বোরো চাষে ব্যাপক সাড়া, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে চাষাবাদ
কৃষি বিভাগ
মৌসুমের শুরুতেই মৌলভীবাজারে দেশের বৃহত্তম হাওর পাড়ে বোরো চাষে ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অন্য বছরের তুলনায় এ বছর জেলায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে। এ লক্ষ্যে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে হাইব্রিড জাতের ধানবীজ সরবরাহ করেছে কৃষি বিভাগ।
জেলার হাওর পাড়ের যেদিকে চোখ যায় শুধু বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে বোরো চাষাবাদ। আবহাওয়া চাষের অনুকূলে থাকায় ও সঠিক সময়ে মনু নদী প্রকল্পভুক্ত জমিতে পানি সরবরাহের ফলে জেলার সবকটি হাওরে ব্যাপকভাবে আবাদ শুরু করেছেন কৃষকরা। শীতের কনকনে ঠাণ্ডাকে উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফসলি জমি প্রস্তুতির কাজে ব্যস্ত তারা।
এদিকে হাওরে অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে জেলার ৩৫ হাজার কৃষককে বিনামূল্যে সার-বীজসহ অন্যান্য উপাদান বিতরণ করে কৃষি বিভাগ।
এনামুল হোসাইন নামে এক কৃষক বলেন, গত বছর ১৫ থেকে ২০ গ্রামের আমরা হাজার হাজার কৃষক চাষাবাদ করতে পারি নাই। তবে এ বছর সব কৃষক চাষাবাদের উদ্যোগ নিয়েছে।
এতে ভালো ফলন নিয়ে আশাবাদী হলেও শ্রমিকের অধিক মজুরি ও কৃষি উপকরণের বাড়তি দামে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা।
ফখরুল ইসলাম নামে এক কৃষক বলেন, বর্তমানে সব কৃষি সরঞ্জামের দাম বেশি। যেমন, ডিজেলের দাম ৬৫ টাকা কিন্তু আমাদের গ্রামের বাজার থেকে কিনতে আনতে হয় ৮৫ টাকা করে। তার উপর সার এবং কীটনাশকের দাম বেশি। সরকার যদি কৃষকদের কথা চিন্তা করে এই কৃষিপণ্যের দাম কমিয়ে দেয় তাহলে কৃষকরা।
বোরো চাষে অঞ্চলের কৃষকদের সার্বিক সহায়তার কথা জানায় মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কাজী লুৎফর বারী।
তিনি বলেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ বিনামূল্যে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কৃষককে বীজ এবং সার দেওয়া হয়েছে। যার ফলে কৃষকরা চাষাবাদে অনুপ্রাণিত হয়েছে। এ ছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অত্যন্ত উদ্দীপনার সঙ্গে রোপণ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, ৫৬ হাজার ৮০০ হেক্টর তার চেয়ে বেশি ছাড়িয়ে যাবে।
কৃষি অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, চলতি বছর জেলায় ৫৬ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, যা থেকে ২ লাখ ২৯ হাজার ৪৭২ মেট্রিক টন চাল উৎপাদনের আশা।