জয়পুরহাটে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ
কৃষি বিভাগ
জেলায় চলতি ২০২১-২২ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৯‘শ ৮৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৩ শ ৫০ হেক্টর। এতে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৭ হাজার বেল পাট।
স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, সরকারের পাট জাত দ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় পাটের মূল্য বৃদ্ধি, জ্বালানি হিসেবে পাট কাটিকে ব্যবহার ও পাট চাষে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়া এসব কারণে জেলার কৃষকরা পাট চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। পাট চাষ সফল করতে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে রয়েছে হাতে- কলমে চাষিদের প্রশিক্ষণ, উন্নত জাতের পাট বীজ সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় সারের মজুদ সন্তোষজনক পর্যায়ে রাখা সহ অন্যান্য কার্যক্রম।
সূত্রটি আরো জানায়, বিগত এগারো বছরে জেলায় পাট চাষের হিসেবে দেখা যায়, ২০০৯-১০ মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৯“শ ৬৯ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৯৫ হেক্টর। এতে পাট উৎপাদন হয়েছিল ২৩ হাজার ৭শ ৮০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৮শ থেকে ৯শ টাকা মণ। ২০১০-১১ মৌসুমে জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল একই ১ হাজার ৯শ ৬৯ হেক্টর, অর্জিত হয়েছে ৩ হাজার ৬শ ৯২ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার ৯শ ৫ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল বাম্পার ১ হাজার ৫শ টাকা থেকে ২ হাজার ২শ টাকা মণ।
২০১১-১২ মৌসুমে ৩ হাজার ৫শ ৪৫ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৪ হাজার ২শ ৯৪ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৫৩ হাজার ৩শ ৮ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ৮শ থেকে ১ হাজার ২শ টাকা মণ। ২০১২-১৩ মৌসুমে ৩ হাজার ২শ ৪২ হেক্টর জমির বিপরীতে চাষ হয় ৩ হাজার ৩শ ৯৫ হেক্টর এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪৫ হাজার ১শ ১০ বেল। এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১২শ থেকে ১ হাজার ৫শ টাকা মণ। ২০১৩-১৪ মৌসুমে জেলার পাঁচ উপজেলায় ৩ হাজার ৪শ ১৩ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। অর্জিত হয় ২ হাজার ৮শ হেক্টর । এতে পাট উৎপাদন হয়েছিল ২০ হাজার ৮শ বেল।
এ বছর পাটের মূল্য ছিল ১ হাজার ৫শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত। ২০১৪-১৫ মৌসুমে ৩ হাজার হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ২৬ হাজার ৪ শ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২ শ থেকে ১৮ শ পর্যন্ত। ২০১৫-১৬ মৌসুমে ২ হাজার ৯১৫ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯৫০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৮ হাজার ৯ শ ২৭ বেল।
এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১৫‘শ থেকে ১৮‘শ পর্যন্ত , ২০১৬-১৭ মৌসুমে ২ হাজার ৯২৯ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ২ হাজার ৯১০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৩৯ হাজার ২‘শ ৯১ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১৩‘শ থেকে ২ হাজার পর্যন্ত , ২০১৭-১৮ মৌসুমে ২ হাজার ৯১০ হেক্টর জমির বিপরীতে পাট চাষ হয়েছিল ৩ হাজার ১২০ হেক্টর। এতে পাটের উৎপাদন হয়েছিল ৪২ হাজার ৪‘শ ৩২ বেল। এ বছর পাট বিক্রি হয় প্রতিমণ ১২‘শ থেকে ১৮‘শ পর্যন্ত , ২০১৯-২০ মৌসুমে ৩ হাজার ৯৫ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ হাজার ৯০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়। সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৩৯ হাজার বেল পাট।
এ বছর প্রতিমন পাট বিক্রি হয় ১২‘শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত এবং ২০২০-২১ মৌসুমে ৩ হাজার ৯৫ হেক্টর জমির লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৩ হাজার ১৯০ হেক্টর জমিতে পাটের চাষ হয়। সেখানে উৎপাদন হয়েছে ৩৯ হাজার ৫‘শ বেল পাট। এ বছর প্রতিমণ পাট বিক্রি হয় ১৫‘শ থেকে ২ হাজার টাকা মণ পর্যন্ত।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ স ম মেফতাহুল বারি বাসস’কে জানান, চলতি ২০২১-২২ ফসল উৎপাদন মৌসুমে জেলায় ২ হাজার ৯‘শ ৮৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ৩‘শ ৫০ হেক্টর। এবার বৃষ্টিপাত একটু দেরিতে হওয়ায় পাট চাষ এখনও অব্যাহত আছে। চলতি মৌসুমে ৩৭ হাজার বেল পাট উৎপাদন করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।-বাসস