাবে না।১৮. গমের প্রধান দুটি রোগ হচ্ছে পাতার মরিচা রোগ ও পাতার দাগ রোগ। এ ছাড়া মাজরা পোকার আক্রমণ দেখা দিতে পারে। ১৯. সঠিক পরামর্শে সঠিক মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করলে রোগ-বালাই দূর করা সম্ভব।
২০. ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ হলে ফাঁদ পেতে, গর্তে পানি ঢেলে বা বিষটোপ দিয়ে ইঁদুর দমন করা যেতে পারে।২১. গম পেকে গেলে বা হলুদ হলে কাটতে হবে। রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে সকালের দিকে কেটে দুপুরে মাড়াই করতে হবে।