রাজশাহীতে কৃত্রিম পদ্ধতিতে বাড়ছে পেঁয়াজবীজ উৎপাদন
এগ্রিবিজনেস
হাত দিয়ে একটা একটা করে ফুলের পরাগায়ন করতে শ্রমিক খরচ ও সময় বেশি লাগে, এ জন্য কাপড় দিয়ে নতুন পদ্ধতি পরাগায়ন করা হচ্ছে। এতে বেড়েছে পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনও। এ পদ্ধতি প্রয়োগ করে পেঁয়াজের বীজ উৎপাদন আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার টুলটুলিপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম সাড়ে চার কাঠা জমিতে পেঁয়াজের বীজ চাষ করেছিলেন। অল্প জমি থেকে তিনি ২০ কেজি পেঁয়াজবীজ আহরণ করেছেন।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ১৭৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা থাকে ৯০ থেকে ৯৫ মেট্রিক টন। বাকি বীজ বাইরে চলে যাবে। ২০২০-২১ মৌসুমে রাজশাহীতে ৩৫ কোটি ৪০ লাখ টাকার বীজ উৎপাদিত হয়েছে। দুই হাজার টাকা কেজি হিসাবে কৃষকেরা এ দাম পান। এর আগের বছর (২০১৯-২০) ছয় থেকে সাত হাজার টাকা কেজি হিসাবে রাজশাহীতে উৎপাদিত পেঁয়াজের বীজ বিক্রি হয়েছে।
সূত্র আরও জানায়, ১৫ থেকে ৩০ নভেম্বর চাষাবাদ শুরু হয়। আর মার্চের ২৫ থেকে এপ্রিলের ১৫ তারিখের মধ্যে বীজ আহরণ করা হয়ে থাকে। পাঁচ মাসের এ ফসল জেলার মধ্যে গোদাগাড়ী উপজেলায় সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে।
কৃষকেরা বলছেন,ফসলের পোকা দমনে নির্বিচার কীটনাশক ব্যবহার করায় উপকারী পোকা ও মৌমাছি মারা যাচ্ছে। সে জন্য প্রকৃতিনির্ভর পরাগায়ন ছেড়ে পেঁয়াজচাষিরা এখন কৃত্রিম পরাগায়ন করছেন। তাতেই পাওয়া যাচ্ছে এ সুফল।
কৃষকেরা বলেন, হাত দিয়ে পুরুষ ফুলের পরাগরেণু স্ত্রী ফুলের গর্ভমুণ্ডে স্থাপন করাকে হস্ত পরাগায়ন বলে। কিন্তু এভাবে পরাগায়ন করলে সময় বেশি লাগে। তাই তাঁরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে মার্কিন কাপড় দিয়ে পরাগায়ন করছেন। কাপড়টি খেতের সব ফুলের ওপর দিয়ে আলতোভাবে টেনে নিতে হয়। তাতেই পরাগায়ন হয়ে যায়।
পেঁয়াজবীজ চাষি রেজাউল করিম জানান, তিনি কৃত্রিম উপায়ে পরাগায়ন ঘটিয়ে ভালো লাভ পেয়েছেন। এ পদ্ধতিতে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ বেশি পড়ে। কিন্তু ফলনে তা পুষিয়ে যায়।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক উম্মে সালমা জানান, রাজশাহীর চাষিরা উৎকৃষ্ট মানের পেঁয়াজবীজ উৎপাদন করেন। জেলার চাহিদা পূরণ করে এই বীজ এখন জেলার বাইরেও বিক্রি হয়।