প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনীতে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প
পোলট্রি
২০৩১ সাল নাগাদ এসডিজি অর্জনে সরকারকে সহযোগিতা করছে দেশীয় পোল্ট্রি শিল্প। ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে রূপান্তরের ক্ষেত্রেও সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখবে পোল্ট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাত- একথা বলেন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাষ্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি) এর সভাপতি মসিউর রহমান।
বুধবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ঢাকায় অনুষ্ঠিত ‘প্রাণিসম্পদ প্রদর্শনী-২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য প্রদান কালে তিনি এ কথা বলেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জনাব ডা: মনজুর মোহাম্মদ শাহজাদা।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী জনাব শ ম রেজাউল করিম এমপি।
বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি জনাব ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু এমপি এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব ড. মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী।
জনাব মসিউর বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশের জনসংখ্যা হবে প্রায় ১৮ কোটি ৮৪ লাখ। এত বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদনে জমির প্রয়োজন অথচ নগরায়নসহ নানাবিধ কারণে জমির পরিমান প্রতিদিনই কমছে। প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হলে তাই ভার্টিক্যাল প্রোডাকশন বাড়াতে হবে- যা পোল্ট্রিতেই সম্ভব। খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে হলে ছোট খামারগুলোর আকার দুই থেকে তিনগুণ বৃদ্ধি করতে হবে; প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে এবং গ্রামের সাধারন খামারিদের কাছে প্রযুক্তি পৌঁছে দিতে হবে।
২০১৯ সাল থেকে পোল্ট্রি ও ফিস ফিডের রপ্তানি শুরু হয়েছে; মাংসজাত ভ্যালু অ্যাডেড প্রোডক্ট রপ্তানি হচ্ছে; একদিন বয়সী মুরগির বাচ্চার রপ্তানিও শুরু হবে অচিরেই; তাছাড়া ২০২৫ সাল নাগাদ পোল্ট্রি মাংস রপ্তানির জন্যও প্রস্তুতি চলছে। পোল্ট্রি প্রসেসিং, ফারদার প্রসেসিং এবং পোল্ট্রি রিসাইক্লিং শিল্প- সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে বলে মন্তব্য করেন বিপিআইসিসি সভাপতি।
গ্রামীণ জনপদে পোল্ট্রি শিল্প যে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে তা দ্বিতীয় কোন শিল্পই করতে পারেনি এমন দাবি করেন মসিউর। তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নারীর সত্যিকার ক্ষমতায়নের জন্য নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে নারীদের স্থান করে দিয়েছেন। “পোল্ট্রি শিল্পে আমরাও একই নীতিতে কাজ করছি। পোল্ট্রি সেক্টরে কর্মরত মানুষের প্রায় ৪০ শতাংশই নারী। আমরা গ্রামের নারীদের সাথে কথা বলেছি। অনেকেই এখন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। ব্যবসা সফল হয়ে অনেকেই এলাকার মেম্বার, চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি হয়েছেন; নিজের আয়ে ছেলেমেয়েদের শিক্ষিত করে তুলছেন”।
জনাব মসিউর বলেন, গবেষণা খাতে ব্যয় বাড়াতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারগুলোকে আধুনিকায়ন করতে হবে। বিএলআরআই কে আরও বেশি করে কাজে লাগাতে হবে। গবেষকদের কাজের মূল্যায়ন করতে হবে; তবেই দেশ এগুবে। পোল্ট্রি বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের গবেষণায় সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ‘ওয়াপসা-বিবি রিসার্চ গ্রান্ট’ প্রদান করা হবে। প্রতি বছর ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন গবেষককে রিসার্চ গ্রান্ট প্রদানের ঘোষণা দেন মসিউর। চলতি বছরের জুন মাসে একটি আন্তর্জাতিক সেমিনার এবং ২০২৩ সালের মার্চে আন্তর্জাতিক পোল্ট্রি শো ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে “পোল্ট্রি ফেস্ট” আয়োজনের আগ্রহ প্রকাশ করে মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের সহযোগিতা চান বিপিআইসিসি সভাপতি। কাঁচামালের উর্ধ্বগতির কারণে নাজুক অবস্থায় রয়েছে পোল্ট্রি শিল্প এমন দাবি করে আসন্ন জাতীয় বাজেটে কর ও শুল্ক সুবিধার আবেদন জানান তিনি।