বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষে লাভবান শরীয়তপুরের চাষিরা
এগ্রিবিজনেস
শরীয়তপুরে বাণিজ্যিকভাবে মধু চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর শরীয়তপুরে ৭৮টি ভ্রাম্যমাণ মৌচাষির দল এসেছে। মধু চাষ করে নিজেরাই সামলম্বী হচ্ছেন না, অবদান রাখছেন অর্থনীতিতেও। মৌখামার ঘিরে কর্মসংস্থানের সুযোগও তৈরি হয়েছে অনেক বেকার যুবকের। মধু কিনতে মৌচাষির কাছে আসেন দেশি-বিদেশি ক্রেতা। দরদাম করে মধু কিনে নিয়ে যান তারা। তবে মধুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ খামারিদের। ন্যায্য দাম পেলে এ শিল্প জাতীয় অর্থনীতিতে অনেক অবদান রাখবে বলে মনে করেন খামারিরা।
শরীয়তপুরের মাঠে মাঠে এখন কালোজিরা আর ধনিয়ার মতো মসলা জাতীয় ফসলে ভরে উঠেছে। মাঠজুড়ে সাদা ফুল বাতাসে দোল খায়। বিচরণ করছে মৌমাছির দল। বসছে ফুলে, করছে মধু আহরণ। ফসলি মাঠের পাশে অস্থায়ীভাবে অবস্থান নিয়েছেন মৌচাষিরা। বসিয়েছেন সারি সারি মৌবাক্স। প্রতিটি বাক্সে একটি করে রানি মৌমাছিসহ কয়েক হাজার কর্মী মৌমাছি বসবাস করে। তারা ছুটে যায় ফসলি মাঠে। ফুল থেকে আহরণ করেছে ফুলের নির্যাস। মৌমাছির সেই নির্যাস বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে রূপান্তরিত হয় ঘন মধুতে।
মৌচাষিরা ১০ থেকে ১৫ দিন পর পর বাক্সের ফ্রেমগুলো থেকে নিষ্কাশন যন্ত্রের সাহায্যে মধু সংগ্রহ করেন। সংগৃহীত মধু হাতের স্পর্শ ছাড়াই সম্পূর্ণ মেশিনের সাহায্যে বের করা হয়। এরপর তা মজুত রাখা হয় বিভিন্ন আকারের কনটেইনারে। তারপর মাঠ থেকেই সরাসরি ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করেন মধু।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, শরীয়তপুরে ৫ হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ধনিয়া ও ৩ হাজার ৬৮০ হেক্টর জমিতে কালোজিরা আবাদ হয়েছে। এসব ফসলি মাঠের পাশে ৯ হাজার ৪৪০টি মৌবাক্স বসানো হয়েছে। এতে ৫৫ টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা আছে। যার বাজারমূল্য প্রতি কেজি ৮০০ টাকা দরে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা।
শরীয়তপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মৌ বিশেষজ্ঞ কৃষিবিদ মো. নাজমুল হুদা বলেন, ‘এ শিল্পকে এগিয়ে নিতে শুধু মধু নয়, বিশেষ চারটি উপাদান সংগ্রহ করা যায়। তার প্রক্রিয়াগত জ্ঞান অর্জন ও প্রয়োগের মাধ্যমে খামারিদের সমৃদ্ধ এবং পৃষ্ঠপোষকতা দিলে মধু শিল্প থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’