ঠাকুরগাঁওয়ে আলু নিয়ে বিপাকে চাষিরা
কৃষি বিভাগ
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ছয় টাকা দরে, তবুও মাঠে ক্রেতা নেই। উৎপাদিত আলু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। আগাম আলুর বাজারে ধস নামায় লোকসান হচ্ছে তাদের।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে জেলার পাঁচ উপজেলায় এবার ২৭ হাজার ৬৪৭ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে ২ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমির আলু তোলা হয়েছে। আলু উৎপাদন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৪ মেট্রিক টন। বর্তমান বাজার দরে আলু বিক্রি করে প্রতি হেক্টরে (২৪৭ শতক) চাষিরা দাম পাচ্ছেন ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। আর প্রতি হেক্টর আলুর উৎপাদন খরচ হয় প্রায় ২ লাখ টাকা। গত বছর জেলায় ২৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছিল। আর উৎপাদন হয়েছিল ৭ লাখ ৪১ হাজার ২৯৭ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ বলছে, গত বছরের কিছু আলু মজুত থাকায় বাজার দর কম। পুরাতন আলু শেষ হলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
সদর উপজেলার ফকদনপুর এলাকার আলুচাষি এন্তাজুল ইসলাম বলেন, গত বছর আলুর দাম বেশি ছিল, কম ফলনেও ভালো লাভ হয়েছে। এবার বেশি ফলনেও লোকসান হচ্ছে।
সদর উপজেলার পটুয়া এলাকার আরেক আলুচাষি রকিবুল ইসলাম বলেন, সাড়ে পাঁচ একর জমিতে আলু চাষ করেছিলাম। খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। ছয় টাকা দরে আলু বিক্রি করে দাম পাচ্ছি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা। এই টাকায় লাভ তো নয়, আসল টাকাও আসেনি।
উপজেলার বিমানবন্দর এলাকার আলুচাষি শাহজাহান আলী বলেন, প্রথম বার ৪০ একর জমিতে আলু লাগানোর কয়েক দিন পর বৃষ্টির কারণে বীজআলু মাটিতেই পচে যায়। আবারও সেই জমিতে আলু লাগাই। আলুর ফলন ভালো হয়েছে। ব্যবসায়ীরা ছয় টাকা কেজি বলছে, বিক্রি করিনি। কারণ এই দামে বিক্রি করলে অনেক টাকা লোকসান হবে।
ঠাকুরগাঁও রোড এলাকার আলু ব্যবসায়ী সোহাগ আলী বলেন, বর্তমান সময়ে বিভিন্ন জেলার আলু একসঙ্গে বাজারে আসায় চাহিদা কিছুটা কম। রাজধানীর আড়ত থেকে কোনো অর্ডার পাচ্ছি না। সে কারণে বাজারে দাম নেই।
ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ-পরিচালক আবু হোসেন বলেন, গত বছরের বাড়তি আলুর মজুত শেষ হলে বাজার অবস্থা ঠিক হবে। সেই সঙ্গে আলুর ফলন ভালো হলে চাষিদের লোকসান পুষিয়ে যাবে। চাষকৃত আলু এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থায় আছে। চাষিদের যে কোনো পরামর্শের জন্য কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে রয়েছে।