দুটি গরু দিয়ে শুরু করে ২ কোটি টাকার মালিক হাকিম, হৃষ্টপুষ্টকরণে দেখভাল জেলা প্রাণিসম্পদ‘র
প্রাণিসম্পদ
২০০৫ সালে মাত্র দুটি গরু দিয়ে খামার শুরু করেন যশোরের মণিরামপুর উপজেলার রামপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক মো. আব্দুল হাকিম। বছর পাঁচেকের মধ্যে আধুনিক শেড তৈরি করে বাণিজ্যিকভাবে খামার করেন তিনি। এখন খামারে ১০১টি গরু আছে। যেগুলোর দাম প্রায় দুই কোটি টাকা। এর মধ্যে অর্ধেক ষাঁড়। যা তিনি কোরবানির ঈদের জন্য প্রস্তুত করছেন বলে জানান।
মো. আব্দুল হাকিম জানান, আমার খামারে কোরবানির জন্য বেশকিছু গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। দেড় লাখ থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ টাকা মূল্যের ষাঁড় রয়েছে। খামারে ৩০টি ষাঁড় রয়েছে। এগুলোর একেকটির দাম তিন লাখ টাকার ওপরে। বাকিগুলোর দাম দেড় লাখ টাকার মধ্যে। সবমিলিয়ে খামারে প্রায় দুই কোটি টাকার গরু রয়েছে বলে জানান হাকিম।
একই উপজেলার মোবারকপুর গ্রামে গরুর খামার রয়েছে যশোরের ব্যবসায়ী মো. মতিয়ার রহমানের। বড় একটি শেডে মোটাতাজা করা হচ্ছে ৫৫টি ফ্রিজিয়ান, সিন্ধি ও ন্যাপাসহ দেশি জাতের গরু। খামারটি দেখভাল করেন তারই আত্মীয় মেহেদি আল ইমরান খান পান্না।
তিনি জানান, দেড় কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করা হয়েছে এবার খামারে। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধিতে এবার খামারিরা একটু কমই বিনিয়োগ করেছেন। গতবার করোনার কারণে গরু বেচাকেনা কম হয়েছিল। তবে এবার মনে হয় দামটা ভালো পাওয়া যাবে।
খান পান্না বলেন, আমাদের খামারে সর্বোচ্চ ছয়-সাত লাখ টাকা দামের ষাঁড় রয়েছে। এছাড়া চার-পাঁচ লাখ টাকা দামের পাঁচ-ছয়টি ষাঁড় রয়েছে। অন্যগুলো দুই-তিন লাখ টাকা দামের।
এদিকে, কোরবানির ঈদ উপলক্ষে গবাদি পশু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত জেলার খামারিরা। এবার জেলায় প্রায় ৯০ হাজার গরু ও ছাগল প্রস্তুত করা হচ্ছে; যা চাহিদার তুলনায় পাঁচ হাজার বেশি। ক্ষতিকর হরমোন কিংবা ইনজেকশনের ব্যবহার ছাড়াই দেশি পদ্ধতিতে গবাদি পশু পালন করছেন খামারিরা। তাই পশুর ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা। যেহেতু কয়েক বছর ধরে ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ রয়েছে; সে কারণে গরুর দামও বেশি।
জেলা প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্র জানায়, কোরবানি উপলক্ষে যশোরে প্রায় ১০ হাজার খামারে ৯০ হাজার ৬৩১টি গরু ও ছাগল মোটাতাজা করা হচ্ছে। এর মধ্যে গরু ২৭ হাজার ৯৫৫টি ও ছাগল ৬২ হাজার ৬৭৬।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদুল হক জাানান, যশোরে এবার কোরবানির পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। জেলার চাহিদা পূরণ করে চার-পাঁচ হাজার পশু অন্যত্র জোগান দেওয়া যাবে।
তিনি আরও জানান, প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে এ অঞ্চলের খামারিরা গরু মোটাতাজা করছেন। মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তারা খামারিদের সেসব মোটাতাজাকরণ প্রক্রিয়া নিয়মিত মনিটরিং করছেন। এর আগে আমরা সঠিক পদ্ধতিতে মোটাতাজাকরণে খামারিদের প্রশিক্ষণ দিয়েছি।