মৎস্য চাষিদের জন্য আফতাব নিয়ে এলো ডিজিটাল অ্যাপস ও কল সেন্টার
এগ্রিবিজনেস
দেশের মৎস্য খামারীদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করলো আফতাব ডিজিটাল অ্যাপস্ ও কল সেন্টার । ফলে ডিজিটাল বাংলাদেশে এক নব দিগন্তের সূচনা করলো দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান আফতাব ফিড প্রোডাক্টস্ লি:। ইউএসএআইডি এর অর্থায়নে এবং ওয়ার্ল্ড ফিশ লিঃ ও আফতাব ফিড প্রোডাক্টসের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্পটি চালু হলো। শনিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর বনানীতে এক রেস্টুরেন্টে আফতাব ডিজিটাল অ্যাপস্ ও কল সেন্টার এর শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয় । এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস আফরোজ। আফতাব বহুমুখী ফার্মস লিমিটেড এর সিনিয়র ম্যানেজার (এডমিন অ্যান্ড কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স) মো. মামুনুর রহমান এর সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয় ।
এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য নিয়ে আসেন আফতাব ফিড প্রোডাক্টস্ লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান । বক্তব্যের শুরুতেই তিনি ইসলাম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান জনাব জহুরুল ইসলামকে স্মরণ করেন । তিনি বলে- জহুরুল ইসলাম মনে করতেন কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে তাই যুগের চাহিদার সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল সেবাই পারবে খামারিদের অবস্থার উন্নয়ন ঘটাতে, খামারিগণ এই অ্যাপস ও কল সেন্টার থেকে সেবা গ্রহন করতে পারবেন, এতে দেশে বড় একটি বৈপ্লপবিক পরিবর্তন ঘটবে, অপ্রয়োজনীয় মধ্যস্বত্ত্বাভোগী হ্রাস পাবে ফলে লাভবান হবেন খামারি ও পরিবেশকগণ । জনাব আবু লুৎফে ফজলে রহিম খান আরোও বলেন, অ্যাপসের মাধ্যমে দেশের যে কোন প্রান্তের খামারি অনলাইনে ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পরামর্শ পাবেন আবার মাছের খাদ্যের অর্ডারও অনলাইনে করতে পারবেন আবার কল সেন্টারে ফোন দিয়ে মাছের খামারের যেকোন সমস্যায় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারবেন, ফলে খামারিগণ অত সহজেই লাভবান হতে পারবেন ।
উল্লেখ্য, আফতাব ডিজিটাল অ্যাপস্ তৈরী করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক আইটি প্রতিষ্ঠান সোর্স ট্রেস যারা বিশ্বের ৩৮ টি দেশে কাজ করছেন আর কল সেন্টারের সেবা দিচ্ছে এগ্রো সলিউশন । সোর্স ট্রেস-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মো: রেশাদ আলম বলেন, দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মৎস্য খামারিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত সমস্যার সমাধানের ভিত্তিতেই অ্যাপসটি বানানো হয়েছে, এতে করে সাপ্লাই চেইন ছোট হবে, খামারিদের পরিবেশকদের প্রতি নির্ভরতা কমে আসবে, খামারিগণ লাভবান হবেন । এগ্রো সল্যুশন এর সিইও এবং একুয়াটিক এনিম্যাল নিউট্রিশনিষ্ট ও কনসালট্যান্ট মি: অং থোয়েন বলেন, আমাদের একটি টিম খামারিদের সাথে কথা বলবে, আরেকটি তিম কোয়ালিটি অনুযায়ী খামারি সার্ভিস পাচ্ছে কিনা সেটা নিশ্চিতে কাজ করবে, অন্য টিম কাজ করবে আরএনডি নিয়ে, অপর টিম থাকবে রিপোর্টিং এর দায়িত্বে । পুরো টিমিটাই সাজানো হয়েছে ফিশারিজ গ্রাজুয়েট দের নিয়ে ফলে খামারিগণ সর্বোত্তম সেবা পাবেন ।
আফতাবের এ ধরনের ডিজিটাল উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন ইউএসএআইডিএর ইকোনোমিক গ্রোথ অফিসার প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট স্পেশালিষ্ট মোহাম্মদ সাঈদ শিবলি ও ওয়ার্ল্ড ফিশ এর চীফ অব পার্টি (কপ) ড. মঞ্জুরুল করিম। বক্তাগণ বলেন, দেশের মৎস্য চাষীগণের জন্য নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো, চাষীদের উৎপাদন বাড়বে, সর্বোপরী লাভবান হবেন ।
প্রধান অতিথি কাজী শামস আফরোজ বলেন, দেশের মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধিতে মৎস্য অধিদপ্তর কাজ করে যাচ্ছে, মৎস্য খাতের প্রবৃদ্ধি ৫.৭৪%, দেশের ১২ শতাংশ লোক এই খাতের সাথে জড়িত , নিরাপদ মাছ উৎপাদনে মৎস্য অধিদপ্তর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে, আফতাব বহুমুখী ফার্মস মানসম্মত মাছের খাবার তৈরী করছে যা আগামীতেও অব্যাহত রাখতে হবে, অ্যাপস ও কল সেন্টারের মাধ্যমে প্রাইভেট সেক্টরের দরজা খুলে গেল, অন্যদেরও এগিয়ে আসা উচিত, সর্বোপরী আফতাবকে ধন্যবাদ ও শুভকামনা জানাই এই উদ্যোগের জন্য ।
সবশেষে, আফতাব ফিড প্রোডাক্টস্ লি: এর নির্বাহী পরিচালক জনাব এটিএম হাবিবুল্লাহর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে । অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, গবেষক, ইউএসএআইডি, ওয়ার্ল্ড ফিশ এবং আফতাব ফিড প্রডাক্টস-এর কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, অ্যাপসটি গুগল প্লে স্টোর থেকে যে কেউ বিনামূল্যে ইনস্টল করতে পারবেন ।