জবির দুই শিক্ষার্থী আবিষ্কার করলো নতুন প্রজাতির ব্যাঙ
ক্যাম্পাস
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী হাসান আল রাজী চয়ন ও ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মারজান মারিয়া মিলে দু‘জনে আবিষ্কার করলেন নতুন প্রজাতির একটি ব্যাঙ।
শনিবার (২৯ মে) তারা দু‘জন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গত বছর জুনে সিলেটের মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে গবেষণার কাজে গিয়েছিলেন তারা। সেখানকার একটি প্রজাতির ব্যাঙকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝতে পারেন, সেটির সঙ্গে আমাদের পরিচিত ব্যাঙের কিছু প্রকৃতিগত পার্থক্য রয়েছে।
এরপর তারা ব্যাঙটিকে নিয়ে বিস্তর গবেষণা শুরু করেন এবং এতে উঠে আসে এটি পুরো বিশ্বে এক ধরনের নতুন প্রজাতি।
নতুন প্রজাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ব্যাঙটির শারীরিক পরিমাপ, মলিকুলার বিশ্লেষণের পাশাপাশি ডাকের বিশ্লেষণও করে দেখেছেন এই দুই গবেষক। সেখান থেকে প্রাপ্ত ফলাফলেও ব্যাঙটি অন্যান্য প্রজাতির চেয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন বলে শনাক্ত হয়েছে। এরপর তারা তাদের গবেষণাপত্রটি ‘জার্নাল অব ন্যাচারাল হিস্টরি’ জার্নালে পাঠানো হয়। যাচাই-বাছাই করে জার্নাল কর্তৃপক্ষ সেটি প্রকাশ করে এবং তাদের আবিষ্কার বিশ্বে স্বীকৃতি যায়।
এ কাজের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও সহযোগিতায় ছিলেন লেমোনোসভ মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটির রুশ প্রফেসর নিক পোয়ার্কভ। প্রাপ্তিস্থান সিলেটের নাম অনুযায়ী তারা ব্যাঙটির নামকরণ করেছেন- লেপটোব্র্যাকিয়াম সিলেটিকাম।
এ বিষয়ে হাসান আল রাজী চয়ন বলেন, নতুন প্রজাতির এই ব্যাঙটি আমাদের দ্বিতীয় আবিষ্কার। নতুন কিছু আবিষ্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে উপস্থাপন করাটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দদায়ক। ইতোমধ্যে আমাদের আরও একটি ব্যাঙ নিয়ে গবেষণা চলছে। যেটা খুব দ্রুতই ঘোষণা হবে। ব্যাঙটি মূলত লাউয়াছড়া বন থেকে পাওয়া।
তিনি আরো বলেন, এর আগেও আমরা ওই বন থেকে একটি ব্যাঙ আবিষ্কার করেছি। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বনটি হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, বিভিন্ন কারণে বনের প্রাণ পানির ছড়াগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। বনের ছড়াগুলো ব্যাঙদের আবাসস্থল, তাই আমাদের ছড়াগুলো রক্ষার্থে এগিয়ে আসতে হবে।
মারজান মারিয়া বলেন, নতুন প্রজাতির এই ব্যাঙ আবিষ্কার করতে পেরে আমরা অনেক খুশি। নতুন এই আবিষ্কার আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা। নতুন কিছু আবিষ্কার করে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে তুলে ধরতে পেরে আমরা গর্বিত। ভবিষ্যতে এমন আরও কাজ করতে চাই।