হাঁস পালনের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি
প্রাণিসম্পদ
চাষের পাশাপাশি হাঁস পালন আপনার জন্য সেরা বিকল্প হতে পারে। আসলে হাঁস পালনে কৃষকরা কম খরচে দ্বিগুণ লাভ পেতে পারেন। হাঁস পালনে খামারিদের বেশি পরিশ্রম করতে হয় না। কারণ চাষিরা ছোট পুকুর, ধান ও ভুট্টা ক্ষেতেও সহজেই এগুলো লালন-পালন করতে পারে। হাঁস পালনে খরচ খুবই কম এবং লাভ অনেক বেশি। আপনি যেখানে হাঁস পালন করছেন সেখানে আর্দ্র জলবায়ু থাকা উচিত। হাঁস পালনের জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এমন পরিস্থিতিতে হাঁস পালন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-
হাঁস পালন শুরু
হাঁস পালনের জন্য খামারিদের নিরিবিলি জায়গা বেছে নিতে হবে। এই জায়গাটি পুকুরের কাছে হলে খুব ভালো হয়। যাতে হাঁসগুলো পুকুরে সাঁতার কাটতে পারে। হাঁস পালনের স্থানে পুকুর না থাকলে প্রয়োজন অনুযায়ী পুকুর খনন করতে হয়।অধিক লাভের জন্য চাষীরা পুকুরে হাঁসের পাশাপাশি মাছ চাষও করতে পারেন। পুকুরের জন্য শেড লম্বা ও চওড়া হতে হবে। এ ছাড়া একটি শেড থেকে আরেকটি শেডের দূরত্ব যেন ২০ ফুটের কম না হয়।
হাঁসের যত্ন
হাঁসের মুরগির তুলনায় কম যত্ন প্রয়োজন। কারণ হাঁসে রোগের প্রভাব খুব কম দেখা যায়। তবে হাঁসের মধ্যে হাঁসের ফ্লু বেশি হয়, যার কারণে তাদের জ্বর হয় এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা না করালে তারা মারা যায়। এটি প্রতিরোধ করার জন্য, হাঁসকে অবশ্যই হাঁসের ফ্লু ভ্যাকসিন দিতে হবে। এছাড়াও শেড এবং তাদের থাকার ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করতে থাকুন। দুই থেকে তিন মাসের ব্যবধানে শেডে কীটনাশক স্প্রে করতে ভুলবেন না।
হাঁসের খাবার
হাঁসের সঠিক বিকাশ নিশ্চিত করতে, তাদের শুকনো খাবার খাওয়াবেন না। কারণ শুকনো খাবার হাঁসের গলায় আটকে যায়। তাই হাঁসের খাবারে চাল, ভুট্টা ও ভুষি সামান্য ভেজে দিন। এছাড়া হাঁসকে শামুক ও মাছ খেতেও দিতে পারেন। যাতে ভালোভাবে বিকাশ হয়।
হাঁস পালনে খরচ ও আয়
একটি হাঁস বছরে ২০০ থেকে ৪০০টি ডিম পাড়ে যা মুরগির ডিমের চেয়ে অনেক বেশি। একই সঙ্গে বাজারে হাঁসের ডিমের দাম প্রায় ৮-১০ টাকা। এ ছাড়া বাজারে হাঁসের মাংসের ভালো দাম পান চাষীরা। এমতাবস্থায় হিসাব করলে দেখা যায়, এক হাজার হাঁসের বাচ্চার জন্য খামারিদের বার্ষিক খরচ হয় প্রায় এক লাখ টাকা আর লাভের কথা বললে বার্ষিক লাভ হয় প্রায় তিন থেকে চার লাখ টাকা।