শখের কোয়েল পাখি পালনে স্বাবলম্বী সজিব
প্রাণিসম্পদ
নিজ পেশায় দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শখে কোয়েল পাখি এর খামার ও হ্যাচারি গড়ে বার্ষিক দুই লক্ষাধিক টাকা বাড়তি আয় করছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ায় সজিব আহমেদ নামে এক যুবক। ক্রমান্বয়ে খামারের প্রসার ঘটছে। উপজেলার জামনগর ইউনিয়নের কৈপুকুরিয়া গ্রামের পাশে একটি বিশাল আম বাগানে গড়ে উঠেছে কোয়েল পাখির খামার ও হ্যাচারি। দুটি টিন সেডে শোভা পাচ্ছে ৪ সহস্রাধিক কোয়েল পাখি। খামারটি পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখরিত। মালিককে পেয়ে খাবার আশায় ছুটাছুটি করছে পাখিগুলো।
কৈপুকুরিয়া গ্রামের সজিব আহমেদ খামার ও হ্যাচারির মালিক। তিনি প্রায় ৪ বছর আগে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কম্পিউটারে অনলাইনে কাজ করার পাশাপাশি শখের বশে অল্প পরিসরে সজিব এগ্রো নামে একটি ছোট্ট কোয়েল পাখি এর খামার গড়ে তুলেন। তিনি প্রথমে তিনি ৩ হাজার টাকা মূলধন নিয়ে ১৭০টি কোয়েলের বাচ্চা ক্রয় করেন। ক্রমান্বয়ে খামারের প্রসার ঘটতে থাকে। অল্পদিনের মধ্যে খামারের পাশে একটি কোয়েল পাখির হ্যাচারিও গড়ে তোলেন।
বর্তমানে একটি শেডে ৪ সহস্রাধিক কোয়েল পাখি রয়েছে। এরমধ্যে ২ সহস্রাধিক ডিমপাড়া যোগ্য কোয়েল পাখি রয়েছে। এগুলো প্রতিদিন পুষ্টিগুণ সম্পুর্ণ ১৪ শতাধিক ডিম দেয়। ডিমপাড়া যোগ্য প্রতিটি কোয়েল পাখি বছরে ২৮০ থেকে ৩শ’ ডিম দেয়। প্রতিটি ডিম ১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ২ টাকায় বিক্রি হয়।
অপরদিকে, অন্য শেডে রয়েছে তার নিজস্ব হ্যাচারি। সেখানেই ইনকিউবেটর মেশিনের মাধ্যমে ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানো হয় এবং বাচ্চাকে কৃত্রিমভাবে তাপ দেওয়া হয়। এ কৃত্রিম তাপ দেওয়াকে ব্রুডিং বলে। ইনকিউবেটর মেশিনে ডিম দেওয়ার ১৭/১৮ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফোটে। ফোটানো বাচ্চাগুলোকে দুই সপ্তাহ কৃত্রিমভাবে তাপ দেওয়া হয়। এখানে প্রতিমাসেই ইনকিউবেটর মেশিনে ৮ হাজার থেকে ৯ হাজার বাচ্চা ফোটানো হয়। তিনি উৎপাদিত ডিম ও ফোটানো বাচ্চাগুলো বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করেন। বিভিন্ন এলাকার অসংখ্য বেকার যুবক এ কাজে সম্পৃক্ত হয়ে ক্রমান্বয়ে সফলতা অর্জন করছেন।
এখানে একদিন বয়সী প্রতিটি বাচ্চা ৫/৬ টাকায় বিক্রয় করা হয়। এক মাস বয়সী মানুষের খাবার যোগ্য প্রতিটি পাখির মূল্য নেওয়া হয় ২৫/৩০ টাকা। কোয়েলপাখি ৪০/৫০দিন বয়সে ডিম দিতে শুরু করে। ডিম পাড়া যোগ্য প্রতিটি কোয়েল পাখি মূল্য ৪৫/৫০ টাকা নেওয়া হয়।
সজিব আহমেদ জানান, পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি শখে কোয়েল পাখির খামার ও হ্যাচারি গড়ে তুলেছেন। বেকার যুবকরা এ কাজে সম্পৃক্ত হলে সংসারে সফলতা অর্জনে সক্ষম হতে পারবেন। তিনি প্রতি বছর তার খামার ও হ্যাচারি থেকে ২ লক্ষাধিক টাকা বাড়তি আয় করেন।
আরো পড়ুনঃ ডিম, মুরগি ও ১ দিন বয়সী বাচ্চার সর্বশেষ (বৃহস্পতিবার , ০৫ জানুয়ারি)পাইকারি দাম