কালার বার্ড মুরগি পালনের দিকে ঝুঁকছেন পাবনার খামারিরা
পোলট্রি
কালার বার্ড মুরগি পালন ও ডিম থেকে বাচ্চা উৎপাদন করে বেশ লাভবান হয়েছেন পাবনার ঈশ্বরদীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক প্রাপ্ত খামারি আকমল হোসেন। তিনি অন্য খামারিদেরও নতুন এ জাতের মুরগি পালনে উদ্বুদ্ধ করছেন।
তার পরামর্শে ঈশ্বরদী ও পাবনা জেলার অনেক খামারি কালার বার্ড পালন শুরু করছেন। উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম ও লাভের পরিমাণ অনেক বেশি হওয়ায় খামারিরাও ঝুঁকছেন।
খামারিরা জানান, কালার বার্ড দেখতে হুবহু দেশি মুরগির মতো। বাহারি রঙের পালকের জন্য এ মুরগি দেখতে খুব সুন্দর। এ মুরগির মাংসও বেশ সুস্বাদু। যারা ব্রয়লারের মাংস খেতে অনাগ্রহী তাদের অনেকেই এখন কালার বার্ড মাংস পছন্দ করছেন। এ মুরগির মাংস দেশি মুরগির মাংসের মতো অতটা শক্ত নয়। আবার ব্রয়লারের মতো নরম নয়। সোনালি মুরগি ৭০ দিনে এক কেজি ওজন হয়। সেখানে কালার বার্ড মাত্র মাত্র ৪০ দিনেই এক কেজি হয়। এছাড়াও বাজারে মুরগির চাহিদা অন্য যে কোনো জাতের মুরগির চেয়ে বেশি।
তারা আরও জানান, বাণিজ্যিকভাবে কালার বার্ড পালন করতে অন্যান্য মুরগির তুলনায় পুঁজি কম লাগে। এ মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি ও মৃত্যুহার অনেক কম। কালার বার্ডের বাজারের চাহিদা বেশ ভালো। খামার থেকে মুরগি ব্যবসায়ীদের কাছে কেজিপ্রতি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
উপজেলার বড়ইচরা গ্রামের বিশ্বাস পোলট্রির স্বত্বাধিকারী আবু রায়হান বিশ্বাস জানান, অন্য মুরগির তুলনায় এখন কালার বার্ড পালনে মোটামুটি লাভ ভালো হয়। এ মুরগির বাজার দর ভালো। রোগ কম হওয়ায় লোকসানের আশঙ্কাও কম। শুধু বাচ্চার দাম অন্য মুরগির তুলনায় বেশি। খামারিরা ব্রয়লার আর সোনালি পালন করে যখন লোকসান দিচ্ছে তখন কালার বার্ড কিছুটা হলেও লাভের সম্ভাবনা জাগিয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক খামারি পুঁজি হারিয়ে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। এ উপজেলায় প্রায় ১৫০ থেকে ২০০টি খামার বন্ধ হয়ে গেছে। খামারা ঋণগ্রস্ত হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। কালার বার্ড পালনের মাধ্যমে আবারও খামারিরা লাভবান হতে পারে। সেজন্য এ জাতের মুরগি পালনে অন্য খামারিদের উদ্বুদ্ধ করার প্রতি খুব গুরুত্ব দিয়েছি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন জানান, কালার বার্ড মুরগি এ অঞ্চলের আগে খামারিরা পালন করতেন না। এখন কিছু খামারি পালন শুরু করেছে। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে খামারিদের সবধরনের পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়।