চুয়াডাঙ্গার পানের বাজারে দরপতন, কমছে আবাদ
এগ্রিবিজনেস
চুয়াডাঙ্গার প্রধান অর্থকারী ফসল পান। একসময় চুয়াডাঙ্গার মিষ্টি ও সাচি পানের সুনাম ছিল দেশজুড়ে। এখানকার পান দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হয়ে থাকে। পান চাষে সফলতা পেয়ে চাষীরা স্বাবলম্বীও হয়েছেন। কিন্তু পান উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং লাভের অংকে লোকসান হওয়ায় বাধ্য হয়ে অনেকে পানের আবাদ ছেড়ে দিচ্ছেন। এখন অন্য ফসলে ঝুঁকছেন তারা। নতুন করে বড় দরপতনে পান চাষ নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।
কৃষি বিভাগ বলছে, পানের তুলনায় অন্য ফসলে ভালো লাভ পাওয়ায় অন্যান্য আবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, প্রতি বছরই কমছে পানের আবাদ। ৫ বছর আগে চুয়াডাঙ্গায় ১ হাজার ৭৭৪ হেক্টর জমিতে পানের আবাদ হয়েছিল। এ বছর সে আবাদ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬৩৩ হেক্টর জমিতে। প্রতিবছরই কোনো না কোনো কারণে জেলায় কমছে পান বরজের সংখ্যা। ২০১৮ সালে ১৭৭৪ হেক্টর, ২০১৯ সালে ১৭৩০ হেক্টর, ২০২০ সালে ১৬৭০ হেক্টর, ২০২১ সালে ১৬০৯ হেক্টর ও ২০২২ সালে ১৬৩৩ হেক্টর। অথচ চুয়াডাঙ্গার প্রধান অর্থকারী ফসল এই পান পাতা।
আলমডাঙ্গা উপজেলার খাদিমপুর ইউনিয়নের পানের বাজারে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রির জন্য চাষিরা পান নিয়ে এসেছেন। বাজারে ক্রেতা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। আগের মতো বাইরের বড় ক্রেতা তেমন একটা নেই। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কয়েক সপ্তাহ আগে যে পান প্রতিপণ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়, তা নেমে ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ।
পানচাষিরা জানান, মাটি ও আবহাওয়া পান চাষের জন্য চুয়াডাঙ্গা বেশ উপযোগী। জেলার চার উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে পান চাষ হয়। এই অঞ্চলে সাধারণত দুই জাতের মিষ্টি পান ও সাচি পানের আবাদ করা হয়। আগের মতো যদি পান বিদেশে রপ্তানি করা যায় তাহলে তারা হয়তো আবার লাভের মুখ দেখবেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, অন্য ফসলে পানের চেয়ে ভালো লাভ মেলায় সেদিকে ঝুঁকছেন অনেকে। আধুনিক পদ্ধতিতে পান চাষে আগ্রহী করে তুলতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।