দুটি ইউরোপিয়ান সিল্কি মুরগি দিয়ে শুরু করে লাখপতি জয়
পোলট্রি
পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে শখের বসেই দুটি ইউরোপিয়ান সিল্কি মুরগি কিনে বাড়ির ছাদে পুষতে শুরু করেছিলেন সাতক্ষীরা পৌরসভার মুনজিতপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে সুজন হাসান জয়। প্রথমে খাপ খাওয়াতে একটু কষ্ট হলেও পরবর্তীতে শখের মুরগি পালন থেকেই আয়ের পথ খুলে যায় জয়ের।
ইউরোপিয়ান সিল্কির পাশাপাশি তার খামারে রয়েছে, ইউরোপিয়ান ব্রামা, কোচিন, ফিজেল, নেদারল্যান্ডের পলিশক্যাপ, সেভরাইট, হোয়াইট ফেস, মালয়েশিয়ার সেরমা, ভারতীয় কোসামোসহ ২০ প্রজাতির মুরগি।
ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানো ইনকিউবেটর মেশিনও বসিয়েছেন তিনি। বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির মুরগির ডিম থেকে ফুটানো বাচ্চা বিক্রি করেই মাসে ২০-৩০ হাজার টাকা বাড়তি আয় করছেন সুজন হাসান জয়।
জয় জানান, অনার্স দ্বিতীয় বর্ষেই পড়াশোনায় ইতি টেনেছেন। অন্যান্যদের তুলনায় একটু আগেই বিয়ে করায় যোগ দেন একটি এনজিওতে। কিন্তু আগে থেকেই মুরগি পালনের শখ ছিল। তাই ২০১৬ সালের দিকে নিজের গোছানো টাকা দিয়েই দুটি ইউরোপিয়ান সিল্কি জাতের মুরগি কেনেন। মুরগি দুটি ডিম দিতে শুরু করলে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। এরপর একে একে ইউরোপিয়ান ব্রামা, কোচিন, ফিজেল, নেদারল্যান্ডের পলিশক্যাপ, সেভরাইট, হোয়াইট ফেস, মালয়েশিয়ার সেরমা, ভারতীয় কোসামোসহ অন্তত ২০ প্রজাতির মুরগি সংগ্রহ করেন। এরই মধ্যে অনলাইনে তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে মুরগির বাচ্চা বিক্রি শুরু হয়। উপার্জিত অর্থ দিয়েই ইনকিউবেটর যন্ত্র কেনাসহ খামারের যাবতীয় খরচ বের করেছেন তিনি।
প্রথমে তাকে বাড়ি থেকে সাপোর্ট করতো না। কিন্তু যখন বুঝলো এটা লাভজনক, তখন আর কেউ বাধা তো দেয়নি, বরং উৎসাহ দেয় হয় বলে জানান।
জয় আরও জানান, খামারে মুরগির খাবার, ওষুধপত্র ও বিদ্যুৎ বিল দিয়ে মাসে খরচ হয় ১২-১৫ হাজার টাকা। এই খরচ বাদ দিয়েও মাসে গড়ে ২০-৩০ হাজার টাকা আয় হয়। এখন জয়ের খামার থেকে রাজধানী ঢাকাসহ বগুড়া, বরিশাল, খুলনা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রামের সৌখিন খামারিরা বিদেশি জাতের মুরগি কিনে নিয়ে যান।
এক জোড়া মুরগির বাচ্চা প্রজাতি ভেদে দেড় হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। এছাড়া প্রাপ্ত বয়স্ক মুরগির জোড়া প্রজাতি ভেদে ৫ হাজার টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়।
বিদেশি জাতের মুরগি পালনে প্রথমে খাপ খাওয়াতে একটু কষ্ট হলেও তা সম্ভব উল্লেখ করে সুজন তিনি আগ্রহী যুবকদের উদ্দেশ্যে বলেন, এখন অনেকেই বাড়িতে বাণিজ্যিকভাবে কবুতর ও পাখি পালন করছেন। ঠিক একইভাবে বিদেশি জাতের মুরগিও বাণিজ্যিকভাবে পালন ও তা থেকে বাড়তি আয় করা সম্ভব বলে জানান।