গাছ কাটার জরিমানা এক কোটি ২০ লাখ রুপি!
প্রাণ ও প্রকৃতি
মধ্য প্রদেশের একটি জঙ্গলে দুইটি সেগুন গাছ কাটায় নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর এক সদস্যকে এক কোটি ২০ লাখ রুপি জরিমানা করেছে ভারতের বন বিভাগ। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই ধরণের একটি গাছ পরিমাপযোগ্য এবং অপরিমাপযোগ্যতার হিসাবে মানুষকে প্রায় ৬০ লাখ টাকা উপকার দিয়ে থাকে। সেই হিসাবে এই জরিমানা করা হয়েছে।
মধ্য প্রদেশের রাইসেন জেলার সিলওয়ানি গ্রামের বাসিন্দা ছোটে লাল বিহালা (৩০) কে গত ৫ জানুয়ারি দুইটি সেগুন গাছ কাটার সময় শনাক্ত করে বন বিভাগের কর্মীরা। সিংগোরি অভয়ারণ্যের ওই গাছ কাটার অভিযোগে গত ২৬ এপ্রিল তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বামহরি ফরেস্ট রেঞ্জার্স মহেন্দ্র সিং বলেন, ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ফরেস্ট্রি রিসার্চ অ্যান্ড এডুকেশন এর এক জরিপ অনুযায়ী একটি গাছ ৫০ বছরে ৫২ লাখ রুপির স্পর্শনাতীত উপকার দেয়। এর মধ্যে রয়েছে ১১ লাখ ৯৭ হাজার রুপির অক্সিজেন, বাতাস দূষণ নিয়ন্ত্রণে ২৩ লাখ ৬৮ হাজার, ভূমি ক্ষয় রোধের ১৯ লাখ এবং পানি বিশুদ্ধকরণের ৪ লাখ রুপি। এছাড়া গাছটি স্পর্শযোগ্য উপকার দেয় দুই লাখ। এই ভাবে একটি গাছ তার জীবনকালে মানুষকে প্রায় ৬০ লাখ টাকার উপকার দেয়।’
গত ফেব্রুয়ারিতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি সুপ্রিম কোর্টকে জানায় একটি গাছ তার জীবনকালে প্রতিবছর ৭৪ হাজার পাঁচশ’ রুপির উপকার দেয়।
মহেন্দ্র সিং বলেন, ‘গাছের কাছ থেকে যে উপকার পাওয়া যায় তার ভিত্তিতেই জরিমানা করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘ছোটেলাল একজন স্বভাবসুলভ অপরাধী আর স্থানীয়দের অভিযোগ তিনি অবৈধভাবে গাছ ফেলে দিয়ে তা ফার্নিচারের দোকানে বিক্রির সঙ্গে জড়িত।’
তবে ছোটেলালের চাচা ফুল বিহালালা বলেন, ‘আমরা জঙ্গলের গ্রামে বাস করি আর বাড়ি বানাতে উপড়ে পড়া পুরনো গাছ ব্যবহার করি কিন্তু রেঞ্জার্সরা আমাদের হয়রানি করছে।’
ভারতের বন আইন বিশেষজ্ঞ এবং অ্যাডভোকেট বিএল গুপ্ত বলেন, ‘ভারতীয় বন আইন অনুযায়ী অবৈধভাবে গাছ কাটার জন্য পাঁচশ’ রুপি জরিমানা এবং ছয় মাসের কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু রেঞ্জার্সরা একটি জরিপের উল্লেখ করে জরিমানা আরোপ করেছেন। এটা একটা আগ্রহ তৈরিকারী মামলা হতে যাচ্ছে।’
মধ্য প্রদেশের বন বিভাগের মুখ্য বন সংরক্ষক রাজেশ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘আমি রাইসেনের আঞ্চলিক বন কর্মকর্তাকে এই ইস্যুতে একটি প্রতিবেদন পাঠাতে বলেছি কেননা রাজ্যে এটাই এই ধরনের প্রথম কোনও ঘটনা বলেও তিনি বলেন।’