ঠাকুরগাঁওয়ে কমেছে গমের আবাদ
কৃষি বিভাগ
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিবছরই কমছে গমের আবাদ। গম উৎপাদনের জেলা হিসেবে সারাদেশে খ্যাতি থাকলেও এখন এ জেলায় কমেছে ফসলটির আবাদ। কৃষকরা জানান, প্রতিবছর লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের। এতে গম ছেড়ে অন্য ফসলের দিকে ঝুকছেন তারা। ২০২১-২২ মৌসুমেও গম চাষের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়নি। ফলে কৃষকদের গম চাষে ফেরানোর চেষ্টা করছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় ৫ বছরে গম চাষ কমেছে ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে। এই জেলায় ২০১৬-১৭ সালে ৬৭ হাজার ৮২০ হেক্টর, ২০১৭-১৮ সালে ৬১ হাজার হেক্টর, ২০১৮-১৯ সালে ৫০ হাজার ২২০ হেক্টর, ২০১৯-২০ সালে ৫০ হাজার ৬৫০ হেক্টর, ২০২০-২১ সালে ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর, ২০২১-২২ সালে ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে গম চাষ করেন কৃষকরা।
সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের খোচাবাড়ী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এক সময় যেসব জমিতে কৃষকেরা গম চাষ করতেন ওই সব জমিতে এখন ভুট্টা, মরিচ, আলুসহ লাভজনক ফসল চাষে ঝুঁকছেন গমচাষিরা।
জগন্নাথপুর ইউনিয়নের বিলপাড়া গ্রামের রহিম উদ্দিন বলেন, ‘এক কাঠা জমিতে গমের আবাদে খরচ পড়ে ৯০০ টাকা। আবার ওই এক কাঠা জমিতে আলু বিক্রি করে ১ হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যায়। তাই গম চাষ বাদ দিয়েছি।’
সদর উপজেলার গম চাষি গণি মিয়া অভিযোগ করেন, ‘সরকারের গম সংগ্রহের সময় কৃষকেরা সরকারি গোডাউনে গম দিতে পারে না। সরকার গমের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করলেও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের জন্য কৃষকেরা এর সুফল পায় না। তাই গম চাষে আগ্রহ তেমন নাই।’
গাঙ্গর এলাকার চাষি নুর ইসলাম বলেন, ‘বাজারে গমের ভালো বীজ পাওয়া যায় না।’
বিএডিসি চুক্তিবদ্ধ বীজ ডিলার ও ঠাকুরগাঁও শহরের মা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী রফিকুজ্জামান বলেন, ‘গমের বীজ গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কম বিক্রি হচ্ছে। যে ফসলে কৃষকেরা লাভবান হচ্ছেন সেই ফসলই বেশি আবাদ করছেন। এতে করে আমরা ডিলাররাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আবু হোসেন বলেন, ‘এ বছর জেলায় ৪৭ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু আবাদ হয়েছে ৪৫ হাজার ১৯২ হেক্টর জমিতে। ফলে ২০২১-২২ মৌসুমেও গম চাষের লক্ষ্যমাত্রাও অর্জিত হয়নি। আমরা কৃষকদের গম চাষে ফেরানোর জন্য চেষ্টা করছি।’