বিষমুক্ত লাউ চাষে তাক লাগিয়েছেন আব্দুস শহীদ
কৃষি বিভাগ
হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার আলাপুরের কৃষক আব্দুস শহীদ। তিনি এ বছর প্রায় ৫২ শতক জমিতে উন্নতজাতের লাউ চাষ করেছেন। চাষে ব্যবহার করেছেন গোবর ও অল্প পরিমাণে সার। বীজ রোপণের দেড় মাস পর থেকে গাছে গাছে ফুল আসে। তিনি শুরু থেকে এ পর্যন্ত লাউ বিক্রি থেকে পেয়েছেন প্রায় ৫২ হাজার টাকা। বাকি সময়ে আরও ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আসবে বলে ওই কৃষক আশাবাদী। শুরু থেকে এ পর্যন্ত লাউ চাষে তার খরচ হয়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা।
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালের ডাক্তার মিঠুন রায় জানান, লাউয়ের ৯৬ শতাংশই পানি। ফলে নিয়মিত লাউ খেলে শরীরে পানির ঘাটতি পূরণ হয়। লাউ রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। লাউয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা হার্টের জন্য উপকারী। জন্ডিস ও কিডনির সমস্যায়ও খেতে পারেন লাউ। লাউয়ে খুব কম পরিমাণে ক্যালরি ও প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে। এটি ওজন কমাতেও সাহায্য করে।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী সবজি লাউ। এতে রয়েছে দ্রবণীয়, অদ্রবণীয় ফাইবার ও পানি। দ্রবণীয় ফাইবার খাবার সহজে হজম করতে সাহায্য করে। লাউ খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য, পেট ফাঁপা ও অ্যাসিডিটির সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। লাউ পাতার তরকারি মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখে, ঘুমে সমস্যার সমাধান করে ও দেহের তাপমাত্রাও নিয়ন্ত্রণ করে। ইউরিন ইনফেকশনে খুব উপকারী লাউ। তাই ব্যাপক পরিমাণে লাউ চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. তমিজ উদ্দিন খান জানান, তেমন ঝুঁকি না থাকায় হবিগঞ্জের স্থানে স্থানে লাউ চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের উৎসাহ পেয়ে কৃষকরা লাউ চাষে আগ্রহী হয়েছেন। এ কারণে বাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে লাউ। এটি শীতের সবজি হলেও এখন সারা বছরই ফলে। এই সবজি পুষ্টিগুণে ভরপুর। চিংড়ি দিয়ে লাউ বেশ সুস্বাধু। ডাল দিয়েও খাওয়া যায় এই সবজি। আবার অনেকে টাকি মাছ দিয়ে খান। লাউয়ের খোসা শুটকি দিয়ে খাওয়া যায়। যেভাবেই খান না কেন, লাউ শরীরের জন্য বেশ উপকারী। পুষ্টিগুণে ভরপুর লাউ চাষ করে কৃষক আব্দুস শহীদ সফল। এ কারণে ভালো লাগছে।