১২:২৫ অপরাহ্ন

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • ধানের ব্লাস্ট রোগ ও তার প্রতিকার
ads
প্রকাশ : মে ২, ২০২১ ৫:৪০ অপরাহ্ন
ধানের ব্লাস্ট রোগ ও তার প্রতিকার
কৃষি গবেষনা

ধান বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী খাদ্যশস্য।  আমাদের দেশে আউশ, আমন,  বোরো এই তিন মৌসুমে ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ধান উৎপন্ন হয় বোরো মৌসুমে।  কিন্তু এ মৌসুমে দেশের বিভিন্ন জেলায় বোরো ধানের জমিতে ছত্রাকজনিত ‘ব্লাস্ট’ রোগ ব্যাপক আকারে দেখা দেয় । এ কারণে ধানের শীষ শুকিয়ে চিটা হয়ে যাচ্ছে। ধানের রোগগুলোর মধ্যে অন্যতম “ব্লাস্ট রোগ” ধানের মহামারী সৃষ্টি করে, জমির সব ফলস নিমিষেই শেষ করে দেয়, সঠিক সময় সঠিক পদক্ষেপ গ্রহন করতে না পারলে জমির সব ধান এ রোগের প্রাদুর্ভাবে নষ্ট হয়ে যায়।

 

বিশেষজ্ঞদের ধারণা ব্লাস্ট রোগের মহামারীর প্রধান কারণ বিরুপ আবহাওয়া। দিনে অধিক তাপমাত্রা, রাতের নিম্ন তাপমাত্রা, সকালের কুয়াশা ও শিশির, মৃদু বাতাস, ইউরিয়া সার বেশি ব্যবহার, পটাশ সার কম দেয়াসহ অধিক আদ্রতার কারণে ওই ছত্রাকের প্রকোপ বাড়ে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

 

রোগের ধরনঃ

 

সাধারণত তিন ধরনের ব্লাস্ট রোগ দেখতে পাওয়া যায়। যথাঃ পাতা বা লিফ ব্লাস্ট, গিঁট বা নোড ব্লাস্ট এবং নেক বা শীষ ব্লাস্ট। এই তিন ধরনের ব্লাস্ট রোগের মধ্যে নেক বা শীষ ব্লাস্ট সবচেয়ে বেশি ক্ষতিকর। “পাইরিকুলারিয়া ওরাইজি” নামক এক ধরনের ছত্রাকের আক্রমণে এই রোগের বিস্তার ঘটে।

 

১. লিফ ব্লাস্টের আক্রমণে ধান গাছের পাতায় শুরুতে চোঁখের মতো ছোট ছোট  দাগ দেখা যায় এবং আক্রমণের মাত্রা প্রকট হলে অনেকগুলো দাগ একত্রিত হয়ে সম্পূর্ণ পাতা পুড়ে যাওয়ার মত হয়। লিফ ব্লাস্টের কারনে পাতায় খাদ্য তৈরি ব্যহত হয়।

 

২. নোড বা গিঁট ব্লাস্টের কারণে গাছের গিটসমূহে পচঁন ধরে, আক্রান্ত স্থানে গাছটি ভেঙে যায় এবং গিঁটের উপরের অংশ শুকিয়ে যায়।

 

৩. নেক ব্লাস্টের আক্রমণ ধানের শীষ বের হওয়ার পর দেখা যায়। সাধারণত শীষের গোড়ায় পঁচন ধরে। ফলে খাবার ও পুষ্টি উপাদান ধানে যেতে পারে না এবং ধান চিটা হয়। এ রোগের আক্রমণে সম্পুর্ন জমির ফসল নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

 

রোগ প্রতিরোধঃ

কৃষিবিদরা রোগ প্রতিরোধে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছেন,

 

১. ধানের কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘাপ্রতি প্রায় পাঁচ কেজি পটাশ সার অতিরিক্ত প্রয়োগ করে জমিতে সেঁচ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়।

২. ধানের থোড় আসার পর একবার এবং ফুল আসার পর আবার ছত্রাকনাশক স্প্রে করলেও রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

৩. এছাড়াও রোগ প্রতিরোধে ট্রাইসাইকাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশক যেমন- ট্রপার ৭৫ ডব্লিউপি বা জিল ৭৫ ডব্লিউপি প্রতিলিটার পানিতে ০.৮১ গ্রাম অথবা (টেবুকোনাজল ৫০% + ট্রাইফ্লুক্সিট্রোবিন ২৫%) জাতীয় ছত্রাকনাশক যেমন- নাটিভো ৭৫ ডব্লিউপি ১০ লিটার পানিতে ৭.৫ গ্রাম মিশিয়ে বিকেলে স্প্রে করা। অথবা এ রোগের জন্য অনুমোদিত অন্য যেকোনো ছত্রাকনাশক যেমন ফিলিয়া, স্টেনজা, কারিশমা, নোভা, টু ইন ওয়ান প্রভৃতি অনুমোদিত মাত্রায় স্প্রে করতে হবে। তবে ধানের নেক ব্লাস্টের জন্য ট্রাইসাইকাজল গ্রুপের ছত্রাকনাশকের কার্যকারিতা অধিক পরিলক্ষিত হয়।

 

পরবর্তী বছরগুলোতে যেন এ রোগের বিস্তার ঘটাতে না পারে সে জন্য রোগটি প্রতিরোধে কৃষিবিদরা নিম্নোক্ত পরামর্শগুলো প্রদান করেনঃ

 

১. ধান কাটার পর ধানের নাড়া-খড়কুটো জমিতেই পুড়িয়ে ফেলতে হবে

২. আক্রান্ত জমির ফসল থেকে বীজ সংগ্রহ করা থেকে বিরত থাকা

৩. সবসময় পরিশোধিত বীজ ব্যবহার করা

৪. অতি মাত্রায় ইউরিয়া সার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা

৫. পটাশ সার যথাযথ মাত্রায় ব্যবহার করা

৬. জমির মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখতে সবসময় পানি রাখার ব্যবস্থা করা।

লেখকঃ

মামুনার রশীদ

শিক্ষার্থী

কৃষি অনুষদ,

হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দিনাজপুর।

মোবাইল নংঃ 01755225212

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop