বিদ্যুতের ফাঁদে মেছো বিড়ালের মৃত্যু
প্রাণ ও প্রকৃতি
বুধবার (১৭ নভেম্বর) দিবাগত রাতে উপজেলার ধুরিয়াল গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান ধানক্ষেতে পাতা ফাঁদে মেছো বিড়ালটির মৃত্যু হয়।
কৃষক আতাউর রহমান জানান, তার বসতবাড়ির পাশের নির্জন ধানক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ ঠেকাতে বৈদ্যুতিক ফাঁদ পাতা হচ্ছিল। ওই ফাঁদেই মেছো বিড়ালটির মৃত্যু হয়েছে।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা বন বিভাগের কর্মকর্তা। এ সময় বিদ্যুতের ফাঁদে জড়ানো অবস্থায় মৃত মেছো বিড়ালটি দেখতে পান তারা।
এদিকে ধানক্ষেতে বিদ্যুতের ফাঁদে মেছো বিড়ালের মৃত্যুর খবরে দুঃখ প্রকাশ করে বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা বলেন, এই সময়টাতে পাকা ধানের ক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণ হয়। আর মেছো বিড়ালটি ইঁদুর শিকারেই ধানক্ষেতে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, মেছো বিড়ালকে (Fishing Cat) অনেক এলাকায় মেছোবাঘ নামেও ডাকে। এর প্রকৃত নাম মেছো বিড়াল। বাঘ নামে ডাকার কারণে শুধু শুধু আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রাণীটি মানুষকে আক্রমণ করে না, বরং মানুষ দেখলে পালিয়ে যায়। তাই এটি নিয়ে ভীত হওয়ার কিছু নেই। বাংলাদেশের প্রায় সর্বত্রই এই প্রাণীটি বিচরণ রয়েছে। জলাভূমি আছে এমন এলাকায় বেশি দেখা যায়। প্রাণীটি জলাভূমির মাছ, ব্যাঙ, কাঁকড়া ছাড়াও পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। জনবসতি স্থাপন, বন ও জলাভূমি ধ্বংস, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে বিগত কয়েক দশকে এই প্রাণীটির সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ২০০৮ সালে মেছো বিড়ালকে বিপন্ন প্রাণী প্রজাতির তালিকায় অর্ন্তভুক্ত করেছে আইইউসিএন। তাছাড়া বন্যপ্রাণী আইন-২০১২ অনুযায়ী এই প্রজাতি সংরক্ষিত। তাই এটি শিকার, হত্যা বা এর কোনো ক্ষতিকরা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।