৩:২৮ অপরাহ্ন

রবিবার, ২২ ডিসেম্বর , ২০২৪
ads
ads
শিরোনাম
  • হোম
  • সাধারণ ধানকে সুগন্ধি জাতে রূপান্তরের জিন প্রয়োগে সফল হয়েছে ‘ব্রি’ বিজ্ঞানীরা
ads
প্রকাশ : ডিসেম্বর ১২, ২০২১ ৬:৪০ অপরাহ্ন
সাধারণ ধানকে সুগন্ধি জাতে রূপান্তরের জিন প্রয়োগে সফল হয়েছে ‘ব্রি’ বিজ্ঞানীরা
কৃষি গবেষনা

বাংলাদেশে ক্রিসপার কাস-৯ পদ্ধতিতে ধানের জিন পরিবর্তন করে সাধারণ ধান থেকে সুগন্ধি চাল তৈরি ও রোগ প্রতিরোধী জাত উৎপাদনে জিন প্রয়োগে প্রথম সফল হয়েছেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)’র বিজ্ঞানীরা। এটি ফসলের জিন পরিবর্তন করার একটি আধুনিক প্রযুক্তি। এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফসলের কাঙ্খিত গুণাগুণ যোগ করে নতুন জাত উদ্ভাবন করা যায়।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও কীটতত্ত্ববিদ ড. পান্না আলী জানান, পরীক্ষা করে দেখা গেছে ধানে ইঅউঐ২ জিন সক্রিয় থাকলে ২-এসিটাইল-১-পাইরোলিন (২অচ) উৎপাদন ব্যহত করে সুগন্ধি তৈরীতে বাধাগ্রস্ত করে। সব ধানেই সুগন্ধি বৈশিষ্ট্য রয়েছে কিন্তু ইঅউঐ২ জিন থাকার কারণে সুগন্ধি বৈশিষ্ট্য প্রকাশ হতে পারেনা।

ক্রিসপার ক্যাস-৯ পদ্ধতিতে ইঅউঐ২ জিনটি নিষ্ক্রিয় করে অধিক ফলনশীল যেকোনো ধানের যাতে সুগন্ধি বৈশিষ্ট তৈরী করা যায়। একই পদ্ধতিতে ধান গাছে সেরোটোনিন উৎপাদন ব্যাহত করে ধানের প্রধান অনিষ্টকারী পোকা বাদামি ঘাসফড়িং ও মাজরা পোকা প্রতিরোধী ধানের জাত উৎপন্ন করা যায়। এ প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে ২০২০ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন জার্মানীর ইমান্যুয়েল শাপেন্টিয়ের ও যুক্তরাস্ট্রের জেনিফার ডোউডনা। এই সর্বশেষ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২-৩ বছরের মধ্যে যে কোন ফসলের কাঙ্খিত গুণাগুণ (সুগন্ধি, রোগ ও পোকাপ্রতিরোধী) যোগ করে ট্রান্সজিনমুক্ত জাত উদ্ভাবন করা যায়।

কীটতত্ত্ববিদ ড. পান্না আলী বলেন, সভ্যতার শুরুতে বন থেকে সংগ্রহ করা বীজ কৃষকের মাঠে চাষাবাদের মাধ্যমে কৃষির সূচনা হয়। বিজ্ঞানীরা ফসলের জাত উদ্ভাবনের জন্য এতদিন নির্ভরশীল ছিলেন ইনট্রুডাকশন, ক্রসিং ও সিলেকশন, হাইব্রিডাইজেশন, মিউটেশন ইত্যাদি পদ্ধতির উপর। হাল আমলে ফসলের জাত উদ্ভাবনে জিএমও (জ্যানেটিকাল মডিফাইড ক্রপস) প্রযুক্তি আসলেও, জিএমও ফসল নিয়ে সারাবিশ্বে চলছে পক্ষ/ বিপক্ষ মতামত। কিন্তু ক্রিসপার কাস-৯ মূলত ফসলের জিন পরিবর্তন করার একটি আধুনিক বিতর্কমুক্ত একটি প্রযুক্তি।

সম্প্রতি কীটতত্ত্ববিদ ড. পান্না আলীর নেতৃত্বে ব্রি’র একদল গবেষক ২০২০সালের জুনে ক্রিসপার কাস-৯ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুগন্ধি ও পোকা প্রতিরোধী ধানের ৩০ টি গাছ পেয়েছেন। তারা আমন মৌসুমের ব্রি ধান৮৭, এবং বোরো মৌসুমের ব্রি ধান৮৯ ও ব্রি ধান৯২ জাতে ক্রিসপার কাস-৯ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সুগন্ধি জিন ঢুকিয়েছেন। একই পদ্ধতিতে ওইসব গাছে সেরোটোনিন উৎপাদন ব্যহত করতে ওই জিন ঢুকিয়ে সফল হয়েছেন। সেরোটিন উৎপাদন ব্যহত হলে ধানের প্রধান অনিষ্টকারী পোকা বাদামি ঘাসফড়িং ও মাজরা পোকা প্রতিরোধী গুন তৈরি হয়।

সম্প্রতি গাছগুলো ফলন দিয়েছে। বর্তমানে ধানের শীষগুলো পাকতেও শুরু করেছে। ব্রি’র মহাপরিচালক মো. শাহজাহান কবির সহকর্মীদের নিয়ে ক্রিপার কাস পদ্ধতি ব্যবহার করে উদ্ভাবিত ওই ধান গাছ পরিদর্শন করেছেন।

ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবির জানান, ধান চাষে চারটি বিষয়কে টার্গেট করে আমরা এ পদ্ধতি প্রয়োগ শুরু করেছি। বিষয়গুলো হলো ব্লাস্ট রোগের জীবানু ও বাদামী ঘাস ফড়িং আক্রমন সহায়ক জিন নক আউট করা, সাধারণ ধানে সুগন্ধি গুন ঢুকানো ও থার্মোসেনসিটিভিটি নিয়ন্ত্রণ করা।

তিনি আরো বলেন, বাজারে সুগন্ধি চালের দাম বেশি। গরিব অনেক মানুষ তা ক্রয় করতে পারে না। দেশে প্রচলিত সুগন্ধি জাতের ফলনও কম। কৃষকরা মাজরা ও কারেন্ট পোকার (বাদামি গাছ ফড়িং) এর কারণে প্রায় ১০-১৮ ভাগ ফলন হারান। এসব পোকা দমনের জন্য কৃষকরা প্রচুর পরিমাণ কীটনাশক ব্যবহার করেন, যা পরিবেশ ও মানব স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে আমরা এক ধাপ এগিয়ে যাব।

শেয়ার করুন

ads

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

ads

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

ads

ফেসবুকে আমাদের দেখুন

ads

মুক্তমঞ্চ

scrolltop